- Home
- Entertainment
- Bollywood
- গায়ের রঙ কালো, চুলের স্টাইল সেকেলে, কীভাবে বলিউডে জায়গা পাবে, প্রশ্নে জেরবার ছিলেন অজয়
গায়ের রঙ কালো, চুলের স্টাইল সেকেলে, কীভাবে বলিউডে জায়গা পাবে, প্রশ্নে জেরবার ছিলেন অজয়
বিশাল বীরু দেবগন যাঁকে গোটা বলিউড অজয় দেবগান নামেই চেনে। নিজের ফিল্ম কেরিয়ারে একশোরও বেশি সিনেমাতে কাজ করেছেন তিনি। রোম্যান্টিক, অ্যাকশন কিংবা কমেডি যে কোন অবতারে বড় পর্দায় অজয়ের এন্ট্রি মানেই দর্শকদের মনে ঝড়। তাঁর চোখের চাউনিতে রীতিমতো পাগল আট থেকে আশি। বিশেষ করে একাধিক মহিলার স্বপ্নের পুরুষ তিনি। ১৯৯১ থেকে আজ পর্যন্ত একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন দর্শকদের। জাতীয় পুরস্কার এর পাশাপাশি ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী সম্মানেও ভূষিত করেন। তবে অ্যাকশন পরিচালকের ছেলের বলিউডের সুপারস্টার হয়ে ওঠার পথটা খুব একটা সহজ ছিল না। গায়ের কালো রঙের জন্য বরাবরই অপমানিত হতে হয়েছে তাঁকে। এমনকি সেই সময় কাজলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও মেনে নিতে পারেনি অনেকেই।
- FB
- TW
- Linkdin
বীরু দেবগন প্রথম থেকেই তাঁর পুত্র অজয়কে বলিউডের নায়ক হিসেবে দেখতে চাইতেন। তাই কলেজ থেকেই তাঁর ট্রেনিং শুরু হয়ে গেছিলো। ঘোড়ার পিঠে চড়া, নাচ শেখা, অভিনয় শেখা, শরীর চর্চা করা এমনকি অ্যাকশনের কৌশল শেখা সব কিছুই চলছিলো কলেজ জীবনে।
কলেজ জীবন শেষ করে, অজয় তাঁর বাবার সঙ্গে কয়েকটি সিনেমাতে সহকারী হিসেবেও কাজ করেন। এছাড়াও সেই সময় চিত্রপরিচালক শেখর কাপুরের সঙ্গেও অজয় সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। সেই সময় তাঁর ইচ্ছে ছিল চিত্রপরিচালক হওয়ার।
এরপর ১৯৯১ সালে একদিন পরিচালক কুকু খলি বীরু দেবগনের অফিসে আসেন। অফিসের দেওয়ালে অজয়ের একটি ছবি টানানো ছিল। সেই ছবি দেখে তিনি অজয়কে তাঁর পরবর্তী সিনেমার জন্য কাস্ট করেন।
ওই সালেই মুক্তি পায় অজয়ের প্রথম সিনেমা ‘ফুল ওর কাঁটে’। শোনা যায় এই সিনেমার জন্য প্রথমে অক্ষয় কুমারকে নেওয়া হলেও পরবর্তীতে অক্ষয়কে সরিয়ে অজয়কে কাস্ট করা হয়।
অজয়ের প্রথম সিনেমার সঙ্গে একই দিনে মুক্তি পায় অনিল কাপুরের ‘লামহে’ সিনেমাটি। তবে সবাইকে অবাক করে দিয়ে, ফুল ওর কাঁটে সিনেমাটি বক্স-অফিসে ব্যাপক সফলতা পায়। প্রথমের দিকে ছবির পোস্টার দেখে যারা সমালোচনা করেছিলেন, তারাই সিনেমাহল থেকে বেরিয়েছেন হাততালি দিতে দিতে।
এই সিনেমাটির জন্য অজয় নবাগত অভিনেতা বিভাগে ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড পান। প্রথম সিনেমার ব্যবসায়িক সফলতার কারণে অজয়ের কাছে অনেক সিনেমার অফার আসতে থাকে। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৭ সালের মধ্যে অজয় ২৩ টি সিনেমায় কাজ করেন। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি সিনেমা যেমন জিগর, বিজয়পথ, সুহাগ, দিলওয়ালে, নাজায়েজ, ইশক এর মতো সিনেমাগুলি সুপারডুপার হিট হয়।
এরপর ১৯৯৮ সালে মহেশ ভাটের পরিচালনায় জখম সিনেমায় তাঁর অভিনয় দর্শকদের প্রশংসা পায়। অজয় প্রমাণ করে দেন তিনি শুধু হিরো নন একজন ভালো অভিনেতাও বটে। এই সিনেমার জন্যই অজয় শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় পুরস্কার পান।
ওই সালেই আরেকটি সিনেমা ‘প্যার তো হোনাহি থা’-এ তাঁর অভিনয় ছিল মনোমুগ্ধকর। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক হিট সিনেমা দিয়ে দর্শকদের মাতিয়ে রেখেছেন তিনি।
এর পরবর্তী সময় বেশকিছু সিনেমায় পুলিশের চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হন। তা সে সিংঘম হোক কিংবা জামিন। বলিউডে পুলিশের চরিত্র মানেই পরিচালকদের প্রথম পছন্দ অজয় দেবগন। এর পাশাপাশি মারাঠি, ভোজপুরি এবং তেলেগু সিনেমাতেও অভিনয় করেন।
বিগত ৭ বছরে বেশ কিছু সিনেমাতে কমেডি চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। এতেও তিনি সফল। অজয়ের সহকর্মীদের কথায় অজয় শুধুমাত্র স্টার নন, একজন ভালো মনের মানুষ। অভিনয়ের পাশাপাশি অনেক ছবিতে প্রযোজকের ভূমিকাও পালন করেন তিনি।
সবমিলিয়ে বলিউডের সফল স্টার ও অভিনেতা হিসেবে একেবারে প্রথম সারিতে বিরাজ করছেন অজয় দেবগন। ক্যারিয়ারের শুরুতেই সফলতার ছোঁয়া পেলেও দিকভ্রষ্ট হননি কখনো। সফলতার সেই ধারাকে আজও বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, আর এখানেই তাঁর সফলতা।