সংক্ষিপ্ত
সঙ্গীতশিল্পী কেকে-র অকাল মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অনেকেরই দাবি নজরুল মঞ্চের মাত্রারিক্ত ভিড় কেকে-এর মৃত্যুকে নিশ্চিত করেছে। এমনকী অনুষ্ঠানের আয়োজক তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সংগঠনের বিরুদ্ধে উঠেছে অব্যবস্থার অভিযোগ।
দেশের কিংবদন্তি সঙ্গীত শিল্পী কেকে-র অকাল মৃত্যু মামলায় সিবিআই তদন্তের আবেদন গ্রহণ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। ইতিমধ্যেই কেকে-র মৃত্যু নিয়ে নানা বিতর্ক শুরু হয়েছে। ইথিমধ্যেই অনেকেই দাবি করেছে, নজরুলমঞ্চে লাগামছাড়া ভীড়ই কেকে-র মৃত্যুর জন্য দায়ী। এমনকী অনুষ্ঠানের আয়োজক তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সংগঠনের বিরুদ্ধে উঠেছে অব্যবস্থার অভিযোগ। তবে একথা মানতে নারাজ কলকাতার মেয়র ফিরহাদ-সহ শাসক দল। এমনকি সেদিনের অনুষ্ঠানে কেকে-র সঙ্গে এক স্টেজে কাজ করা শুভালক্ষীও। বারংবার সাফাইও দিয়েছে তৃণমূলের শীর্ষ নের্তৃত্ব। যদিও তাতে চিড়ে ভেজেনি। কেকে-র মৃত্যু তদন্তে সিবিআই-এর দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার কেকে-র অনুষ্ঠানের আগে তুমুল বিশৃঙ্খলা ছড়ায়। গুরুদাস কলেজের টিএমসিপি ইউনিট এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেই অনুষ্ঠানের আয়োজন ঘিরে বিতর্ক। অনুষ্ঠানের পর কেকে-র অকাল প্রয়াণ, বিতর্কে ঘি ঢেলেছে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এই মৃত্যুর দায় কার। অভিযোগ সেদিন, গুরুদাস কলেজের পড়ুয়ারা নয়, প্রচুর বহিরাগত পড়ুয়াও ভিড় করছিল। উল্লেখ্য, নজরুল মঞ্চের ভিতরে যতো মানুষ ধরে, মঙ্গলবার তার থেকে প্রায় ৩ গুণ বেশি দর্শক ছিল।নজরুল মঞ্চের ভিতরে ২৪৮৩ জনের জায়গা রয়েছে।এদিকে নজরুল মঞ্চের স্টাফরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার অডিটোরিয়ামের ভিতরে লাগাম ছাড়া ভিড় ছিল। গেটের বাইরে গতকাল এতটাই ভিড় হয় যে, তা সামলানোই দায় হয়ে ওঠে। বাধ্য হয়ে নজরুল মঞ্চের ৭ টা গেটই খুলে দেওয়া হয়। ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, এসি আমাদের নজরুল মঞ্চের এসি যথেষ্ট ভাল। আমরা গেলে বলি কমাতে। কিন্তু দরজা খোলা থাকলে , যখন অতো লোক একসঙ্গে ঢুকে যায়, তখন এসি-রও তো ক্ষমতার বাইরে যায়। যেটা ২৭০০-র ক্ষমতা রাখে, সেটা যদি ৭ হাজার ছাড়িয়ে যায় জনসংখ্যা, তাহলে কীকরে হবে।' মেয়র বলেছেন 'আমজনতার উচ্ছ্বাসকে বাধা দিই কীকরে।'
আরও পড়ুন, 'কেকে-কে হত্যা করা হয়েছে, অপরাধ বোধে গান স্যালুট দিয়েছে সরকার', বিস্ফোরক দিলীপ
এদিকে তীব্র অস্বস্থি, গুমোট গরমের মাঝেই একের পর এক জনপ্রিয় গান গুলি গেয়ে যান কেকে। তারই মাঝে এসি বন্ধের অভিযোগও উঠেছে। যদিও এনিয়ে ভিন্ন মতও রয়েছে। অনুষ্ঠান চলাকালীন একাধিকবার স্পট লাইট বন্ধ করার কথা বলেছিলেন। ঘেমে যান তিনি। অসুস্থ লাগছে বারবার বলে যান কেকে। জানা গিয়েছে, মাঝে গ্রিণ রুমেও যান তিনি। দর্শক এবং গায়ক দুই তরফেই তীব্র অস্বস্তির কথা জানানো হয়। যদিও এনিয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। জানা গিয়েছে, অসুস্থ লাগছে বারবার বলেছিলেন কেকে। অনুষ্ঠান শেষ হবার তারপর কলকাতার নজরুল মঞ্চ থেকে নিয়ে যাওয়া হয় গ্র্যান্ড হোটেলে।সেখানে গিয়ে অচৈতন্য হয়ে পড়েন। এরপরেই দ্রুত সিএমআরআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ।চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।কেকে- সেদিন বারবার অসুস্থ লাগছে বলা সত্ত্বেও কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না, কেন নজরুল মঞ্চ থেকে সোজা হাসপাতালে নেওয়া হল না, সেদিনের দর্শক সংখ্যাটা ঠিক কত ছিল, ওই ভীড় কতটা দায়ী, উদ্যোগক্তারা কেন কোনও পদক্ষেপ নেয়নি, আর এর পরেই কতগুলি প্রশ্ন উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন, 'রূপঙ্করদার কথায় আমি খুবই বিব্রত, কেকে-কে অকারণে ছোট করা ঠিক হয়নি', ক্ষুব্ধ ইমন