- Home
- Sports
- Cricket
- সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কেরিয়ারে সেরা ১০ দাদাগিরি মুহূর্ত, মহারাজের ৫০তম জন্মদিনে ফিরে দেখা আরও একবার
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কেরিয়ারে সেরা ১০ দাদাগিরি মুহূর্ত, মহারাজের ৫০তম জন্মদিনে ফিরে দেখা আরও একবার
- FB
- TW
- Linkdin
ওয়ান ডে অভিষেক ব্যর্থ, টেস্ট অভিষেক প্রত্য়াবর্তন-
১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়াতে ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল সৌরভের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৩ রান করেছিলেন। এর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে থাকেন চার বছর। ১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ডে প্রত্যাবর্তন। লর্ডস, নটিংহ্যামে প্রথম দুই টেস্টে সেঞ্চুরির পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি সৌরভকে।
স্টিভ ওয়া এবং টস-
২০০১ এর অস্ট্রেলিয়া বিরুদ্ধে টেস্ট সিরেজে স্টিভ ওয়-কে টসের জন্য অপেক্ষা করিয়েছিলেন। এই ঘটনা এখনও লোকের মুখে মুখে ফেরে। শুরু থেকে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আগ্রাসী মনোভাব পোষণ করে রেখেছিলেন তিনি যা অজিদের ফোকাস সরিয়ে দেয়। অজিদের এমন আগ্রাসী ভঙ্গিতে জবাব দেওয়ার ব্যাটন বিনা দ্বিধায় নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন তিনি।
লর্ডসে জার্সি উড়িয়ে ফ্লিনটফকে জবাব-
লর্ডসের ব্যালকনির ওই চিত্র এখনও আইকনিক সব ভারতীয়দের কাছে। এর আগে ওয়াংখেড়ে তে ম্যাচ জিতে জার্সি ঘুরিয়ে গিয়েছিলেন ফ্লিনটফ। তাই ন্যাটওয়েস্ট জেতা মাত্র জামা খুলে ঘুরিয়ে ফ্লিনটফকে তার ভাষাতেই জবাব দিয়েছিলেন সকলের আইকন দাদা। তার আগে ম্যাচেও করেছিলেন আগ্রাসী ৬০ টি রান।...................
অধিনায়কত্ব নিয়ে টানাপোড়েনের মাঝেও শতরান-
টেস্ট ক্রিকেটে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে নিজের ১২ তম শতরান করার আগে অবধি তৎকালীন ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের অনেকে তাকে অধিনায়কত্ব থেকে ছেঁটে ফেলার প্ল্যান করছিলেন। পরিস্থিতি এমন হয়েছিল যে সৌরভের ব্যাটিং পারফরম্যান্স-এর ওপর নির্ভর করছিল অধিনায়ক হিসেবে তার ভবিষ্যৎ। শোনা যায় সবই জানতেন সৌরভ। আর সেই চাপ মাথায় নিয়েই করেন আগ্রাসী শতরান।
গ্রেগ চ্যাপেল কাণ্ড ও মহারাজকীয় প্রত্যাবর্তন-
গ্রেগ চ্যাপেলের সঙ্গে সমস্যা, দল থেকে বাদ পড়া। অনেকেই ভেবেছিল সেখানেই শেষ সৌরভের কেরিয়ার। কিন্তু সৌরভের কামব্যাকের কাহিনি চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে ক্রিকেট ইতিহাসে।
বিজ্ঞাপনী বিতর্ক -
তখন ভাবতীয় দল থেকে বাইরে রয়েছেন সৌরভ। ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরম্যান্স করছেন ভালোই। এই অবস্থায় তাকে নিয়ে একটি বিজ্ঞাপন তৈরি করেন একটি সংস্থা। যেখানে সৌরভ কে বলতে শোনা যায় খুব তাড়াতাড়ি ভারতীয় দলে কামব্যাক করবেন সেই কথা। অনেক বিরূপ মন্তব্য হয়েছিল ব্যাপারটিকে নিয়ে। কিন্তু সৌরভ সত্যিই দলে ফিরে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন মুখের সাথে তার পারফরম্যান্স ও কথা বলে।
