সংক্ষিপ্ত
হাসতে হাসতেই রাহুলের পাল্টা প্রশ্ন, পরপর দুটো ধারাবাহিকে রুকমার সঙ্গে কাজ। ভাল বোঝাপড়া, টানটান বন্ধুত্ব। এই বন্ধুত্ব বারেবারে ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ কেউ ছাড়ে?
গুঞ্জন সত্যি। ‘পিলু’র পরে শ্যুট শেষ জি বাংলার আরও এক ধারাবাহিক ‘লালকুঠি’র। এশিয়ানেট নিউজ বাংলাকে ধারাবাহিকের অন্যতম মুখ্য চরিত্র ‘বিক্রম’ রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘ঠিক সময়েই শেষ হচ্ছে ‘লালকুঠি’। রহস্য-রোমাঞ্চ ধারাবাহিক এর চেয়ে বেশি সময় চলে না। আট মাস মানে অনেকটাই লম্বা সময় নিয়ে দর্শক আমাদের দেখেছেন।’ কিন্তু মন যে মানে না! তাই শেষ শ্যুটিংয়ে স্টুডিয়ো ফ্লোরে সবার চোখে জল মুখে হাসি। পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে শুভেচ্ছা বিনিময়। আশীর্বাদ, ভালবাসা ‘দেয়া নেয়া’। আবার দেখা হবে এই আশ্বাস মুখে মুখে ফিরেছে।
একটি ধারাবাহিকে জুটি বাঁধলে, সেই জুটি জনপ্রিয় হলে—তার পরেই নাকি আবার সঙ্গে সঙ্গে তার দেখা মেলে না। এই ধারাবাহিক সেই ধারণাও ভেঙেছে। স্টার জলসার ‘দেশের মাটি’ ধারাবাহিকের ‘রাজা-মাম্পি’ ওরফে রাহুল আর রুকমা রায় ‘লালকুঠি’র ‘বিক্রম-অনামিকা’! ‘রাম্পি’-ভক্তরা খবর পেয়েই উল্লাসিত। চলতি বছরের এপ্রিলে এক মুঠো রহস্য আর হাড়হিম আতঙ্ক প্রচার ঝলকে। লাল বেনারসী, গয়নায় সেজে ওঠা ‘অনামিকা’ বিশাল ফাঁকা বাড়িতে একা। কোনও নিমন্ত্রণ রক্ষায় বেরোতে যাবেন। অঝোরে বৃষ্টি। নায়িকা বন্দি নিঝুম পুরীতে। হঠাৎই কার ছায়া দেওয়ালে? চমকে উঠে পিছনে ফিরতেই সশব্দে দরজা বন্ধ। বন্দি তিনি। আচমকা তাঁর পাশের দেওয়ালে রক্তমাখা ছোরা! দর্শকেরা খুশিয়ে নড়ে বসেছিলেন সে দিন। যাক, তা হলে ছোট পর্দাতেও এ বার রহস্য-রোমাঞ্চ দানা বাঁধবে।
পাশাপাশি, ধারাবাহিকটি মনে পড়িয়ে দিয়েছিল ১৯৭৮-এর দ্বিভাষিক ছবি ‘লালকুঠি’কেও। তার পর ধারাবাহিক দেখতে দেখতে টেলিপাড়ার অন্দরে এই প্রশ্নও জেগেছিল, সুরিন্দর ফিল্মসের ধারাবাহিকে কি রাহুল-রুকমা আগের মতোই হিট? রাহুলের দাবি, ‘নিন্দকরা সব সময়েই উল্টো বলবে। হিট না হলে ধারাবাহিক আট মাসও চলত না। আমার কাছেও চ্যালেঞ্জ ছিল, রাহুল-রুকমাকে হিট করানো। আমরা পেরেছি। এতেই আমি খুশি।’ যদিও শেষ শ্যুটের দিনে খুশি হতে পারেননি ছোট পর্দার ‘বিক্রম’। কাঞ্চন মল্লিকের ‘প্রাক্তন স্ত্রী’ অভিনেত্রী পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায় এই ধারাবাহিকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি এসে জড়িয়ে ধরতেই রাহুলের চোখে জল চিকচিক! দুই অভিনেতাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে রুকমা, অনামিকা সাহা, হৃতজিৎ চট্টোপাধ্যায়, তনুকা চট্টোপাধ্যায়, সৌরভ কর, দেবদূত ঘোষ, ভরত কল প্রমুখ। প্রবীণ অভিনেতা অনামিকার পা ছুঁয়েও আশীর্বাদ নিয়েছেন নবীন অভিনেতারা।
এ বার কী করবেন? স্বাভাবিক কৌতূহল নিয়েই রাহুলকে জিজ্ঞাসা। বড় করে শ্বাস ছেড়ে অভিনেতার জবাব, ‘ক’দিন বিশ্রাম নেব। আমাদের অভিনেতাদেরও বিশ্রামের প্রয়োজন আছে। সারা ক্ষণ ক্যামেরায় মুখ দেখাতে নেই। বিরতি কাটিয়ে কাজে ফিরব।’ নতুন ধারাবাহিক? নস্যাৎ করে রাহুল বলেছেন, ‘এ বার পরিচালকের ভূমিকায়। প্রযোজক রানা সরকার সরে গিয়েছেন। কিন্তু ‘কলকাতা ৯৬’ আমি বানাব। ছবির দিকে মন দেব। জানি, একটু মনোযোগ দিলেই নতুন প্রযোজকের সন্ধান পাব।’ আর? একটু থেমে জানালেন, আগামি বইমেলাতেও নতুন বই বেরোবে। শ্যুটিংয়ের চাপে তার প্রুফ দেখা হয়নি। সেই কাজেও এ বার ব্যস্ত হয়ে পড়তে হবে। রুকমার সঙ্গে জুটি বেঁধে ফিরবেন না? সঙ্গে সঙ্গে আশ্বাস, ‘দর্শক, পরিচালক, প্রযোজক চাইলে অবশ্যই রুকমাকে নিয়ে রাহুল ফিরবে।’ হাসতে হাসতেই অভিনেতার পাল্টা প্রশ্ন, পরপর দুটো ধারাবাহিকে কাজ। ভাল বোঝাপড়া, টানটান বন্ধুত্ব। এই বন্ধুত্ব বারেবারে ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ কেউ ছাড়ে?