সংক্ষিপ্ত
আইএসএলের (ISL) ফিরতি ডার্বিতেও জয় পেল এটিকে মোহনবাগান (ATK Mohun Bagan)। এসসি ইস্টবেঙ্গলকে (SC East Bengal) হারাল ৩-১ গোলে। জুয়ান ফেরান্দোর (Juan Ferrando) দলের হয়ে হ্যাটট্রিক করলেন কিয়ান নাসিরি (Kiyan Nassiri)। তারপরই নেট দুনিয়ায় ভাইরাল বাবা জামশেদ নাসিরির সঙ্গে তার ছেলেবেলার ছবি।
বাবা জামশিদ নাসিরি (Jamshid Nassiri) দীর্ঘ বছর খেলেছেন ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal)হয়ে। লাল-হলুদ অন্ত প্রাণ ছিল তার। ভারতীয় ফুটবলে জামশিদ নাসিরির ঝুলিতে রয়েছে ১৩৯টি গোল। অপরদিকে, প্রাক্তন ইস্টবেঙ্গল তারকার ছেলে কিয়ান নাসিরির (Kiyan Nassiri)বয়স মাত্র ২১। ছেলে অবশ্য গায়ে তুলেছেন সবুজ-মেরুণ জার্সি। বাবার সাফল্যের ধারকাছে যেতে এখনও বাকি অনেকটা পথ। কিন্তু যেভাবে জীবনের প্রথম ডার্বিতেই (Derby)হ্যাটট্রিক করেছেন কিয়ান নাসিরি তা এককথায় অনবদ্য। মাত্র ৩০ মিনিটের বেশি কিছুটা সময় মাঠে ছিলেন কিয়ান। আর তাতেই আরও একবার কলকাতা ডার্বি (Kolkata Derby)জন্ম দিল আরও একট ফুটবল তারকার। আইএসএলের ফিরতি ডার্বিতে এটিকে মোহনবাগাকে (ATK Mohun Bagan)জয় এনে কিয়ান নাসিরি সবুজ-মেরুণ সমর্থকদের নয়ণের মণি হয়ে উঠেছেন।
ছোট বেলা থেকে বাবাকেই আদর্শ মেনে এসেছেন কিয়ান। জামশিদ নাসিরিকে দেখেই ফুটবল খেলা শুরু তার। ছেলের এমন সাফল্যে গর্বিত, উচ্ছ্বসিত জামশিদও। বাবার সাফল্যকে কীভাবে অনুসরণ করে নিজের ফুটবল জীবনে এগিয়ে যেতে চান কিয়ান তা পিতা-পুত্রের পুরোনো এক ছবি শেয়ার করে বোঝাতে চেয়েছেন বিখ্যাত সাংবাদিক রূপায়ণ ভট্টাচার্য। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে সুইমিং পুলে স্নান করথেন জামশিদ। আর ধারে দাঁড়িয়ে ছোট্ট কিয়ান। হাত বাড়িয়ে ছেলেকে জলে নামতে ডাকছেন জামশিদ নাসিরি। সেই ছবি শেয়ার করার পাশাপাশি ক্যাপশনে রূপায়ন ভট্টাচার্য লিখেছেন, 'আয়, খোকা আয়। বাবার কাছাকাছি সত্যিই যাওয়ার চেষ্টা শুরু করল ছেলে। ইরানিয়ান জামশিদের ভারতীয় ফুটবলে ১৩৯ গোল। পথ অনেক দূর-তবু ডার্বিতে হ্যাটট্রিক করে অনেকটা এগোলেন কিয়ান। বাবা-ছেলের বহু পুরোনো ছবিটা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে পারে। '
শনিবাসরীয় ডার্বিতে এটিকে মোহনবাগা নের সর্ব কণিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে গোল করেছেন কিয়ান নাসিরি। হ্যাটট্রিক করেও গড়েছেন একাধিক নজির। জামশিদ নাসিরির আগেই জানিয়েছিলেন তার স্বপ্ন ছেলে খেলুক ভারতীয় দলরে হয়ে। সেই কথাও নিজের আরও একটি ট্য়ুইটে তুলে ধরেছেন বিখ্যাত সাংবাদিক রূপায়ণ ভট্টাচার্য। ছেলেকে ফুটবলার তৈরি করার জন্য কতটা পরিশ্রম করেছেন জামশিদ সেই ছোঁয়াও রয়েছে ট্য়ুইটে। রূপায়ন ভট্টাচার্য ট্যুইটে লিখেছেন,'জামশিদ নাসিরি স্বপ্ন দেখতেন, ছেলে কিয়ান একদিন ভারতের হয়ে খেলবে। সেই স্বপ্ন ছাপিয়ে কলকাতা ডার্বিতে হ্যাটট্রিক জামশিদ-তনয়ের। অমিয় দেব, ভাইচুং,চিডির পাশে কিয়ান। লাইনগুলো লিখতে লিখতে মনে পড়ে কলকাতার বিভিন্ন মাঠে ছেলে নিয়ে জামশিদের ঘোরাঘুরি। যেমন ভেস পেজ বা নঈমকে দেখতাম।'
প্রসঙ্গত, স্কুলে পড়ার সময় থেকেই ফুটবল খেলা শুরু করেন কিয়ান নাসিরি। বাবাই ছিলেন তার আদর্শ। বাবার মুখে শুনে বড় হয়েছেন কলকাতা ডার্বির আবেগ, উত্তেজনার কথা। মোহনবাগান অ্য়াকাডেমিতে অনুশীলন করেছেন। স্থানীয় স্তরের ফুটবলের পর ২০১৪ সালে প্রথম বাংলার অনুর্ধ্ব ১৪ দলে সুযোগ পান কিয়ান। ৫ ম্য়াচে করেছিলেন ৬ গোল। এরপর মহামেডান স্পোর্টিংয়ের অনুর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে খেলেছেন ছোটদের আইলিগে। ২০১৭-১৮ মরসুমে ক্যালকাটা ফুটবল ক্লাবে যোগ দেন। কলকাতা লিগের নীচের ডিভিশনে খেলে দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন এবং পরের রাউন্ডে উঠতে সাহায্য করেন। এরপর মোহনবাগানের অনুর্ধ্ব ১৯ দল থেকে ডাক পান সিনিয়র দলে। তখন থেকেই রয়ে গিয়েছেন সবুজ-মেরুণ ব্রিগেডে। এটিকের সঙ্গে দল যুক্ত হওয়ার পর তিনিও দীর্ঘ মেয়াদী চুক্তি করেন। ভবিষ্যতে কিয়ান কতদূর যাবে তা সময় বলবে, কিন্তু ডার্বিতে হ্যাটট্রিক করে ইতিহাসের পাতায় নাম তুলে ফেললেন জামিশিদ নাসিরি পুত্র।