সংক্ষিপ্ত

ফের নক্ষত্রপতন বলিউডে। লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন বলিউডের বাঙালি পরিচালক প্রদীপ সরকার। তবে হাতে গোনা কয়েকটা ছবির মধ্য দিয়েই তার উজ্জ্বল উপস্থিতি সকলের মণিকোঠায় আজীবন রয়ে যাবে।

নিভে গেল 'পরিণীতা'-র প্রদীপ। আচমকা প্রয়াত হলেন বলিউডের বাঙালি পরিচালক প্রদীপ সরকার। সময়টা যেন মোটেই ভাল যাচ্ছে না টিনসেল টাউনের। একের পর এক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা একে একে চলে যাচ্ছেন ছেড়ে। মাত্র ৬৭ বছর বয়সেই চলে গেলেন ‘মর্দানি’ খ্য়াত বলিউডের পরিচালক প্রদীপ সরকার। দীর্ঘদিন ধরেই কিডনির অসুখে ভুগছিলেন পরিচালক, ডায়ালিসিসও চলছিল। তবে হঠাৎ করেই পটাশিয়ামের পরিণাম কমে যেতেই শরীর খারাপ হতে শুরু করে। ভোররাতে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষরক্ষা হয়নি। শুক্রবার ভোররাতে ৩.৩০টের নাগাদ মৃত্যু হয় পরিণীতার পরিচালকের। পরিচালকের মৃত্যুতে শোকের ছায়া পড়েছে বিনোদন জগতে।

ফের নক্ষত্রপতন বলিউডে। সকালবেলা চোখ খুলতেই প্রদীপ সরকারের মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ টিনসেল টাউন। ১৯৫৫ সালের ৩০ এপ্রিল কলকাতায় জন্ম প্রদীপ সরকারের। একাধারে লেখক ও পরিচালক নিজের কেরিয়ার শুরু করেছিলেন বিনোদ চোপড় প্রোডাকশনস-এর সঙ্গে। বিধু বিনোধ চোপড়ার সঙ্গে কাজ শুরু করেন প্রদীপ সরকার। বিজ্ঞাপন দিয়েই নিজের কর্মজীবন শুরু করেছিলেন প্রদীপ সরকার। একাধিক অ্যাজ ফিল্মও পরিচালনা করেছেন তিনি। নব্বইয়ের দশকে রাজকুমার হিরানির সঙ্গে সিনেমায় কাজ করেন প্রদীপ সরকার। ‘মুন্নাভাই এমবিবিএস’-এর সহ সম্পাদক হিসেবেও কৃতিত্ব পান প্রদীপ সরকার। ২০০৫ সালে ‘পরিণীতা’ ছবি দিয়ে বলিউডে পরিচালনার হাতেখড়ি হয় প্রদীপ সরকারের। বিদ্য়া বালন ও সইফ আলি খান অভিনীত হিট ছবি উপহার দিয়েই দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছিলেন প্রদীপ সরকার। বাঙালি পরিচালকের নিঁখুত উপস্থাপনা সকলের মন জিতে নিয়েছিল খুব তাড়াতাড়ি। তারপর ২০০৭ সালে ‘লাগা চুনরি মেঁ দাগ’, ২০১০ সালে 'লাফাঙ্গে পরিন্দে', ২০১৪ সালে ‘মর্দানি’, ২০১৮ সালে ‘হেলিকপ্টার ইলা’-র মতে একাধিক ছবিতে তিনি নিজের বেস্টটা উজাড় করে দিয়েছেন।

বাঙালি পরিচালক হয়েও মুম্বইয়ের প্রথম সারিতেই নিজেকে রেখেছিলেন প্রদীপ সরকার। একাধিক হিট ছবি দিয়ে সকলের মনে জায়গা করে নিয়েছেন প্রদীপ সরকার। তার অভিনীত ছবি ‘মর্দানি’ দিয়েই দীর্ঘ বছর পর কামব্যাক করেছিলেন রানি মুখোপাধ্যায়। ২০১৮ সালে করা শেষ ছবি হেলিকপ্টার ইলা-তে নিজের যোগ্যতা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন প্রদীপ সরকার। হাতে গোনা কয়েকটা ছবি করলেও প্রতিটা ছবিই সফল হয়েছিল প্রদীপের। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে সমান তালে গড়ে নিয়েছিলেন প্রদীপ সরকার। সিনেমার সঙ্গে সঙ্গে ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও দাপটের সঙ্গে কাজ করেছেন প্রদীপ সরকার। ‘অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ’, ‘ফরবিডেন লাভ’, ‘দৌরাঙ্গা’, ‘কোল্ড লস্যি অউর চিকেন মশালা’-র ওয়েব সিরিজ পরিচালনা করেছেন প্রদীপ সরকার। বলিউডের কন্ট্রোভার্সি কুইন কঙ্গনা রানাউতকে নিয়ে ‘নটী বিনোদিনী’-র হিন্দি বায়োপিক বানানোর কথাও চূড়ান্ত ছিল প্রদীপ সরকারের। ২০২২ সালে ঘটা করে সেই ঘোষণাও করেছিলেন প্রদীপ সরকার। ছবির প্রি-প্রোডাকশনের কাজও চলছিল, কিন্তু শেষ কাজ সম্পূর্ণ আর হল না। তার আগেই লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন প্রদীপ সরকার। তবে হাতে গোনা কয়েক ছবির মধ্য দিয়েই তার উজ্জ্বল উপস্থিতি সকলের মণিকোঠায় আজীবন রয়ে যাবে। শুক্রবার বিকেল ৪ টে নাগাদ পরিচালকের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে সান্তাক্রুজ মহাশ্মশানে।