সংক্ষিপ্ত

বিশ্বজিৎ সরকারের ভাই অভিজিৎ গত বছর দোসরা মে নিহত হন এই নির্বাচন পরবর্তী হিংসায়। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরপরই হিংসায় প্রাণ হারান তিনি। পুজো উদ্যোক্তারা বলেন "আমরা সেই মায়েদের যন্ত্রণার বাস্তবতা চিত্রিত করার চেষ্টা করছি যারা আর কখনও উত্সব উদযাপন করতে পারবে না,"

গত বছরের বিধানসভা নির্বাচনের পর যে হিংসা কাঁপিয়েছিল গোটা রাজ্য, এবারের দুর্গাপুজোর প্যান্ডেলে উঠে এল সেই ভয়াবহতার ছবিই। ভোট পরবর্তী হিংসাকে থিম হিসেবে দেখানো হয়েছে এই প্যান্ডেলে। কলকাতার এই দুর্গা পূজা প্যান্ডেলের দেবী দুর্গাকে এক মৃত সন্তানের মা হিসাবে দেখানো হয়েছে। 
প্যান্ডেলটি কালো কাপড়ে ঢেকে তৈরি করা হয়েছে। যার ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজবে সন্তান হারানো মায়েদের হাহাকার। নারকেলডাঙ্গার পুজো কমিটি এমনই উদ্যোগ নিয়েছে। 

পুজোর সংগঠক বিজেপি নেতা বিশ্বজিৎ সরকার জানাচ্ছেন "যদিও গোটা রাজ্য এখন উৎসব উদযাপন করছে। কিন্তু সবাই ভুলে গিয়েছে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের হিংসার কথা, ভুলে গিয়েছেন সেই হিংসায় প্রাণ হারানো মানুষগুলোর কথা। তাঁদের পরিবার পরিজনদের কথা মাথায় রেখেই এই উদ্যোগ।"

উল্লেখ্য, পুজোর অন্যতম আয়োজন বিজেপি নেতা বিশ্বজিৎ সরকারের ভাই অভিজিৎ গত বছর দোসরা মে নিহত হন এই নির্বাচন পরবর্তী হিংসায়। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরপরই হিংসায় প্রাণ হারান তিনি। পুজো উদ্যোক্তারা বলেন "আমরা সেই মায়েদের যন্ত্রণার বাস্তবতা চিত্রিত করার চেষ্টা করছি যারা আর কখনও উত্সব উদযাপন করতে পারবে না," পাড়ার মাঠে সরস্বতী ও কালীমাতা মন্দির পরিষদের প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে কালো কাপড় দিয়ে। হিংসা ও রক্তপাতকে চিত্রিত করতে লাল রঙ করা হয়েছে।

২০২১ সালের ২ মে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকেই দিকে দিকে শুরু হয় ভোট পরবর্তী হিংসা। বিজেপির অভিযোগ বাংলার ভোট পরবর্তী সময়ে ১২ হাজার হিংসার ঘটনা ঘটেছে। ২৯৪ টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ১৪২ টি কেন্দ্র থেকে এই সব অভিযোগগুলি উঠে এসেছে। বিজেপি কর্মীদের উপরেও আক্রমণ করা হয়েছে। ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। এই মামলায় প্রথম থেকেই পুলিশি নিষ্কৃয়তার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। ভোটপরবর্তী হিংসা নিয়ে একাধিক পিটিশন জমা পড়ে হাইকোর্টে। প্রসঙ্গত ভোটের পর সারা বাংলা জুড়েই তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে বিজেপি।

রাজ্যে এরপর পরিদর্শনে আসে জাতীয় মানবধিকার কমিশন।  হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্য়ের হিংসা বিধ্বস্ত জায়গায় ঘুরে রিপোর্ট তৈরি করে জাতীয় মানবধিকার কমিশন। এদিকে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয় কমিশনের সদস্যরা। শুনানির সময় এই বিষয়ে তীব্র ভর্ৎসনা করে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে এখানেই শেষ নয় জল গড়ায় অনেক দূর।