সংক্ষিপ্ত

বাংলা গানের পাশে দাঁড়ানোর ডাক বাবুলের। এই প্রজন্ম বাকি সব করছে। যত অনীহা গানের বেলায়! তারা গান কিনতে বা শুনতে ন্যূনতম খরচ করতেও রাজি নয়।
 

উপালি মুখোপাধ্যায়, কলকাতা- প্রসেনজিৎ, জিৎ, দেব বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন। তৃতীয়ায় প্রেস ক্লাব থেকে বাংলা গানের পাশে দাঁড়ানোর ডাক দিলেন বাবুল সুপ্রিয়। দীর্ঘ গান-জীবনে এই প্রথম তিনি পুজোর গান গেয়েছেন। সৌজন্যে আশা অডিয়ো। মহালয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে উদ্বোধন হয় বাবুলের ‘জয় মা দুগ্গা’ একক গানের। এ দিন ছোট মেয়ে নয়নাকে কোলে নিয়ে সেই গান প্রকাশ্যে আনলেন। গানপ্রকাশের পাশাপাশি মনের ক্ষোভও প্রকাশ করলেন গায়ক, শাসকদলের প্রতিমন্ত্রী। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘বাংলা গানের দুরবস্থা সত্যিই ভাবাচ্ছে। সবাই ১৫০, ২০০ টাকা খরচ করে রোল-বিরিয়ানি কিনবেন। গানের পিছনে কেউ মাত্র ১৫ টাকাও খরচ করবেন না!’’

আকাশে জলভরা মেঘের আনাগোনা। ঝাঁকে ঝাঁকে বৃষ্টি যখনতখন ভিজিয়ে দিচ্ছে কলকাতাকে। এর মধ্যেই শহর উৎসবে মাতোয়ারা। উৎসাহীদের ভিড়, শেষ মুহূর্তের বিকিকিনিতে রাস্তায় রাস্তায় যানজট। এই সমস্যার মুখোমুখি বাবুলও। তাই ঘড়ির কাঁটা নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও তাঁর দেখা নেই! শেষে মেয়ের হাত ধরে প্রেস ক্লাবে পা রাখতেই স্বস্তির শ্বাস সাংবাদিকদের। মেয়েকে সামলে বাবুল ফিরে গেলেন তাঁর ছেলেবেলায়। যখন পুজোর জন্য আলাদা করে গান তৈরি হত। যে গান শুনে বাকি বাঙালির মতো তিনিও বড় হয়েছেন।

বাবুলের কথায়, ‘‘তখন রেকর্ডের এক পিঠে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। অন্য পিঠে হয়তো মান্না দে। সলিল চৌধুরী দুই খ্যাতনামী শিল্পীর জন্যই গান বাঁধছেন। সুর দিচ্ছেন। তবু তাতে কত বৈচিত্র। বাঙালিও অপেক্ষা করত পুজোর গানের জন্য। পুজোয় চাই নতুন জামা, শাড়ি, জুতোর মতোই গানও। এখন সে সবই সোনালি অতীত।’’ গায়ক হওয়ার পরে তাই স্বপ্ন দেখতেন, তিনিও পুজোর গান গাইবেন। পাড়ায় পাড়ায় পুজোর সময় তাঁর গান বাজবে। তিনি সপরিবার কান পেতে শুনবেন। কিন্তু এই প্রজন্ম বাকি সব করছে। যত অনীহা গানের বেলায়! তারা গান কিনতে বা শুনতে ন্যূনতম খরচ করতেও রাজি নয়।

বাবুল এর জন্য দায়ী করেছেন সরকারি এবং বেসরকারি এফএম চ্যানেল, টিভি চ্যানেল এবং সংবাদমাধ্যমকেও। তাঁর কথায়, ‘'আগে আকাশবাণীতে ‘অনুরোধের আসর’ হত। সেখানে নতুন, জনপ্রিয় সব ধরনের বাংলা গান বাজত। পুজোর গানও শোনানো হত। এতে বাংলা গান প্রচার পেত। এখন কোনও এফএম চ্যানেল বাংলা গান বাজায় না। ফলে, টিভির চ্যানেল কর্তৃপক্ষরাও ভাবেন, গানটি জনপ্রিয় নয় বলেই কোথাও শোনা যাচ্ছে না। তাঁরাও ছোট পর্দায় দেখান না। সংবাদমাধ্যমও নতুন শিল্পীর কাজ নিয়ে কলম ধরে না। সব মিলিয়ে বাংলা গানের নাভিশ্বাস দশা।''

তার পরেও আশা অডিয়ো পুজো গানের উদ্যোগ নিয়েছে। বাবুল তাই আন্তরিক কৃতজ্ঞ আশা অডিয়োর বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অপেক্ষা লাহিড়ির কাছে। পুজোর গানের আগে এই সংস্থাই তাঁর একক রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘কত বার ভেবেছিনু’ প্রকাশ করেছিল। বাবুলের পুজোর গান লিখেছেন শ্যামল সেনগুপ্ত। সুরে বাবুল বসু। গা.কের কথায়, ঢাকের তাল, পুজোর গন্ধ সব নিয়ে তৈরি এই গান। শুনলেই দুলে উঠতে ইচ্ছে করবে। যন্ত্রানুসঙ্গে সৈমেন কুট্টি সরকার। গানটি শোনা যাবে আশা অডিয়োর ইউটিউব চ্যানেলে।  

আরও পড়ুন- 
Durga Puja 2022 : মশাল হাতে মহিলারা মা-দুর্গাকে নিয়ে এলেন পুজো মণ্ডপে 
পুজো আড্ডা জমে যাক এই দুই পদে, স্ন্যাক্সে বানাতে পারেন চিকেন ও চিংড়ির দুই পদ 
Durga Puja 2022 : ঢাক বাজিয়ে সুরুচির ফিতে কাটলেন মমতা