সংক্ষিপ্ত
আইপিএল ২০২২-এর মেগা ফাইনালে (IPL 2022 Final) মুখোমুখি হতে চলেছে গুজরাট টাইটানস বনাম রাজস্থান রয়্যালস ( GT vs RR)। ফাইনালে জিততে মরিয়া সঞ্জু স্যামসন ও হার্দিক পান্ডিয়ার দল। ম্যাচের আগে দেখে নিন দুই দলের শক্তি ও দুর্বলতা।
আর কিছু সময়ের অপেক্ষা। তারপরই আইপিএল ২০২২-এর মেগা ফাইনালে মুখোমুখি হবে গুজরাট টাইটানস ও রাজস্থান রয়্যাস। মেগা মহারণে নামার আগে অনুশীলনে দুই দলই একে অপরের শক্তি ও দুর্বলতা নিয়ে কাজ করেছে। পরিকল্পনা মাফিক খেলে নিজের শক্তি উপর ভরসা ও প্রতিপক্ষের দুর্বলতার উপর আঘাত হেনে জয়ের রণনীতি সাজাচ্ছে দুই দল। আইপএল ২০২২ মেগা ফাইনালের আগে দেখে নিন গুজরাট টাইটানস ও রাজস্থান রয়্যালস দলের শক্তি দুর্বলতা।
গুজরাট টাইটানসের শক্তিঃ
ব্য়াটিংয়ে টপ অর্ডারের রানের মধ্যে থাকা-
গুজরাট টাইটানস দলের অন্যতম শক্তি হল ব্য়াটিং লাইনে টপ অর্ডারে বশির ভাগ ব্য়াটসম্যান রানের মধ্যে থাকা। ওপেনিংয়ে দলকে ভরসা দিচ্ছেন ঋদ্ধিমান সাহা ও শুবমান গিল। মিডস অর্ডারে ভালো ব্য়াটিং করছেন স্বয়ং অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। দুরন্ত ফর্মে রয়েছে ডেভিড মিলারও। দলের টপ অর্ডার ফর্মে থাকা যে কোনও দলের পক্ষেই স্বস্তির। ফাইনালেও আরও একবার সেরাটা দিতে মরিয়া সকলেই।
ফিনিশার ডেভিড মিলার ও রাহুল তেওয়াটিয়া-
গুজরাট টাইটানস দলের অন্যতম বড় শক্তি হল দলে দুই ফিনিশারের রানের মধ্যে থাকা। ডেভিড মিলার মিডল অর্ডারে দলকে ভরসা দেওয়ার পাশাপাশি শেষর দিকে ফিনিশারের ভূমিকাও পালন করছেন। একাধিক রুদ্ধশ্বাস ম্য়াচ ফিনিশ করে দলকে জয় এনে দিয়েছেন প্রোটিয়া তারকা। অপরদিকে খুব বেশি রাম মরসুম জুড়ে না করলেও একাধিক ম্যাচে ফিনিশ করেছে রাহুল তেওয়াটিয়া।
পেস ও স্পিন বোলিংয়ের ভারসাম্য-
গুজরাট টাইটানসের পেস অ্যাটাকে প্রধান অস্ত্র মহম্মদ শামি। স্পিন অ্যাটাকে সেরা হাতিয়ার রাশিদ খান। ফলে বোলিংয়ের দুই বিভাগেই যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। আন্তর্জাতি ক্রিকেটে দুজনেই তারকা। আইপিএল ২০২২-এ শামি ১৯টি, রশিদ ১৮টি উইকেট নিয়েছেন।
গুজরাট টাইটানসের দুর্বলতাঃ
শুবমান গিলের ধারাবাহিকতার অভাব ও ম্য়াথু ওয়েডের ব্যাটে রানের খরা-
গুজরাট টাইটানসের ব্যাটিংয়ে রানের মধ্যে প্রথম সারির ব্য়াটসম্য়ানরা থালেও ২-১ জনের ধারাবাহিকতার অভাব রয়েছে। বিশেষ করে অনেক আশা করে ড্রাফটে কেকেআর থেকে গিলকে দলে নিয়েছিল গজরাট। কিন্তু ধারাবাহিকতার অভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে। কোনও ম্য়াচে রান পাচ্ছেন , কোনও ম্যাচে নেই রান। এছাড়া ম্যাথি ওয়েডেরও ব্যাট হাতে অফ ফর্ম। এই সমস্যা পফাইনালে না শোধরালে ভুগতে হতে পারে গুজরাটকে।
শামি-রাশিদ বাদে অন্যান্যদে রান খরচ-
মহম্মদ শামি ও রাশিদ খান ছাড়া অন্য়ান্য বোলাররা একাধিক ম্য়াচে অনেক রান খরচ করেছে। যে বিষয়টি বন্ধ করতে হবে গুজরাট দলকে। ফাইনালে আলজারি জোসেউ না লকি ফার্গুসন কে খেলবে তা নিয়েও সমস্যা রয়েছে।
