সংক্ষিপ্ত

নিন্দকদের দাবি, স্রেফ ‘হাওয়া’য় ভর দিয়ে বাংলাদেশে আছড়ে পড়া সিত্রং ঘূর্ণিঝড়কে ফের ভারতেই রেখে গেলেন আন্তর্জাতিক তারকা চঞ্চল চৌধুরী! 

কলকাতা ছেড়ে যাচ্ছেন ‘চান মাঝি’! মন তাঁরও চঞ্চল। টানা পাঁচ দিন অস্থায়ী সংসারই পেতে ফেলেছিলেন শহরে। নিয়ম করে রোজ দেখা দিয়েছেন শহরবাসীদের। তাঁকে পেয়ে কী খুশি সবাই! নন্দন চত্বর শুধু তাঁর জন্য জনারণ্য। এই গিজগিজে ভিড় এর আগে বাংলার কোন নায়কের (পড়ুন মহানায়ক) সময় যেন দেখা যেত? নিন্দকদের দাবি, স্রেফ ‘হাওয়া’য় ভর দিয়ে বাংলাদেশে আছড়ে পড়া সিত্রং ঘূর্ণিঝড়কে ফের ভারতেই রেখে গেলেন আন্তর্জাতিক তারকা চঞ্চল চৌধুরী! কলকাতার মানুষ রত্ন চেনে। তাই তাঁর এই দাপট মাথায় করে রেখেছে। বদলে অফুরন্ত ভালবাসায় ভরিয়ে দিয়েছে চঞ্চলকে। যাওয়ার আগে সে কথা অকপটে স্বীকার করে গেলেন সিরিজ ‘কারাগার’-এর ‘মীরজাফরের খুনি’! মঙ্গলবার তিনি পৌঁছে গিয়েছিলেন কলকাতার আরও এত গর্ব আকাশবাণী ভবনে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আবক্ষ মূর্তির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছেন। বুধবার, শহর ছাড়ার কিছু ক্ষণ আগে সেই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। সঙ্গে ‘মনপুরা’ লেখনি, ‘আহা রে!! কত ভালোবাসা, কত সম্মান!! ভালো থেকো কলকাতা…..“হাওয়া”য় ভেসে এসেছিলাম…. ফিরে যাই মায়ের কোলে॥ কলকাতার পুরোটা সময় অমূল্য স্মৃতি হয়ে থেকে যাবে।’

 

 

৪র্থ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব এ ভাবেই ‘হাওয়া’ময়। কলকাতায় আয়োজিত এই বিশেষ উৎসবের প্রথম দিন থেকেই তিল ধারণের জায়গা নেই নন্দনে। সাপের মতো লাইন বাইরের রাস্তা দিয়ে এঁকে বেঁকে পৌঁছে গিয়েছে রবীন্দ্রসদন পর্যন্ত। প্রথম দিনের প্রথম শো দেখতে এসেছিলেন বাংলা বিনোদন দুনিয়ার ‘ইন্ডাস্ট্রি’ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। চঞ্চল তাঁর সঙ্গে পর্দা ভাগ করেছিলেন গৌতম ঘোষের ‘মনের মানুষ’ ছবিতে। উদ্বোধনের দিন বাংলাদেশ থেকে চঞ্চলের সঙ্গে উড়ে এসেছিলেন জয়া আহসানও। তাঁর ছবি ‘বিউটি সার্কাস’ উৎসবে দেখানো হয়েছে। এসেছিলেন পরিচালক-অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য, রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় প্রমুখ। প্রথম দিন চঞ্চলের ছবি দেখানোর পরেই বদলে যায় শহরের আবহাওয়া। দর্শকদের চাহিদায় নির্দিষ্ট শো ছাড়াও প্রায় প্রতি দিন একটি করে বাড়তি শো-এর ব্যবস্থা করতে হয় নন্দন কর্তৃপক্ষকে। প্রতি দিন শো শেষে দর্শকদের মুখোমুখি হয়েছেন অভিনেতা। প্রতি দিনই তাঁকে ঘিরে জনজোয়ার! শেষ দিনে নন্দন চত্বরে দেখা গিয়েছে অনির্বাণ ভট্টাচার্য, ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়কে।

 

 

৯ অক্টোবর থেকে টানা পাঁচ দিন কলকাতা শহরে পড়শি দেশ রাজত্ব করেছে। নন্দনে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ছিল ও পার বাংলার জনপ্রিয় এক মুঠো ছবির আয়োজন। সৌজন্যে বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন। বুধবার ভাইফোঁটার আবহে প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে এ কথা জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ উপদূতাবাসের উপরাষ্ট্রদূত আন্দালিব ইলিয়াস। পাঁচ দিন ধরে মোট ৩৭টি ছবি দেখানো হয়েছে। উদ্বোধনী ছবি ‘হাওয়া’, ‘হাসিনা এ ডটার্স টেল’। তালিকায় ‘বিউটি সার্কাস’, ‘কালবেলা’, ‘চিরঞ্জীব মুজিব’, ‘বিশ্বসুন্দরী’, ‘রেহানা মরিয়ম নুর’, ‘কমলা রকেট’, ‘নোনাজলের কাব্য’, পরীমণির ‘বিশ্বসুন্দরী’ এবং ‘গুণিন’। 

 

 

২৯ অক্টোবর বিকাল ৪টেয় উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ্, বিশিষ্ট পরিচালক গৌতম ঘোষ। ছিলেন আগে বলা দুই বাংলার দুই তারকা। এ ছাড়াও, উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের তথ্য প্রযুক্তি ও পর্যটন দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। উৎসবের প্রথম দিন নন্দন ১-এ দুপুর ১টা থেকে ‘হাওয়া’ দেখানো হয়। ছবিতে চঞ্চলের অভিনয় এবং ছবির ‘সাদা কালা’ গান দর্শকের ভীষণ প্রিয়। ‘হাওয়া’ চলতি বছরের অস্কার প্রতিযোগিতাতেও বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছে। খবর, ডিসেম্বরে শহরে শুরু হবে ২৮তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। সেখানেও দুদিন দেখানো হবে মেজবাউর রহমান সুমনের এই ছবিটি।