তৃতীয় টিকা ছাড় পেল ভারতে - করোনা লড়াই বদলে দিতে পারে স্পুটনিক ভি, কেন জানেন
- FB
- TW
- Linkdin
বিশ্বে প্রথম করোনা টিকা হিসাবে গণহারে উৎপাদনের অনুমোদন পেয়েছিল রাশিয়ার স্পুটনিক ভি টিকা। তখনও তার ক্লিনিকাল ট্রায়াল শেষ না হওয়ায়, টিকাটির কার্যকারিতা এবং সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তবে বর্তমানে গোটটা বিশ্বই রুশ ভ্যাকসিনকে নিরাপদ হিসাবে মেনে নিয়েছে এবং জানা গিয়েছে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এর কার্যকারিতা ৯১.৬ শতাংশ। কোভিশিল্ডের মতোই এই টিকা নেওয়া থাকলে কোভিড আক্রান্ত হলেও হাসপাতালে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে না এবং মৃত্যুর বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ সুরক্ষা দেয় এই টিকা।
শুধু তাই নয়, এই টিকা সংরক্ষণের জন্য ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রয়োজন। অর্থাৎ, সাধারণ রেফ্রিজারেটরেই এই টিকা সংরক্ষণ করা যায়। তাই, অতিরিক্ত কোল্ড-চেইন পরিকাঠামোর প্রয়োজন হবে না। এর ফলে টিকা সংরক্ষণ করা এবং এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পাঠানোর কাজটা অনেক সহজ হবে।
মোটামুটিভাবে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা'র তৈরি কোভিশিল্ড টিকার মতো করেই কাজ করে স্পুটনিক ভি টিকা। মানব দেহে অল্প পরিমাণে করোনাভাইরাস-এর একটি নিষ্ক্রিয় অংশ প্রবেশ করানো হয়। এই নিষ্ক্রিয় ভাইরাসটি শরীরে সংক্রামিত না হতে পারলেও, রক্তে ভাইরাসটি প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে করোনার প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়।
এটিও দুটি ডোজ নিতে হয়। প্রথম ডোজের ২১ দিন পর নিতে হয় দ্বিতীয় ডোজ। দুটি ডোজের মধ্যে সামান্য ফারাক রয়েছে। দুই ক্ষেত্রে দুটি ভিন্ন ভাইরাস উৎস থেকে তৈরি ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হয়। একই টিকা দু'বার ব্যবহার করার থেকে এই পদ্ধতি, প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরও বাড়িয়ে তোলে এবং দীর্ঘস্থায়ী সুরক্ষা দিতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে।
গত বছর সেপ্টেম্বরে, ভারতে স্পুটনিক ভি-এর ক্লিনিকাল ট্রায়াল পরিচালনা করতে রুশ প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ তহবিল (RDIF) এর সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল ডা. রেড্ডিস ল্যাব। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে হাতে ব্যথা, ক্লান্তি এবং হালকা জ্বরের মতো কয়েকটি উপসর্গ ছাড়া এই ভ্যাকসিনটির কোনও গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।
রাশিয়া তো বটেই, দক্ষিণ আমেরিকা, মধ্য এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশে রুশ করোনা টিকাকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ভারতের প্রতিবেশি দেশগুলির মধ্যে স্পুটনিক ভি-কে সবুজ সংকেত দিয়েছে মঙ্গোলিয়া, শ্রীলঙ্কার মতো দেশ।
কোভিড মহামারির দ্বিতীয় তরঙ্গের ধাক্কায় ভারতের অবস্থা এখন টলোমলো। প্রতি মাসে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের ১ কোটি ডোজ এবং কোভ্যাক্সিনের ত্রিশ লক্ষ ডোজ সরবরাহ করার ক্ষমতা রয়েছে। এই অবস্থায় শুধু স্পুটনিক ভি নয়, জনসন অ্য়ান্ড জনসন বা অন্যান্য যেসমস্ত টিকা রয়েছে, যেগুলি অন্যান্য দেশে অনুমোদন পেয়েছে এবং ভারতের কোনও সংস্থার উত্পাদন অংশীদারী রয়েছে, সেই টিকাগুলি জরুরী ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিতে হবে। সেইক্ষেত্রে টিকার ঘাটতি সামাল দেওয়া যেতে পারে।