ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবরকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তার মেয়ে এষা দেওল ও ছেলে সানি দেওল। তারা জানিয়েছেন, বর্ষীয়ান অভিনেতা ডাক্তারদের তত্ত্বাবধানে আছেন এবং তার স্বাস্থ্যের উন্নতি হচ্ছে। হেমা মালিনীও এই ভুয়ো খবরের তীব্র নিন্দা করেছেন।

ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর উড়িয়ে দিলেন মেয়ে এষা দেওল। তিনি জানান, সংবাদমাধ্যম গুজব ছড়াচ্ছে এবং তার বাবার স্বাস্থ্যের উন্নতি হচ্ছে। ইনস্টাগ্রাম পোস্টের মাধ্যমে তিনি এই প্রতিক্রিয়া জানান। সানি দেওলও স্পষ্ট করেছেন যে, ভুল খবর ছড়ানো উচিত নয়, ধর্মেন্দ্র ডাক্তারদের তত্ত্বাবধানে আছেন এবং শীঘ্রই সুস্থ হয়ে উঠবেন।

এষার পোস্টের পর প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং তার শোকবার্তার টুইটটি ডিলিট করে দেন। শোক জ্ঞাপন করেছিলেন যোগী আদিত্যনাথও। জাতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেছিল। ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবরের বিরুদ্ধে হেমা মালিনীও সরোব এসেছেন। তিনি এটিকে 'অমার্জনীয় ভুল' বলে অভিহিত করেছেন।

গতকাল শ্বাসকষ্টের কারণে ধর্মেন্দ্রকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছিল। স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায় ১ নভেম্বর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

ধর্মেন্দ্রর জন্ম ১৯৩৫ সালের ৮ ডিসেম্বর পাঞ্জাবের লুধিয়ানা জেলার নাসরালি গ্রামে। তিনি লুধিয়ানার সরকারি সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলে পড়াশোনা করেন। ১৯৫২ সালে ফাগওয়ারা থেকে স্নাতক হন। ১৯৬০ সালে 'দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে' ছবির মাধ্যমে ধর্মেন্দ্র তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। এরপর কয়েক দশক ধরে তিনি বলিউডের শীর্ষে ছিলেন। ৬০, ৭০ এবং ৮০-এর দশকে তিনি হিন্দি সিনেমার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন। 'হকীকত', 'ফুল অউর পাত্থর', 'মেরা গাঁও মেরা দেশ', 'সীতা অউর গীতা', 'চুপকে চুপকে', 'শোলে'-এর মতো সিনেমায় তার অসাধারণ অভিনয়ের মাধ্যমে ধর্মেন্দ্র বড় পর্দা শাসন করেছেন। তিনি ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে অন্যতম সুদর্শন এবং বাণিজ্যিকভাবে সফল চলচ্চিত্র তারকা হয়ে ওঠেন।

ধর্মেন্দ্রকে বলিউডের 'হি-ম্যান' বলা হতো। ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে তার চলচ্চিত্র জীবনে তিনি ৩০০টিরও বেশি ছবিতে কাজ করেছেন। হিন্দি সিনেমায় সবচেয়ে বেশি হিট ছবিতে অভিনয়ের রেকর্ডও ধর্মেন্দ্রর নামে। ১৯৭৩ সালে তিনি আটটি হিট এবং ১৯৮৭ সালে টানা সাতটি হিট এবং নয়টি সফল ছবি উপহার দেন, যা হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে সর্বকালের রেকর্ড।

'আঁখে', 'শিকার', 'আয়া সাওয়ান ঝুম কে', 'জীবন মৃত্যু', 'মেরা গাঁও মেরা দেশ', 'সীতা অউর গীতা', 'রাজা জনি', 'জুগনু', 'ইয়াদোঁ কি বারাত', 'দোস্ত', 'ছাস', 'প্রতিজ্ঞা', 'গুলামি', 'হুকুমত', 'আগ হি আগ', 'এলান-ই-জং', 'তহলকা', 'অনপঢ়', 'বন্দিনী', 'হকীকত', 'অনুপমা', 'মমতা', 'মঝলি দিদি', 'সত্যকাম', 'নয়া জমানা', 'সমাধি', 'দো দিশায়েঁ', 'হাতিয়ার' ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য সিনেমা। ১৯৯০-এর দশকের শেষভাগ থেকে ধর্মেন্দ্র অনেক সফল এবং প্রশংসিত চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ১৯৯৭ সালে বলিউডে অবদানের জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পান।

২০১২ সালে, তাকে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণে ভূষিত করা হয়। ধর্মেন্দ্র একজন প্রাক্তন সাংসদও। ১৯৫৪ সালে তিনি তার প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কউরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। পরে তিনি অভিনেত্রী হেমা মালিনীকে বিয়ে করেন। সানি দেওল, ববি দেওল এবং এষা তার সন্তান। অমিতাভ বচ্চনের নাতি অগস্ত্য নন্দা অভিনীত 'ইক্কিস' ছবিতে ধর্মেন্দ্রকে শেষবার অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে।

View post on Instagram