মাঠের বাইরে ব্রড-
তখন সৌরভ দলে ফিরে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন। রাহুল দ্রাবিড়ের নেতৃত্বে ইংল্যান্ডের ঘরে তাদের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজ খেলছে ভারত। একটি ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিশাল ৩১৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভালো শুরু করেছেন সচিন-সৌরভ ওপেনিং জুটি। এই সময় সৌরভ কে উত্তেজিত করতে কিছু মন্তব্য করেন ব্রড। পাল্টা জবাব দেন সৌরভ। আম্পায়ারদের মধ্যস্ততায় তখন ঝামেলা মেটে। কিন্তু ব্রডের তারপরে সৌরভকে করা বল উড়ে গিয়ে পড়ে গ্যালারিতে। মুখে নয়, ব্যাটেও সমান আগ্রাসী বাংলার মহারাজ।
ইয়োহানা উপাখ্যান-
২০০৫ সালে ভারতের বনাম পাকিস্তান একটি ম্যাচে ঘটে এই ঘটনা। দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে থাকা ইয়োহানার শারীরিক শুশ্রূষা করার জন্য ম্যাচ বন্ধ থাকে খানিকক্ষণ। সেই কাজে বড্ড বেশি সময় নেওয়ায় বিরক্ত সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, ধোনির কাঁধে হাত রেখে ইয়োহানা কে সময়ের হিসেব রাখতে বলেন এবং এরপর স্লো ওভার রেটের জন্য যদি তাকে জবাবদিহি করতে হয়, তবে ম্যাচ রেফারিকে ইয়োহানার কাছেই পাঠাবেন বলে উঠেন সৌরভ। আম্পায়াররা মাঝে এসে ঝামেলা মেটায়।.
ওয়ার্নকে জবাব-
২০০৮ এ আইপিএল চলাকালীন সৌরভের বিরুদ্ধে ক্রিকেটের স্পিরিট ভঙ্গের অভিযোগ আনেন অজি লেগ-স্পিনার ওয়ার্ন। জয়পুরে রাজস্থান রয়েলস বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স ম্যাচে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে দেরিতে ওপেন করতে নামার অভিযোগ আনেন ওয়ার্ন, যা তার মতে ক্রিকেটীয় স্পিরিটের বিরুদ্ধে। জবাবে সৌরভ বলেন ওয়ার্নের কেরিয়ার খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে অজি স্পিনার নিজেই অনেক বার ক্রিকেটের স্পিরিট বিরোধী কাজ করেছেন। তার এই নিয়ে মন্তব্য হাস্যকর এবং ভবিষ্যতে ওয়ার্নের এই ব্যাপারে মুখ খোলাই উচিত নয় বলে জানান সৌরভ।
আইপিএলে সৌরভের দাদাগিরি-
আইপিএলের শুরুতে কেকেআরের অধিনায়ক ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু প্রথম দুই মরসুমে সাফল্য আসেনি। তার উপর অজি কোচ জন বুকাননের সঙ্গে সৌরভের সমস্যা, শাহরুখ খানের সঙ্গে দূরত্ব ব কারণেই প্রথমে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া, তারপর দল থেকে বাদ দেওয়া হয় সৌরভকে। তারপর পুণে ওয়ারিয়ার্সে যোগ দেন সৌরভ। তারপর ইডেনে পুণে বনাম কলকাতা ম্যাচ দেখেছিল ক্রিকেটের নন্দনকাননকে দুভাগে ভাগ হয়ে যেতে। সৌরভ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন বাংলার ক্রিকেট প্রেমিরা এখনও সৌরভ অন্ত প্রাণ।
বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট-
যে জাতীয় দল থেকে একদিন তাকে অন্যায়ভাবে বাদ দেওয়া হয়েছিল, সেই বিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০১৯ সাল থেকে নিজের কাজ শুরু করেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের শেষ কথা তিনি। দেশের ক্রিকেটের উন্নতির স্বার্থে এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন তার দাদাগিরি।