সংক্ষিপ্ত

চলতি  বছরে  বাঘাযতীন তরুণ সংঘের থিম হলো- 'মুক্ত করো ফাঁস'। এই ভাবনার মধ্য দিয়ে মায়ের কাছে আবেদন এবং সাধারণ মানুষের কাছে বিশেষ বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে বাঘাযতীন তরুণ সংঘ। আমাদের মধ্যে সেই চেতনার উন্মেষ হোক যেখানে প্লাস্টিক অসুরের বিনাশ হবে এবং ধরিত্রী মাকে এই অসুরের হাত থেকে রক্ষা করাই হবে সকলের প্রধান দায়িত্ব। 

এই বছর দুর্গাপুজো যেন বাঙালির কাছে একটু বেশি বাড়তি পাওনা। কারণ বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমা পেয়েছে। তা যেন বড় গর্বের ও আনন্দের বটে। দেবী দুর্গার আগমনে চারিদিকে যেন সাজো সাজো রব। মহালয়ার দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় পুজোর প্রস্তুতি। পিতৃপক্ষের সমাপ্তি এবং দেবীপক্ষের সূচনা দিয়েই দুর্গাপুজোর শুভারম্ভ। ইতিমধ্যেই সাদা কাশফুল জানান দিচ্ছে মা আসছে। ঘরে ফিরছে উমা। গোটা বছর ভর এই দিনটার জন্য মুখিয়ে থাকে বাঙালিরা। ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে পুজোর কাউন্টডাউন। বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ উৎসব হল দুর্গাপুজো। পুজো নিয়ে বরাবরই বাঙালির একটা টানটান উত্তেজনা রয়েছে।হাতে আর মাত্র কয়েকদিন। সারা শহর আবার সেজে উঠবে আলোয়। করোনাকালে মহাসঙ্কট কাটিয়ে যেন ফের ছন্দে ফিরেছে আট থেকে অষ্টাদশী। পুজোর আনন্দে খুশির রেশ বাঙালির মনে।  প্যান্ডেল থেকে ঠাকুর, পুজোর থিম থেকে লাইটিং সবকিছুর প্রস্তুতিই এখন তুঙ্গে। কোন পুজোর কী থিম তা জানতেও মুখিয়ে রয়েছেন সকলেই।

 প্রত্যেক বারের মতোই এবারেও নয়া ভাবনা উপস্থাপন করছে বাঘাযতীন তরুণ সংঘ । চলতি  বছরে  বাঘাযতীন তরুণ সংঘের থিম হলো- 'মুক্ত করো ফাঁস'। এই ভাবনার মধ্য দিয়ে মায়ের কাছে আবেদন এবং সাধারণ মানুষের কাছে বিশেষ বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে বাঘাযতীন তরুণ সংঘ। আমাদের মধ্যে সেই চেতনার উন্মেষ হোক যেখানে প্লাস্টিক অসুরের বিনাশ হবে এবং ধরিত্রী মাকে এই অসুরের হাত থেকে রক্ষা করাই হবে সকলের প্রধান দায়িত্ব। সকল মানুষের কাছে 'মুক্ত করো ফাঁস'-এর মাধ্যমে তারা এটাই আবেদনে জানাতে চান, প্লাস্টিক অসুর বধ করে ধরিত্রী মা-কে রক্ষা করুন। কারণ প্লাস্টিক বর্জন না করে পৃথিবী মা-কে রক্ষা করা সম্ভব হবে না। এই বার্তায় দিচ্ছে বাঘাযতীন তরুণ সংঘ । 

 

 

