সামাজিক দূরত্ব কতটা প্রতিরোধ করছে করোনাভাইরাস-কে, দেখে নেওয়া যাক বিভিন্ন দেশের ছবিটা
| Published : Apr 13 2020, 06:55 PM IST
সামাজিক দূরত্ব কতটা প্রতিরোধ করছে করোনাভাইরাস-কে, দেখে নেওয়া যাক বিভিন্ন দেশের ছবিটা
Share this Photo Gallery
- FB
- TW
- Linkdin
112
করোনা সংক্রমণে একেবারে ছাড়খাড় হওয়ার দশা ট্রাম্পের দেশের। ১৩ এপ্রিল বিকাল ৫টা পর্যন্ত ৫লক্ষ ৬০ হাজারের বেশি আক্রান্ত ও ২২,১১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তবে লেখচিত্র দেখলে পরিষ্কার, গত কয়েকদিনে নতুন আক্রান্তের সংখ্যাটা কিন্তু কমছে।
212
করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরই রয়েছে দক্ষিণ ইউরোপের দেশ স্পেন। ১৩ এপ্রিল বিকাল ৫টা পর্যন্ত এই দেশে ১লক্ষ ৬৯ হাজারের বেশি মানুষ কোভিড-১৯ আক্রান্ত ও ১৭,৪৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই দেশে ২৬ মার্চ একদিনে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৮,২৭১ জন। সেটাই এই দেশের একদিনে করোনা রোগী বাড়ার সর্বোচ্চ সংখ্যা। ১ এপ্রিল আক্রান্ত হয়েছিলেন ৮,১৯৫ জন। তারপর থেকে কিন্তু ক্রমে নতুন রোগীর সংখ্যা কমছে। ১২ এপ্রিল নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩,৮০৪ জন।
312
মার্চ মাসে বিশ্বে করোনাসংক্রমণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছিল ইতালি। ১৩ এপ্রিল বিকাল ৫টা পর্যন্ত এই দেশে করোনা আক্রান্তের মোট সংখ্যা ১,৫৬,৩৬৩ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ১৯,৮৯৯ জনের। ২১ মার্চ ইতালিতে একদিনে সর্বোচ্চ ৬.৫৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২৮ মার্চ ইতালিতে শেষবার একদিনে প্রায় ৬০০০ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেখান লকডাউন ও কড়া সামাজিক দূরত্ব রেখে এখন দিন প্রতি নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ঘোরাফেরা করছে ৪০০০-৪৫০০-এর মধ্যে।
412
ফ্রান্সে করোনাভাইরাস রীতিমতো খেল দেখিয়েছিল ৩ এপ্রিল। একদিনে ২৩,০০০-এর বেশি মানুষ করোনা পজিটিভ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছিলেন। তারপর ১১ এপ্রিল ফের ১১,০০০-এর বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত বেরিয়েছিল। গত তিনদিনে দেখা যাচ্ছে নতুন রোগীর সংখ্যাটা কমেছে এইভাবে - ৭১২০, ৪৩৮৫ এবং ২৯৩৭। ১৩ এপ্রিল বিকাল ৫টা পর্যন্ত ফ্রান্সে মোট আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যথাক্রমে - ১লক্ষ৩২ হাজারের বেশি ও ১৪,৩৯৩।
512
ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে কড়াভাবে লকডাউন প্রয়োগ এবং সবচেয়ে বেশি হারে করোনা টেস্ট করিয়েছে জার্মানি। গত ২৭ মার্চ একদিনে ৬৯৩৩ জন করোনা রোগীর সন্ধান মিলেছিল এই দেশে। তারপর থেকে কমা-বাড়া করতে করতে গত পাঁচদিনে কিন্তু, ৫৬৩৩, ৪৯৩৯, ৩৯৩৬, ৩২৮১, ২৪০২ - এইভাবে সমানে কমেছে নতুন রোগীর সংখ্যা।
612
চিন থেকেই প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণের খবর মিলেছিল। গত ১২ ফেব্রুয়ারি চিনে একদিনে ১৪,১০৮ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু, প্রথম থেকেই চিন, প্রথমে উহান শহর ও পরে হুবেই প্রদেশে লকডাউন করে দিয়েছিল। বাইরের যেসব শহরে রোগী ধরা পড়েছে, তাদের যোগাযোগ অনুসন্ধান করে সকলকে বিচ্ছিন্ন করেছিল, আর তাতেই এখন দিনপ্রতি নতুন আক্রান্তের সংখ্যাটা ঘোরাফেরা করছে ১০০ বা তার নিচে। সবমিলিয়ে ১৩ এপ্রিল বিকাল ৫টা পর্যন্ত এই দেশে মোট আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যথাক্রমে ৮২,১৬০ ও ৩,৩৪১।
