সংক্ষিপ্ত
মুকুল রায়-সিপিএম স্থানীয় নেতার গোপন বৈঠকের অভিযোগ। টাকার লেনদেন চলছে বলে দাবি। নাগেরবাজার এলাকার একটি গেস্টহাউসে ও সামনে দাঁড়ানো ৪ থেকে ৫টি গাড়িতে ভাঙচুর। এলাকার দখল নিয়েছে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী।
নির্বাচনের আগে কমিশন রাজ্যে ৩২৪ ধারা জারি করেছে। তার মধ্য়েই দমদমের নাগেরবাজার এলাকা উত্যপ্ত হল রাজনৈতিক উত্তেজনায়। মুকুল রায় ও এক সিপিএম নেতার গোপন বৈঠকের অভিযোগে রাত ১০টার পর কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হল নাগের বাজারের এক গেস্ট হাউসের সামনের রাস্তা। এলাকার দখল নিতে হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী-কে। এলাকায় আসেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরাও।
বৃহস্পতিবার, রাত দশটার পর আচমকা বেশ কিছু তৃণমূল সমর্থক একটি গেস্ট হাউসের সামনে জড়ো হয়ে দাবি করেন, সেখানে মুকুল রায় স্থানীয় এক সিপিএম নেতার সঙ্গে গোপন বৈঠক করছেন। টাকার লেনদেন চলছে এই অভিযোগও করা হয়। বিক্ষোভ চলাকালীনই ক্রমে পরিস্থিতি উত্যপ্ত হয়ে ওঠে। এরপরই ওই গেস্ট হাউসের উপরের একটি ফ্ল্যাটে ও তার সামনের রাস্তায় দাঁড়ানো অন্তত ৪-৫টি গাড়িতে ভাংচুর চালানো হয়। অভিযোগ করা হয় ওই গাড়িগুলিতেই টাকা নিয়ে আসা হয়েছিল।
খবর পেয়ে এলাকায় আসে বিশাল পুলিশবাহিনী। লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভকারীদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুরে যুক্ত বেশ কয়েকজনকে আটকও করা হয়। তবে ওই বিক্ষোভকারীদের অভিয়োগ মতো টাকার কোনও সন্ধান সেখানে পাওয়া যায়নি। ওই ফ্ল্যাটটির মালিক জানান তাঁর স্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে সেখানে একটি পার্টি দেওয়া হয়েছিল। সেই পার্টিতেই এসেছিলেন মুকুল রায় ও স্থানীয় এক সিপিএম নেতা পল্টু দাসগুপ্ত।
তবে বিক্ষোভকারীদের পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। বিক্ষোভ দেখানোর সময় তারা তৃণমূলের নামে স্লোগান দিলেও পরে সংবাদ মাধ্যমে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দাবি করেন, সেখানে কোনও তৃণমূল কর্মী বিক্ষোভ দেখায়নি। কিন্তু ভিতরে টাকার লেনদেন চলছিল বলে তিনি জানেন। তাঁর অভিযোগ বিজেপি কর্মীরাই সেখানে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল।
অন্যদিকে বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু দাবি করেছেন, যারা ভাঙচুর চালিয়েছে, তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক টাকার লেনদেন চলছিল বলে দাবি করায় তিনিই এই ভাঙচুরের ঘটনায় যুক্ত বলে অভিযোগ করেন সায়ন্তন। আরেক বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, স্বাধীন দেশে কোনও দলের নেতা, অন্য কোনও দলের নেতার সঙ্গে বৈঠক করতেই পারেন। সেখানে বাধা দেওয়া অধিকার কারোর নেই। এই ঘটনা আরও একবার এই রাজ্যে যে আইন শৃঙ্খলা নেই তাই দেখিয়ে দিল।
সিপিআইএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য দাবি করেন, পল্টু দাসগুপ্ত নামে এক নেতা আগে দমদম এলাকায় সিপিএম-এ ছিলেন, কিন্তু এখন ওই নামে তাঁদের পার্টিতে কোনও নেতা নেই। কাজেই সিপিএম-এর সঙ্গে বিজেপির বৈঠক হচ্ছিল বলে যে প্রচার করা হচ্ছে তা সঠিক নয়। এই বিষয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমেই প্রথম জেনেছেন বলে জানিয়েছেন।