বাঘাযতীন তরুণ সংঘের সভাপতি প্রদ্যুত কুমার দাস জানিয়েছেন, এবছরের পুজোতে বিশেষ বিশেষ চমক অপেক্ষা করছে দর্শনার্থীদের জন্য। বাঘাযতীন তরুণ সংঘের প্রমিলা বাহিনী প্রতিবারের মতোই এবছর মায়ের আরাধনায় বিশেষ আয়োজনের ব্যবস্থা করেছে। প্রতিমা সজ্জায় রাজু পাল এবং থিমের ভাবনা ও রূপায়ন তথাগত ঘোষের ছোঁয়ায় দারুণ চমক অপেক্ষা করছে  সমস্ত দশনার্থীদের জন্য। এবছরের বাঘাযতীন তরুণ সংঘের পুজোর বিশেষ মুখ অনুষা বিশ্বনাথন। এছাড়াও থিম সঙ্গীত নচিকেতা চক্রবর্তীর এবং ভাস্যপাঠে থাকছেন মধুবন্তী মৈত্র। কলকাতাতে এখন থিম পুজো নিয়ে রীতিমতো হাড্ডাহাড্ডি টক্কর চলছে। প্রতি বছরই নয়া নয়া থিম নিয়ে হাজির হয় বাঘাযতীন তরুণ সংঘ। এবারও সেই তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। চলতি বছরে একটি দারুণ বার্তা  সকলকে দিচ্ছে এই পুজা কমিটি। ইতিমধ্যেই কলকাতার সমস্ত শারদ সম্মান রয়েছে বাঘাযতীন তরুণ সংঘের ঝুলিতে। ২০১৯ সালে বিশ্ব বাংলা সম্মান, ২০২১ সালে কলকাতাশ্রী, মেয়রের বিশেষ সম্মান, শ্রেষ্ঠ পরিবেশ রচনা (পরিবেশ দপ্তর) সহ একাধিক পুরস্কার পেয়েছে এই ক্লাব। বাঘাযতীন তরুণ সংঘের সভাপতি প্রদ্যুত কুমার দাস আরও জানিয়েছেন, ৭৩ তম বর্ষে তৃতীয়ার দিনই  সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুজোর শুভ উদ্বোধন হবে বাঘাযতীন তরুণ সংঘে। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের হাত ধরেই পুজোর শুভারম্ভ হবে বাঘাযতীন তরুণ সংঘে। এছাড়াও পুজোর বিশেষ মুখ অনুষা বিশ্বনাথন, নচিকেতা চক্রবর্তী, মধুবন্তী মৈত্র সহ বিশিষ্ট মানুষজনও উপস্থিত থাকবেন।  তৃতীয়ার দিন থেকে পুরো দশমী পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে এই ক্লাব। পাশাপাশি দুঃস্থদের নিয়েও একটি বিশেষ পরিকল্পনা রাখা হয়েছে,পুজোর উদ্বোধনের দিনই সেই চমক দিতে চান উদ্যোক্তারা। পুজোর বাজেটও গত বছরের তুলনায় বেশ অনেকটাই বেড়েছে। গত দুবছর যেহেতু অতিমারিতে সেভাবে কিছু করা যায়নি তাই এবছরটা আরও বেশি করে অভিনবত্বের ছোঁয়া রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। পরিবেশ সচেতনতা ও কোভিডের কথা মাথায় রেখেই পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে। গত দুবছর ধরে যেভাবে মহামারিতে পুজো হয়েছে সেগুলির সবই ব্যবস্থা করা হবে।  সরকারি নির্দেশ মেনে মাস্ক থেকে স্যানিটাইজার, দুরত্ব সবকিছু বজায় রেখেই প্যান্ডেলে এসে প্রতিমা দর্শন করতে হবে। 

আরও পড়ুন- ৮৩তম গৌরবময় দুর্গোৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত হরি ঘোষ স্ট্রিট সার্বজনীন

আরও পড়ুন-জমজমাট পুজোয় অদেখার যাত্রায় যেতে প্রস্তুতি চলছে সিকদার বাগান সাধারন দুর্গোৎসব কমিটির

আরও পডুন- জগৎ মুখার্জি পার্কের পুজো মণ্ডপে শরতে বর্ষার আমেজ, অন্য পরিবেশ তৈরিতে ব্যস্ত উদ্যোক্তারা