সংক্ষিপ্ত
আইপিএল ফের দেখল আরও একটি রুদ্ধশ্বাস ম্য়াচ। শেষ ওভারে গিয়ে পাল্টে গেল খেলার রেজাল্ট। জেতা ম্য়াচ হারল পঞ্জাব কিংস। ২ রানে জয় পেলন রাজস্থান রয়্যালস।
আইপিএল IPL) ও ক্রিকেট বিশ্ব সাক্ষী থাকল পঞ্জাব কিংস (Punjab Kings) ও রাজস্থান রয়্যালসের (Rajasthan Royals) মধ্যে আরও একটি থ্রিলার ম্যাচের। ম্যাচের ১৯ তম ওভারের শেষ পর্যন্ত কেউ ভাবতে পারেনি পকেটে পুরে ফেলা ম্য়াচ হাতছাড়া হতে পারে পঞ্জাব কিংসের। শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল মাত্র ৪ রান। হাতে ছিল ৮ উইকেট। কিন্তু কার্তিক ত্যাগির একটি ওভার পুরো পাল্টে দিল খেলার। শেষ ওভারে ১ রান দিয়ে নিলেন ২ উইকেটে। আর রাজস্থান রয়্যালসকে হারা ম্যাচে এনে দিলেন মহামূল্য়বান ২ পয়েন্ট। প্রথম ব্যাট করে ১৮৫ রান করে সঞ্জু স্যামসনের (Sanju Samson) দল। রাজস্থানের হয়ে যশশ্বী জয়সওয়াল সর্বোচ্চ ৪৯ রান করেন। পঞ্জাবের হয়ে ৫ উইকেট নিয়ে অনবদ্য বোলিং করেন অর্শদীপ সিং। জবাবে রান চেজ করতে নেমে হাফ সেঞ্চুরি করেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল (Mayank Agarwal) ও ৪৯ রান করেন অধিনায়ক কেএল রাহুল (KL Rahul)। কিন্তু কাজে এল না তাদের ইনিংস। ২ রানে ম্য়াচ জিতল রাজস্থান।
ম্যাচে টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন পঞ্জাব কিংস অধিনায়ক কেএল রাহুল। ব্যাট করতে নেমে অনবদ্য শুরু করেন রাজস্থানের দুই ওপেনার যশশ্বী জয়সওয়াল ও ইভিন লুইস। ৫ ওভারের মধ্যেই নিজেদের মধ্যে অর্ধশতরানের পার্টনারশিপ করে দুই ওপেনার। ৫৪ রানে প্রথম উইকেট পড়ে রাজস্থানের। ২১ বলে ৩৬ রান অর্শদীপ সিংয়ের বলে আউট হন লুইস। কিন্তু এদিন ব্যাট হাতে নিরাশ করেন রাজস্থান অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। মাত্র ৪ রান করে ইশান পোড়েলের বলে আউট হন তিনি। অপরদিক থেকে নিজের ইনিংস চালিয়ে যান জয়সওয়াল। লিয়াম লিভিংস্টোনকে সঙ্গে নিয়ে একশো পার পৌছে দেয় দলের রান। দলের ১১৬ রানে ব্যক্তিগত ২৫ রান করে অর্শদীপের শিকার হন লিভিংস্টোন। অপরদিতে ৪৯-এ হরপ্রীত ব্রারের বলে আউট হয়ে প্যাভেলিয়নে ফেরত যান যশশ্বী জয়সওয়াল।
এরপরই ঝোড়ো ইনিংস খেলেন মাহিপাল লোমর। ১৭ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ২টি চার ও চারটি ছয় মারেন লোমর। তাকেও প্যাভেলিয়নের রাস্তা দেখান অর্শদীপ। কিন্তু এরপর আর কোনও রাজস্থানের ব্যাটসম্যান ক্রিজে দাঁড়াতে পারেননি। রিয়ান পরাগ, রাহুল তেওয়াটিয়া ও ক্রিস মরিসের মত নারকাটারি ব্যাটসম্যানের শিকার করেন মহম্মদ শামি। চেতন সাকারিয়া ও কার্তিক ত্যাগিকে আউট করে রাজস্থানকে অল আউট করাই নয় আইপিএল কেরিয়ারে প্রথমবার ৫ উইকেট নেন অর্শদীপ সিং। একসম যেখানে মনে হচ্ছিল ২০০-র বেশি স্কোর করবে রাজস্থা সেখানে ১৮৫-তেই অলআউট হয়ে যায় সঞ্জু স্যামসনের দল।
১৮৬ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে প্রথম থেকেই মারকাটারি ব্যাটিং শুরু করেন পঞ্জাব কিংসের দুই ওপেনার কেএল রাহুল ও মায়াঙ্ক আগরওয়াল। একের পর এক আক্রমণাত্মক শট খেলে রাজস্থান বোলারদের ম্য়াচে ফেরার সব রাস্তা বন্ধ করে দেয় তারা। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই নিজেদের মধ্যে ৫০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ফেলেন দুই তারকা। পাওয়ার প্লে শেষের পর আরও রুদ্রমূর্তি ধারন করে রাহুল-মায়াঙ্ক জুটি। ঝোড়ো ইনিংস খেলে নিজের অর্ধশতরানও পূরণ করেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল। নিজেদের মধ্যে শতরানের পার্টনার্শিপও পূরণ করেন রাহুল ও মায়াঙ্ক। কিন্তু নিজের অর্ধশত রান পূরণে থেকে ঠিক এক রান আগে আউট হন কেএল রাহুল। ১২০ রানে প্রথম উইকেট পড়ে পঞ্জাবের। জুটি ভাঙতেই প্যাভেলিয়নে ফেরেন মায়াঙ্কও। ৬৭ রান করে আউট হন তিনি।
দুই ওপেনারকে হারানোর পরও ভালো ব্যাটিং করেন নিকোলাস পুরান ও এডেইন মার্করাম। বেশ কিছু আক্রমণাত্মক শটও খেলেন তারা। পঞ্জাব কিংসকে অবধারিত জয়ের দিকেই নিয়ে যাচ্ছিলেন দুই তারকা। নিজেদের মধ্যে ৫০ রানের পার্টনারশিপও পূরণ করেন পুরান-মার্করাম জুটি। ১৯ ওভারের শেষে পঞ্জাবের স্কোর ছিল ১৮২ রানে ২ উইকেট। জয়ের জন্য ৬ বলে দরকার ছিল ৪ রানের। প্রথম বলে রান করতে পারেননি মার্করাম। দ্বিতীয় বলে এক রান নেন তিনি। ১৮৩ রানে কার্তিক ত্যাগির তৃতীয় বলে আউট হন পুরান। তিনি করেন ৩২। দীপক হুডা একটি বল মিস করেন ও দ্বিতীয় বলে আউট হয়ে যান। শেষ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৩ রান। কিন্তু ফ্যাবিয়েন অ্যালেন সেই বল মিস করেন। ২ রানে ম্যাচ জেতে রাজস্থান। কার্তিক ত্যাগির একটি ওভার আরও একবার প্রমাণ করল ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা।