সংক্ষিপ্ত

পায়েল ৪৫ বছর বয়সে মারা যান এবং তারপর থেকে পরিবার সেই ব্যথা আজও কাটিয়ে উঠতে পারেনি। পয়লা মে, ছিল মেয়ে পায়েল-এর জন্মবার্ষিকী। মেয়ে পায়েলের জন্মদিন উদযাপন করেছিলেন অভিনেত্রী মৌসুমী।

 

২০১৯ সালে মেয়ে পায়েল-কে হারিয়েছেন অভিনেত্রী মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়। তাঁর পরিবার সেই সময় বড় শোকের মধ্যে পড়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে শারীরিকভাবে কষ্ট পাওয়ার পর মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে পায়েল মারা যান। তিনি জুভেনাইল টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসে ভুগেছিলেন ছোট থেকেই। ২০১৯ সালে শেষ নিঃশ্বাস নেওয়ার আগে এক বছর ধরে কোমায় ছিলেন তিনি। পায়েল ৪৫ বছর বয়সে মারা যান এবং তারপর থেকে পরিবার সেই ব্যথা আজও কাটিয়ে উঠতে পারেনি। পয়লা মে, ছিল মেয়ে পায়েল-এর জন্মবার্ষিকী। মেয়ে পায়েলের জন্মদিন উদযাপন করেছিলেন অভিনেত্রী মৌসুমী।

মায়ের সামনে সন্তানের চলে যাওয়া এই বিশাল কষ্ট মোকাবেলার বিষয়েও মুখ খুললেন মৌসুমী। প্রথমদিকে ঘটনাটি নিয়ে কথা বলতে দ্বিধায় ছিলেন তিনি। মৌসুমী বলেন, “পায়েল আশেপাশে না থাকায় আমি এখন এই বিষয়ে কথা বলতে পছন্দ করি না। পায়েল একটি ভুল পছন্দ এবং তার জন্য সে তার মূল্যও দিয়েছে। শুধু আমার মেয়ে নয় আমরা সবাই মূল্য দিয়েছি। কিন্তু আমি বলতে পারি না যে শুধুমাত্র পায়েল ভুল ছিল। কারণ সে যদি ভুলই করে থাকে, তাহলে আমরা কেন কষ্ট পাচ্ছি?”

সিনিয়র সাংবাদিক ভারতী এস প্রধানের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনার সময় আরও খোলামেলা, প্রবীণ অভিনেত্রী বলেছিলেন, “পায়েল ছোট থেকেই খুব সুন্দর একটা বাচ্ছা ছিল। মৃত্যুর আগে মেয়েটা অনেক কষ্ট পেয়েছে। ২০১৭ থেকে ও কোমায় ছিল। মাঝখানে চেতনা ফিরে এলেও। আমাদেরও তাকে দেখতে নিষেধ করা হয়েছিল। আমাদের শেষে পুলিশ, আদালত ইত্যাদির মাধ্যমে যেতে হয়েছিল। সুতরাং, এই বিষয়েও, যত কম বলা যায় ততই ভাল কারণ আমরা যে বিষয়ে কথা বলছি তা খুব কষ্টকর আমার জন্য।"

তিনি কীভাবে এই ঘটনার সঙ্গে কিভাবে মোকাবিলা করেছেন জানতে চাইলে মৌসুমী বিশদভাবে বলেন, “আমরা পারিবারিকভাবে এটি একসঙ্গে পরিচালনা করেছি। সেই সময় আমার মাও মারা যান। মা জানত না কেন পায়েল তাকে দেখতে আসছে না! আমি আমার মাকে বলতে পারিনি যে, পায়েল কোমায় ছিল। আমি ঈশ্বরের কাছে দিনরাত প্রার্থনা করেছি যে, ঈশ্বর আমার মেয়েটাকে আর কষ্ট দিও না ওকে নিয়ে যাও, কারণ আমি ওর কষ্ট আর দেখতে পারছিলাম না। আমাদের সবাইকে একদিন শরীর ত্যাগ করতে হবে। কষ্ট করে লাভ কি? আপনি যদি আত্মাকে ভালোবাসেন তবে আপনার এটিকে মুক্ত করা উচিত। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমার ছোট মেয়ে। আমার স্বামী এখনও এটি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। সে এখনও পায়েলের ছবি দেখে দমবন্ধ হয়ে যায়। তবে আমরা এখনও পায়েলের জন্মদিনও অনেক আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করি। আমরা তার প্রিয় পাইন অ্যাপেল কেক নিয়ে আসি।"

 

অভিনেত্রী মৌসুমী বলেন, তিনি বরাবর পজেটিভিটির সঙ্গে দুঃখ মোকাবেলায় বিশ্বাসী। তিনি বলেছিলেন, “তবে আমিও খুশি কারণ প্রতিদিন একজন মা একটি সন্তানকে, বিশেষ করে আমাদের সৈন্যদের হারাচ্ছেন। যে কারণে আমরা রাতে ঠিকমতো ঘুমাই। আর যখন একজন মা তার সৈনিক-পুত্রকে হারান, তখন তিনি অন্য পুত্রকে প্রস্তুত করেন। তাই তাদের সামনে আমাদের কষ্ট কিছুই নেই। এই ভেবেই হাসতে পারতাম। আমি সব সময় বলি যে আমাদের সুখের উত্স হওয়া উচিত। আমি মনে করি আমি একজন সাহসী মানুষ। আমি এই চিন্তা ভাবনাতেই বড় হয়েছি। ''