সংক্ষিপ্ত

কৃষ্ণচন্দ্র রায়চৌধুরী ছিলেন চূড়ামনের জমিদার। কৃষ্ণচন্দ্রের স্ত্রী দুর্গাময়ী চৌধুরানি চূড়ামনে দুর্গোৎসবের সূচনা করেন। 

অতীতে ইটাহারের চূড়ামন এলাকায় বাস ছিল জমিদার রায় চৌধুরীদের। সেখানেই ঘটা করে দেবী দুর্গার আরাধনা হত। মহানন্দা নদীর করাল গ্রাসে রাজবাড়ি ও রাজ্যপাট নদীগর্ভে চলে গেলে রায়চৌধুরীদের জন্য ভুপালপুরে নির্মিত হয় রাজপ্রাসাদ ও দেবী দুর্গার মন্দির। লিখেছেন সংবাদ প্রতিনিধি অনিরুদ্ধ সরকার।


পুজো শুরু কবে থেকে-
কৃষ্ণচন্দ্র রায়চৌধুরী ছিলেন চূড়ামনের জমিদার। কৃষ্ণচন্দ্রের স্ত্রী দুর্গাময়ী চৌধুরানি চূড়ামনে দুর্গোৎসবের সূচনা করেন। বাংলার ১৩৩৫ সালে।


ইতিহাস- 

জমিদার কৃষ্ণচন্দ্র রায়চৌধুরী মারা যাওয়ার পর তার নাবালক পুত্র ভূপালচন্দ্র রায়চৌধুরী উত্তরাধিকারীরা হোন। ভূপালচন্দ্রের নামেই এই এলাকাটি নাম হয় ভূপালপুর। ভূপালপুরের পাশেই আছে দুর্গাপুর, যার নাম হয় ভূপালচন্দ্রের মা দুর্গাময়ী রায় চৌধুরীর নামে। ১২০০ বঙ্গাব্দের শেষের দিকে চূড়ামন জমিদার কৃষ্ণচন্দ্র রায় চৌধুরী মারা যান। তার মৃত্যুর পর, এবং মহানন্দার জলে জমিদারবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলে জমিদারবাড়ির লোকেরা ভূপালপুরে চলে আসেন। জমিদার কৃষ্ণচন্দ্র সেইসময়ে নাবালক ছিল তাই ব্রিটিশ সরকার তার দেখাশোনার ভার গ্রহণ করে। এই সময়ে ব্রিটিশ সরকার এই রাজবাড়ীর একতলাটি তার থাকার জন্য তৈরি করে দেয়।




পুজো পদ্ধতি- 

জোড়া মোষ ও পাঁঠা বলির মাধ্যমে আগে দেবীর বোধন হত মহালয়াতেই । এখন মহাষষ্ঠীতেই দেবীর বোধনের পাশাপাশি বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলি প্রথা। প্রতিমা হয় একচালার। মায়ের গাত্রবর্ণ হলুদ। অসুরের রং সবুজ। চালচিত্রে মহাদেবের উপরে মকরবাহিনী গঙ্গার অধিষ্ঠান। রীতি মেনে আজও সপ্তমীর সকালে নদীতে ঘট ভরতে যাবার সময় বাড়ির পুরুষেরা উপস্থিত থাকেন। এবং জমিদারি ঐতিহ্যের প্রতীক হিসাবে শূন্যে ৫ রাউন্ড গুলি ছুড়ে পুজোর সূচনা হয়। দশমীতে বিরাট মেলা বসে। প্রথা অনুযায়ী মেলা শেষ হলে প্রতিমা নিরঞ্জন হয়।


রাজবাড়ির বিনোদন-
অতীতে রাজবাড়ির পুজোকে কেন্দ্র করে যাত্রাপালা, থিয়েটার, সার্কাসের আসর বসত। আমোদ প্রমোদে মেতে উঠতেন এলাকাবাসী।

আরও পড়ুন-
অ্যান্টনি ফিরিঙ্গী, মহাত্মা গান্ধী, সুভাষচন্দ্র বসু, শ্রীরামপুর রাজবাড়ির দুর্গাপুজো ছিল নক্ষত্রের সমাহার
বেনারসি শাড়ি আর সোনার গয়নায় সেজে ওঠে চট্টোপাধ্যায় বাড়ির মেয়ে দুর্গা, দশমীতে বিসর্জনের আগে দিয়ে যায় কনকাঞ্জলি
মুসলমান জেলের বাড়ির মাটির নিচে পাল রাজাদের আমলের কষ্টিপাথরের দুর্গামূর্তি, হালদার বাড়ির পুজোর সেই অমলিন ইতিহাস