712
চিনের পরই এশিয়ার যে দেশে কোভিড-১৯'এর ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, সেই ইরানে ১৩ এপ্রিল বিকাল ৫টা পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৩,৩০৩ জন, আর মৃত্যু হয়েছে ৪,৫৮৫ জনের। গত ৩১ মার্চ একদিনে ৩,১৮৬ জন রোগী আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেটাই এই দেশে একদিনে সর্বোচ্চ নথিভুক্ত হওয়া করোনা রোগীর সংখ্যা। সেই পর্যন্ত একেবারে খাড়াভাবে প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে এই দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যাটা বাড়ছিল। কিন্তু, তারপর থেকে একেবারে পাহাড়ের ঢালের মতো এই সংখ্যাটা কমেছে। ১২ এপ্রিল এই সংখ্যা এসে পৌঁছেছে ১,৬৫৭-তে।
812
ভারতে ২১ দিনের লকডাউনের শেষেও কিন্তু, দিন প্রতি নতুন করোনা রোগীর সংখ্যা এখনও বিশেষ কমেনি। ১০ এপ্রিল সর্বোচ্চ ৮৭৫ জন নতুন করোনা রোগীর সন্ধান মিলেছিল। গত দুদিনে সংখ্যাটা অবশ্য নিচের দিকে নামতে দেখা যাচ্ছে। অনেকে বলছেন, শুধু লকডাউনে কাজ হবে না, একইসঙ্গে বিপুল পরিমাণে পরীক্ষার প্রয়োজন। তবে অনেকে বলছেন, ভারতে এটা করোনার একেবারে পিক টাইম, বা বাড়াবাড়ির চরম সময়। সামনের দুই সপ্তাহে লকডাউনের সুফলটা স্পষ্ট হবে ভারতেও।
912
ভারতের মতোই অবস্থা ব্রিটেনেও। সেখানও লকডাউন চলছে। কিন্তু করোনাভাইরাসের চরম সময়ে নতুন রোগীর সংখ্যায় উল্লেখযোগ্য লাগাম নেই। ১৩ এপ্রিল বিকাল ৫টা পর্যন্ত বরিস জনসনের দেশে করোনা আক্রান্ত ৮৪,২৭৯ আর মৃত ১০,৬১২। ১০ এপ্রিল তারিখে এই দেশে ৮,৬৮১ জন নতুন রোগী পাওযা গিয়েছিল, যা এই দেশে একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা। পরের দুদিনে নতুন রোগীর সংখ্যাটা ৫০০০-এর সামান্য উপরে ঘোরাফেরা করেছে।
1012
পাকিস্তানেও এখন চলছে লকডাউন। তবে তাবলিগি জামাত-এর বার্ষিক সমাবেশের মতো বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব রাখার বিধি না মানার কারণে এখনও পাকিস্তানে উল্লেখযোগ্যভাবে লকডাউনের প্রভাবে করোনার বাড়াবাড়ি কমতে দেখা যায়নি।
1112
ভারতের আরেক প্রতিবেশি দেশ বাংলাদেশে ১৩ এপ্রিল বিকাল ৫টা পর্যন্ত ৮০৩ জন করোনা রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, যারমধ্যে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশেও, ভারত ও ব্রিটেনের মতো এখন করোনার পিক পয়েন্ট। সামনের কয়েক সপ্তাহে এই দেশেও লকডাউনের ফল মিলবে বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা।
1212
তবে এখানে আরেকটা কথাও উল্লেখ করতে হবে, দিন প্রতি রোগীর এই সংখ্য়াটা কিন্তু, প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা নয়, প্রতিটি দেশ প্রতিদিন কতজন করোগীকে পরীক্ষা করে চিহ্নিত করতে পারছে তার সংখ্যা। যেমন ভারতে পরীক্ষার পরিধি বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। বিশ্বে ১৩ এপ্রিল বিকাল ৫টা পর্যন্ত মোট কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ১,৮৬৬,৬৫৪। এরমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১,১৫,২৬৯ জনের। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪,৩৪,০৫৪ জন।