সংক্ষিপ্ত

করোনভাইরাস প্রতিরোধ করতে একটি ম্যালেরিয়া ওষুধেরকার্যকরী বলে শোনা যাচ্ছে

এক মার্কিন দম্পতি গত রবিবার নিজেরাই সেই ওষুধ খেয়ে নেন

তারপর স্বামীর মৃত্যু হয়েছে, স্ত্রী হাসপাতালে

তাদের কারোরই করোনাভাইরাসের পরীক্ষাও করা হয়নি

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধী একটি ওষুধের নাম বাজারে খুব চলছে। দাবি করা হচ্ছে ওই ওষুধে করোভাইরাস সংক্রমণকে ঠেকিয়ে দেওয়া যাচ্ছে। এসব শুনে নিজেরাই সেই ম্যালেরিয়া প্রতিরোধী ওষুধ খেতে শুরু করেছিলেন আমেরিকার অ্যারিজোনা-র এক দম্পতি। পরিণতিতে, ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। আর তাঁর স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি, মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।  করা হয়েছিল, যখন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে তারা নতুন

ক্লোরোকুইন ফসফেট বা ক্লোরোকুইন। বস্তুত, বিশ্বের অনেক গবেষণাগারেই করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এই ওষুধটি নিয়ে গবেষণা চলছে। কোভিড-১৯'এর চিকিৎসায় এই ক্লোরোকুইন সম্ভাব্য 'গেম চেঞ্জার' হয়ে উঠতে পারে বলে দিন কয়েক আগে হোয়াইট হাউজ থেকে জানিয়েছিলেন স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ক্লোরোকুইন ফসফেট যৌগ: মাছের ট্যাঙ্কে অ্যালগি দূর করতে ব্যবহার করা হয়

অ্যারিজোনার ফিনিক্স শহরের হাসপাতাল ব্যবস্থা 'ব্যানার হেলথ' ওই দম্পতির স্বাস্থ্য পরিষেবা দেখভাল করত। ওই সংস্থার আধিকারিকরা জানিয়েছেন স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই বয়স ৬০-এর ঘরে। তারা করোনভাইরাস পরীক্ষা করাননি। তবে শুধু মাত্র হতে পারে এই ভয়ের বশে ডাক্তারকে না জানিয়ে নিজেরাই ইন্টারনেট ঘেঁটে ক্লোরোকুইন ফসফেট-এর সন্ধান পেয়েছিলেন। তারপর সেই ওষুধ সংগ্রহ করে খেতে শুরু  করেছিলেন।

এরপরই গত রবিবার দুজনেই ঝিমুনিভাব এবং বমি বমি ভাব বোধ করেন। তারপরই হৃদরোগে আক্রান্ত হন ওই ব্যক্তি। স্ত্রী-ও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ব্য়ানার হেলথ-এর কর্মীরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সোমবার অবশ্য চিকিৎসায় তাঁর অবস্থার অনেকটাই উন্নতি ঘটেছে। আপাতত তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলেই জানা গিয়েছে। ডাক্তাররা বলছেন তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন।

'ব্যানার পয়জন অ্যান্ড ড্রাগ ইনফরমেশন সেন্টার'-এর মেডিকেল ডিরেক্টর ডাক্তার ড্যানিয়েল ব্রুকস সোমবার জানিয়েছেন নিজে নিজে ওষুধ খেতে গেলে পরিণতি কী হতে পারে, এই দম্পতির অবস্থা দেখে তা সকলের বোঝা উচিত। এঁদের দেখে সতর্ক হওয়া উচিত। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া যে কোনও রকম ওষুধ খাওয়া বিপজ্জনক এবং বোকামি।

ক্লোরোকুইন সম্পর্কে তিনি জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত ৮৫ শতাংশ মানুষই কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা ছাড়াই সুস্থ হয়ে উঠবেন। অ্যান্টিভাইরাল ওষুধগুলি সেই রোগীদের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা উচিত যাঁদের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে এবং গুরুতর অসুস্থ। তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিতেই হবে, কারণ এগুলির গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে।

গত শুক্রবার, সাংবাদিক সম্মেলনে ট্রাম্প বলেছিলেন ম্যালেরিয়ার দুটি ওষুধ, ক্লোরোকুইন এবং হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন কোভিড-১৯'এর চিকিৎসায় কার্যকর হতে পারে। ওষুধগুলির ক্লিনিকাল পরীক্ষা চলছে। ওই একই সংবাদ সম্মেলনে, মার্কিন অ্যালার্জি ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার অ্যান্টনি এস ফাউকি বলেছিলেন, ওষুধটি কার্যকর হতে পারে বলে শোনা গিয়েছে শুধু। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস চিকিৎসার জন্য এখনও কোনও ওষুধ অনুমোদিত হয়নি।