সংক্ষিপ্ত
৯২ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন প্রাক্তন অলিম্পিয়ান (Olympian) ফুটবলার বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায় (Badru Banerjee)। প্রায় এক মাস ধরে এসএসকেএমে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। মোহনবাগান (Mohun Bagan) রত্নের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ ময়দান।
অশেষে থামল প্রায় এক মাসের লড়াই। প্রয়াত হলন বাংলা তথা ভারতের প্রাক্তন ফুটবলার অলিম্পিয়ান সময় বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা ময়দানে অবশ্য তিনি বেশি পরিচিত ছিলেন বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায় নামে। কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন এই বর্ষীয়ান কিংবদন্তী ফুটবলার। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। ফুটবল জীবনে দীর্ঘ সাত বছরের বেশি সময় খেলেছিলেন নোহনবাগান ক্লাবে। দেশের জার্সি গায়ে ১৫৬ সালে মেলবোর্ন অলিম্পিক্সে ভারতকে সেমি ফাইনালে তুলেছিলেন তিনি। অবশেষে ৯২ বছর বয়সে থামল বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়েক দৌড়।
গত ২৭ জুলাই গুরুতর অসুস্থ হয়েই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়। দিনে দিনে তাঁর শারীরিক অবস্থান অবনতিই হচ্ছিল। অ্যালজাইমারস, উচ্চ রক্তচাপ এবং অ্যাজোটেমিয়া- বিভিন্ন সমস্যা ছিল তাঁর। করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন বলেও জানা গিয়েছে। ক্লাবের প্রাক্তন প্লেয়ারের শারীরিক অবস্থার খবর পেয়ে ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর চিকিৎসার জন্য গঠিত হয়েছিল মেডিক্যাল বোর্ডও। কিন্তু ২৪ দিন লড়াই করার পর অবশেষে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন এই প্রাক্তন ফুটবলার।
বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩০ সালের ৩০ জানুয়ারি। বাড়ির সকলেই ফুটবল অঅনুরাগী হওয়ায় খেলাটার প্রতি ছোট বেলা থেকেই আলাদা একটা ভালোবাসা জন্মেছিল ছোট্ট সমর বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আর সেই ভালোবাসা থেকেই শুরু ফুটবল অনুশীলন। মিলন সমিতি ক্লাবে অভিষেক হয় বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়ের। পরে বালি প্রতিভা ক্লাবে যোগ দেন তিনি। পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুটবল চালাচ্ছিলেন বদ্রু। যোগ দেন বিএনআর-এ। কলকাতা লিগে বিএনআরের হয়ে বেশ ভাল খেলেন তিনি। সেখান থেকেই তাকে দলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মোহনবাগান। ১৯৫২ থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত সাত বছর মোহনবাগান ক্লাবের হয়ে খেলেছিলেন বদ্রু। ১৯৫৮ সালে অধিনায়কও ছিলেন। সবুজ মেরুন জার্সিতে ১০টি ট্রফি জিতেছেন। মোহনবাগান দলের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়া, হংকং এবং সিঙ্গাপুরে বিদেশ সফরেও গিয়েছিলেন বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০০৯ সালে মোহনবাগান রত্ন পান
ভারতীয় দলের জার্সি গায়েও অসংখ্য কৃতিত্ব রয়েছে বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ১৯৫৬ সালে মেলবোর্ন অলিম্পিক্সে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি। জাতীয় দলের নেতৃত্বও দিয়েছেন তিনি। ১৯৫৬ সালে মেলবোর্ন অলিম্পিক্সে এই তারকা ফরোয়ার্ডের নেতৃত্বেই ভারত সেমিফাইনালে উঠেছিল। তবে যুগোস্লাভিয়ার বিরুদ্ধে হেরে থেমেছিল ভারতের স্বপ্নের দৌড়। প্লেয়ার এবং কোচ হিসেবে সন্তোষ ট্রফি জিতেছেন বাংলার হয়ে। ভারতীয় ফুটবল দলের নির্বাচকও ছিলেন তিনি। বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ কলকাতা ময়দান। বাংলা তথা ভারতীয় ফুটবলে বদ্রু বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের অবদান অনস্বীকার্য।