সংক্ষিপ্ত

রুদ্ধশ্বাস দ্বিতীয় টি২০ ম্য়াচে আয়ারল্যান্ডকে ৪ রানে হারিয়ে সিরিজ জিতল ভারতীয় ক্রিকেট দল। প্রথমে ব্য়াট করে  ২২৭ রানের পাহাড় প্রমাণ স্কোর করে ভারত (India vs Ireland)। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১০৪ রান করলেন দীপক হুডা (Deepak Hooda)। জবাবে ২২১ রানে আইরিশরা। 
 

প্রথম ম্য়াচে হারের পর দ্বিতীয় টি২০ ম্যাচে নিজেদের সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করেও শেষ রক্ষা হল না। হাইস্কোরিং রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ভারতের কাছে ৪ রানে হারতে হল আইরিশদের। শেষ ওভারে দুরন্ত বোলিং করে দলকে জয় এনে দিয়ে নায়ক হলেন তরুণ ভারতীয় স্পিড স্টার উমরান মালিক। ম্য়াচে টস জিতে ব্যাটিং করার  সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। প্রথমে ব্য়াট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২২৭ রান করে ভারতীয় দল। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১০৪ রানের ইনিংস খেলেন দীপক হুডা। এছাড়া ৭৭ রান করেন সঞ্জু স্যামসন। ১৫ করে রান করেন সূর্যকুমার যাদব ও হার্দিক পান্ডিয়া। আয়ারল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন মার্ক আদায়ের। এছাড়া দুটি উইকেট নেন জসুয়া লিটল ও গ্রেইগ ইয়ং। রান তাড়া করতে নেমে ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২২১ রানে থামে আয়ারল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬০ রান করেন অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বলবির্নি। এছাড়া পল স্টার্লিং ৪০, হ্যারি টেক্টর ৩৯, জর্জ ডকরেল ৩৪ ও মার্ক আদায়ের ২৩ রান করেন। কিন্তু তীরে এসে তরী ডোবে আয়ারল্যান্ডের।

এদিন ইনিংসের শুরুটা ভালো হয়নি ভারতের। ১৩ রানেই প্রথম উইকেট পড়ে। ৩ রান  করে মার্ক আদায়েরের বলে আউট হন ইশান কিশান। এরপর ক্রিজে আসেন সঞ্জু স্যামসন। দীপক হুডার সঙ্গে মিলে বিদ্ধংসী মেজাজে ব্যাটিং করেন। একের পর এক মারকাটারি শট খেলেন দুই তারকা। আয়ারল্যান্ডের বোলিংকে তুলোধনা করেন দীপক হুডা ও সঞ্জু স্যামসন। পাওয়াপ প্লে শেষের আগেই দলের স্কোর পঞ্চাশ পার করে দেন তারা। পূরণ করেন নিজেদের অর্ধশতরানের পার্টনারশিপও। এরপর আরও রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন দীপক হুডা ও সঞ্জু স্যামসন। ঝড়ের গতিতে নিজের অর্ধশতরান করেন দীপক হুডা। সময় যত এগিয়েছে রানের গতিবেগ আরও বাড়িছেন দুই ভারতীয় তরুণ তারকা। নিজেদের শতরানের পার্টনারশিপও পূরণ করে ফেলেন তারা। অর্ধশতরানও পূরণ করেন সঞ্জু স্যামসন।   ১৫০ রানের পার্টনারশিপ পূরণ করেন হুডা-সঞ্জু জুটি। অবশেষে ১৭ তম ওভরে ১৮৯ রানে দ্বিতীয় উইকেট পড়ে ভারতীয় দলের। ৭৭ রান করে মার্ক আদায়ারের দ্বিতীয় শিকার হন সঞ্জু স্যামসন। অপরদিকে ৫৫ বলে নিজের শতরান পূরণ করেন দীপক হুডা।  ৫ বলে ১৫ রানের ছোট ইনিংস খেলে জসুয়া লিটলের বলে আউট হন সূর্যকুমার যাদব। ২০৬ রানে পড়ে তৃতীয় উইকেট। ২১২ রানে পড়ে চতুর্থ উইকেট। ১০৪ রান করে জসুয়া লিটলের বলে আউট হন হুডা। শেষের দিকে নেমে রান পাননি দীনেশ কার্তিক। ২১৭ রানে খাতা না খুলেই ক্রেইগ ইয়ংয়ের বলে আউট হন কার্তিক। এরপর এসেই শূন্য রানে ক্রেইগ ইয়ংয়ের বলে আউট হন অক্ষর প্যাটেল। শেষ ওভারে পড়ে সপ্তম উইকেট। শূন্য রানে মার্ক আদায়ারের বলে আউট হন হার্শল প্যাটেল। ১৫ রান করে অপরাজিত থাকেন হার্দিক পান্ডিয়া।  শেষ পর্যন্ত ২২৭ রানে শেষ হয় ভারতের ইনিংস। 

২২৬ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা দুরন্ত করে আয়ারল্যান্ডের দুই ওপেনার পল স্টার্লিং ও অধিনাক অ্যান্ড্রু বলবির্নি। শুরু থেকে কার্যত রণংদেহী মেজাজে ব্যাটি শুরু করেন তারা। চার ও ছয়ের বন্যা বইয়ে দেন দুই আইরিশ ব্যাটসম্যান। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই নিজেদের অর্ধশতরানের পার্টনারশিপ পূরণ করে দলের স্কোর ৭০-পার করে দেন। ষষ্ঠ ওভারে ৭২ রানে আয়ারল্যান্ডের প্রথম উইকেট পড়ে। ৪০ রান করে রবি বিষ্ণোইয়ের বলে আউট হন পল স্টার্লিং। এরপর গ্যারেথ ডিলানি এসেই দুর্ভাগ্যবশত খাতা না খুলেই রান আউট হয়ে যান। ৭৩ রানে পড়ে দ্বিতীয় উইকেট। এরপর হ্যারি টেক্টর ও বলবির্নি মিলে ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যান। নিজের অর্ধশতরানও পূরণ করেন আইরিশ অধিনায়ক। ৪৪ রানের পার্টনারশিপ করার পর ১১৭ রানে পড়ে তৃতীয় উইকেট। ৬০ রান করে হার্শল প্যাটেলের বলে আউট হন বলবির্নি। অপরদিকে নিজের ইনিংস চালিয়ে যান হ্যারি টেক্টর। দলের ১৪২ রানের মাথায় ৫ করে উমরান মালিকের বলে আউট হন লর্কান টাকার। এরপর হ্যারি টেক্টর ও জর্জ ডকরেল মিলে ঝড়ো ব্যাটিং করেন। ৪৭ রান জুটিতে যোগ করেন তারা। ১৮৯ রানে ব্যক্তিগত ৩৯ রান করে ভুবনেশ্বর কুমারের বলে আউট হন হ্যারি টেক্টর। শেষের দিকে মার্ক আদায়ের ও জর্জ ডকরেল মিলে দলকে জয়ের দোরগোরায় নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। শেষ ওভারে অনবদ্য বোলিং করে ভারতকে ৪ রানে জয় এনে দেন উমরান মালিক। ২২১ রানে শেষ হয় আয়ারল্যান্ডের ইনিংস। ৩৪ রানে জর্জ ডকরেল ও ২৩ রানে মার্ক আদায়ের অপরাজিত থাকেন। তবে ২২৬ রান তাড়া করতে নেমে আয়ারল্যান্ডের লড়াই সকলের কুর্নিশ আদায় করে নেয়। এই জয়ের ফলে ২ ম্য়াচের সিরিড ২-০ ব্যবধানে জিতল ভারত।