স্লগ ওভারে সমস্যা-
স্লগ ওভার বোলিং গুজরাটের সব থেকে বড় মাথাব্যাথার কারণ। রাশিদ খানের বোলিং কোটা শেষ হওয়ার পরেই ডেথ ওভারে যথেচ্ছ রান খরচ করতে দেখা যাচ্ছে শামি-যশ দয়ালদের। নতুন বলে শামিকে যতটা ভয়ঙ্কর মনে হচ্ছে শেষের দিকে ধার অনেকটাই কমছে। এই বিষয়টি ফাইনালে নজর দিতে হবে দলকে।
রাজস্থান রয়্যালসের শক্তিঃ
জস বাটলারের বিধ্বংসী ফর্ম-
রাজস্থান রয়্যালস দলের ব্য়াটিং লাইনআপে সবথেকে বড় ভরসার নাম জস বাটলার। আইপিএব ২০২২-এ স্বপ্নেপ ফর্মে রয়েছেন ব্রিটিশ তারকা। এখনও পর্যন্ত আইপিএলে ৪টি শতরান, ৪টি অর্ধশতরান সহ ৮২৪ রান করে ফেলেছেন। সর্বোচ্চ স্কোর ১১৬। ফাইনালে আরও একবার ব্য়াট হাতে বড় রান করাই লক্ষ্য জস 'দি বস' বাটলারের।
চাহলের বল হাতে ভেলকি-
আইপিএল ২০২২-এ বল হাতে দুরন্ত ফর্মে রয়েছেন তারকা লেগ স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহল। এখনও পর্যন্ত এবারের আইপিএলে ১৬ ম্যাচে ২৬টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। পার্পল ক্যাপ পাওয়ার দৌড়েও রয়েছেন তিনি। ফাইনালেও আরও একবার নিজের সেরাটা দেওয়ার অপেক্ষায় যুজবেন্দ্র চাহল।
অলরাউন্ডার রবিচন্দ্রন অশ্বিন-
রাজস্থান রয়্য়ালসের আরও এক শক্তি হল রবিচন্দ্রন অশ্বিনের অলরাউন্ড পারফরম্য়ান্স। রাজস্থান রয়্যালসের স্পিন অ্য়াটাকে অন্যতম সেরা ভরসা রবিচন্দ্রন অশ্বিন। শুধু বল হাতেই নয়, ব্য়াট হাতেও রান করেছেন তিনি। ১৬ ম্য়াচে ১২টি উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ব্য়াট হাতে করেছেন ১৮৫ রান। ফাইনালে স্পিনের ভেলকি দেখাতে প্রস্তুত অশ্বিন।
রাজস্থান রয়্যালসের দুর্বলতাঃ
মিডল অর্ডারের ধারাবাহিকতার অভাব-
রাজস্থান রয়্যালসের মিডল অর্ডার অনেক ম্যাচেই ধারাবাহিকতার অভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে। অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসনের সেট হয়েও উইকেট দিয়ে আসা, দেবদূত পাড়িককলের নামের প্রতি সুবিচর না করতে পারা, রিয়ান পরাগের হটকারিতা, এই বিষয়গুলি ভোগাতে পারে রাজস্থানকে।
আমেদাবাদের পিচে স্পিন না ধরা-
আমবাদের পিচ থেকে সাহায্য পেয়ে প্রসিধ কৃষ্ণা, ওবেদ ম্যাকয় ও ট্রেন্ট বোল্ট দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে নজর কেড়েছেন। তবে পিচে স্পিনাররা তেমন একটা সাহায্য পাননি। অশ্বিন-চাহাল ব্যর্থ হলে রাজস্থানের পক্ষে ট্রফি জেতা মুশকিল। কেননা, গিল, হার্দিক, ঋদ্ধি, মিলাররা পেস বোলিংয়ের বিরুদ্ধে তুলনায় স্বচ্ছন্দ।
পেসারদের রান খরচ-
রাজস্থান রয়্যালস পেসাররা ভালো বোলিং করলেও অনকে সময় অনেক বেশি রান খরচ করে ফেলছেন। ট্রেন্ট বোল্ট, প্রসিদ্ধে কৃষ্ণা থেকে শুরু করে ওবেড ম্যাককয় অনেক সময় বেশি রান দিয়ে দিচ্ছেন। সেই বিষয়টি ফাইনালে কমাতে হবে।
আরও পড়ুনঃIPL 2022 Final- আইপিএল ফাইনালের মহারণ কোন তারকাদের হতে পারে কড়া টক্কর, দেখে নিন এক ঝলকে