সংক্ষিপ্ত
অসুস্থ উৎপলেন্দু চক্রবর্তী! বাবার অসুস্থতা নিয়ে কী বললেন অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী
দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ চলচ্চিত্র পরিচালক উৎপলেন্দু চক্রবর্তী। একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে সম্মানিত এই পরিচালক। আশির দশকে 'ময়নাতদন্ত', 'চোখ', 'দেবশিশু'র মতো চর্চিত ছবি পরিচালনা করেছেন তিনি। কিছুদিন আগে রিজেন্ট পার্কের বাড়ির খাট থেকে পড়ে যান পরিচালক। পড়ে গিয়ে আঘাত লাগার কারণে পরিচালকের কোমরের হাড় ভেঙেছে। এ ছাড়াও রয়েছে বুকে ও ফুসফুসের সংক্রমণ। বর্তমানে এসএসকেএম-এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। তবে অসুস্থ উৎপলেন্দুর কোনও খোঁজ খবর নেয়নি তাঁর পরিবার এমনই জানা গিয়েছে অর্ঘ্য। মুখোপাধ্যায়ের তরফে।
অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তীর বাবা উৎপলেন্দু। বাবার খোঁজ নিয়েছেন কি না সে প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কী বলেছেন অভিনেত্রী?
দীর্ঘদিন ধরে পরিচালককে দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন অর্ঘ্য মুখোপাধ্য়ায়। তিনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে জানিয়েছিলেন, 'কেউ তো খোঁজ রাখে না। পরিবারকে কিছু জানানো হয়নি। ঋতাভরী বা চিত্রাঙ্গদা কিংবা শতরূপা স্যানালকে জানানোর প্রশ্ন আসে না। গতবার অসুস্থতার খবর নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছিল। উনি আমাকে ছেলে বলে মানেন। আমাকে বহুবার বলেছেন, আমি ওটা ভুলে যেতে চাই। পিতৃত্ব তো ভোলা যায় না। তবে উনি ওই ট্রমায় আর ফিরতে চান না।'
এবার বাবার অসুস্থতা প্রসঙ্গে একটি সংবাদমাধ্যমে মুখ খুললেন ঋতাভরী। উৎপলেন্দুর অসুস্থতার বিষয়ে অভিনেত্রী জানান, " মিডিয়ার কল্যাণে সব খবরই জানি। গত ৩০ বছরে তো উনি আমাদের কোনও খোঁজ নেননি। সবাই আমাদের পিছনে এরকমভাবে পড়েছে কেন জানি না। ওঁর তো আরেকটা বউ-বাচ্চা আছে। তাদের পিছনে পড়ুক। ওঁর তো একটা বিয়ে নয়। দুটো বিয়ে। ওঁর আগের স্ত্রী ইন্দ্রাণী। ছেলে গোগোল। তাঁদের পিছনে পড়ুক না লোক। ৩০ বছরে তো লোকটার মুখই দেখলাম না।"
আর্থিক সাহায্য করেছেন কি না, তা নিয়ে কথা বলতে চাইলেন না তিনি। ঋতাভরী জানান, "২৭ বছর উনি আমাদের কোনও দায়িত্ব নেয়নি। আমার বা আমার মায়ের-দিদির। লোকটাকে চোখেই দেখিনি। শুধু কথা শুনেছি। আমার মা আর আমার দিদিকে কী কী সহ্য করতে হয়েছে সেগুলো শুনেছি। আর হালকা কিছু স্মৃতি আছে চার বছর বয়সের। তবে এখন আর কোনও অশ্লীল কথা বলতে চাই না। উনি অসুস্থ। ওঁর নামে খারাপ কিছু বলা, ইমেজ নিয়ে টানাটানি, ঝগড়া কিছুই চাই না আমি আর। ওঁর শুভাকাঙ্খী তো অনেক আছে। ওঁর তো আগেরও একটা সংসার আছে। তার পরে সংসার আছে কি না, তাও আমি জানি না। নাম-খ্যাতি থাকলে সবাই পিছনে পড়ে যায়। ৩০ বছর যাকে আমি দেখিনি। আমার স্কুলের একটা মাইনেও কিন্তু উনি দেননি, আমার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাননি। উনিও তো আমাদের জীবন থেকে হাত তুলে নিয়েছিলেন। উনি নিজের জীবনের সব সিদ্ধান্ত, বরাবর একাই নিয়ে এসেছেন। উনি একজন আলফা স্ট্রং মানুষ, যতদূর আমি জানি। আমার মাকে পালিয়ে আসতে হয়েছিল ওই বাড়ি থেকে। ওঁর পাশে তো একজন আছে এখন। ওঁর হয়ে কো-অর্ডিনেট করছে। সরকার সাহায্য করছে। এসবই মিডিয়া থেকেই জানতে পারি। আমার সত্যিই কিছু বলার নেই। আমি যা বলব, তা নিয়েই বিতর্ক হবে। এসব আমি আর চাই না।"
এ ছাড়াও মায়ের প্রসঙ্গে অভিনেত্রী জানান, " ছোটবেলা থেকে মা আমার কাছে সূর্যের মতো। আমার আলটিমেট প্রোটেকটর। আমার মন থেকে সহানুভূতি আছে ওঁর জন্য। কিন্তু, যে আমার মাকে কষ্ট দিয়েছে, তাঁকে কি আমি কখনও ক্ষমা করতে পারি? কই আমার যখন দুটো সার্জারি হল, ওঁকে তো কেউ জিজ্ঞেস করেনি, মেয়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন কি না! মেয়েকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন কি না! আর আজকে ওঁর অসুস্থতার সময়, আমাদের টানা হচ্ছে।"