সংক্ষিপ্ত
জম্মু ও কাশ্মীরেও বাড়ছে নভেল করোনাভাইরাসের দাপট
মহিলা পপলার গাছ থেকে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে
তাই এক সপ্তাহের মধ্যে এই গাছ সব কেটে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে
এলাকার বাস্তুতন্ত্র নিয়ে উদ্বেগে পরিবেশবিদরা
সার্স-কোভ-২ ভাইরাস অর্থাৎ যাকে সকলে চেনে নভেল করোনাভাইরাস নামে, সেই ভারইরাস বহন করছে পরাগ রেণু। আর এই আতঙ্কেই জম্মু ও কাশ্মীরের প্রশাসনের নির্দেশে শ'য়ে শ'য়ে রুশ পপলার গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। এই বিশালাকার পপলার গাছগুলি উপত্যকার অন্যতম পরিচিতিই শুধু নয়, এখানকার প্রাকৃতিক ভারসাম্যও অনেকটাই নির্ভর করে রয়েছে এই গাছগুলির উপর। তাই পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসনের এই তুঘলকি নির্দেশে স্থানীয় বাস্তুতন্ত্র মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হতে চলেছে। আঘাত আসতে পারে এই নবগঠিত কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির অর্থনীতির উপরও।
জম্মু ও কাশ্মীরে এই মুহূর্তে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ১৮৪। মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। জম্মু কাশ্মীর প্রশাসনের সন্দেহ, রুশ পপলার গাছের পরাগরেণু থেকেই করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে উপত্যকায়। কিন্তু পরাগ মাধ্যমে সত্যি সত্যি ভাইরাস সংক্রমণ হয় কিনা, তাই নিয়ে এখনও নিশ্চিত নয় প্রশাসন। বিভ্রান্তি রয়েছে, গাছগুলি কেটে ফেলা ঠিক হচ্ছে, না শুধু ফুল ধারক ডালগুলি ছেঁটে ফেললেই হত, তাই নিয়েও। এই সব বিভ্রান্তি না কাটিয়েই প্রশাসন এই নির্দেশ দিয়েছে। একটা বিষয় নিশ্চিত, এই বিপুল পরিমাণে গাছ কাটা পড়লে, তার মারাত্মক প্রভাব পড়বে উপত্যকায়।
মজার বিষয় হল, জম্মু ও কাশ্মীর সরকার পরাগরেণু ওড়াওড়ি আটকাতে নিশানা করছে বিশেষত মহিলা পপলার গাছগুলিকে। কিন্তু, পরাগ উৎপন্ন হয় পুরুষ ফুল থেকে, মহিলা গাছে এর অস্তিত্বই নেই। একে তুলনা করা যেতে পারে প্রাণীদেহের শুক্রাণুর সঙ্গে। পুরুষ ফুলের এই পরাগরেণু উড়ে গিয়ে মহিলা গাছের ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থাপিত হয়। তারপর নিষেক ঘটে ফল ও বীজ উৎপন্ন হয়। তবে হায়দ্রাবাদের সেন্ট্রাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব ড্রাইল্যান্ড এগ্রিকালচার-এর অধ্যক্ষ অরুণ কে শঙ্কর জানিয়েছেন, একেকটি গাছে প্রচুর পরিমাণে বীজ তৈরি হয়। এই বীজগুলির গায়ে তুলোর মতো আঁশ থাকে। সেই আঁশ অ্যালার্জি এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণ হতে পারে।
জম্মু কাশ্মীর প্রশাসন জানিয়েছে, এই তুলোর মতো আঁশ নিয়েই তারা ভয় পাচ্ছে। কারণ, এই তুলোর মতো আশ বীজের গায়ে লেগে থাকার সময়ই যে তার মধ্য়ে পরাগরেণু আটকে থাকে তা নয়, সেই বীজ থেকে আলগা হয়ে যাওয়ার পরও এই আঁশ পরাগরেণু নিয়ে বাতাসে উড়তে থাকে। তাই একে সম্ভাব্য ভাইরাস-বাহক হিসাবে মনে করা হচ্ছে। তাই, এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত মহিলা রাশিয়ান পপলার গাছকে কেটে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভারতে প্রথম পতন করোনা-যোদ্ধার, চলে গেলেন বিনা পয়সায় রোগী দেখা চিকিৎসক
লকডাউনে পুলিশ হল ডাক্তার, এমার্জেন্সি রেসপন্স ভ্যানেই জন্ম নিল ফুটফুটে একরত্তি
২ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষের সমাবেশ, ভারতের পর পাকিস্তান-কে ডোবালো তাবলিগি জামাত
কোভিড-১৯ সংক্রমণটি পরাগ বা বায়ুবাহিত অন্যান্য উদ্ভিজ্য পদার্থের মাধ্যমে বাহিত হয়, এমন কোনও তত্ত্বটি এখনও প্রমাণিত হয়নি। তবে গাছের সংখ্যা কমে গেলে, ওই আঁশজনিত কারণে অ্যালার্জির প্রকোপও কমবে, তাতে হাসপাতালের বোঝা অনেকটা কমবে, আবার মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে। কিন্তু, এই করতে গিয়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে বলেই দাবি করছেন পরিবেশবিদরা।