ধোনির টিম ইন্ডিয়ার বিশ্ব জয়ের ১০ বছর, ছবিতে ফিরে দেখা সেই ঐতিহাসিক দিন
- FB
- TW
- Linkdin
দেখতে দেখতে ১০ বছর পার। ২০১১ সালের ২ এপ্রিল দ্বিতীয় বারের জন্য ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিতেছিল মেন ইন ব্লুরা। আজও সেই স্মৃতি টাটকা ১৩০ কোটি দেশবাসীর মনে। ফাইনালে প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ১৯৮৩-র পর বিশ্ব জয়ের স্বাজ পায় ধোনির টিম ইন্ডিয়া।
সেমিফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দী পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে ধোনি ব্রিগেড। অপরদিকে ২০০৭-এর পর ফের একবার বিশ্বকাপ ফাইনালে ওঠে শ্রীলঙ্কা। সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে পৌছায় দ্বীপরাষ্ট্র। স্বপ্নের ফাইনালের অপেক্ষায় ছিল দুই প্রতিবেশী দেশ।
মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনাল। ২ এপ্রিল ২০১১ গোটা ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম কানায় কানায় পরিপূর্ণ ছিল। ফাইনালে টসে জেতেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক কুমারা সঙ্গাকারা। টসে জিতে ব্যটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা।
ব্যটিংয়ের শুরুতেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। খেলার রাশ ধরেন মহেলা জয়াবর্ধনে ও কুমারা সঙ্গাকারা। ফাইনানে দূরন্ত শতরান করেন মহেলা জয়বর্ধনে। তাকে সঙ্গত দেন সঙ্গাকারা, সমরাভিরা, কুলাসেকারা ও পেরেরা। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৭৪ রান করে শ্রীলঙ্কা দল।
ভারতীয় বোলারদের অনবদ্য বোলিংয়ে ২৭৪ রানের মধ্যে শ্রীলঙ্কাকে আটকে রাখতে পারা যায়। ভারতের হয়ে ২ টি করে উইকেট পান জাহির খান ও যুবরাজ সিং। একটি উইকেট পান হরভজন সিং।
২৭৫ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই সচিন তেন্ডুলকর ও বীরেন্দ্র সেওয়াগের উইকেট হারায় ভারতীয় দল। দুটি উইকেট নেয় মালিঙ্গা। ১৮ রান করে আউট হন সচিন ও খাতাই খুলতে পারেননি সেওয়াগ।
দুই উইকেট হারানোর পর ভারতীয় ইনিংসের রাশ ধরেন বিরাট কোহলি ও গম্ভীর। যদিও ৩৫ রানে দিলশানের বলে আউট হয়ে প্যাভেলিয়নে ফেরত যান বিরাট কোহলি। অপরদিক থেকে রক সলিড হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন গৌতম গম্ভীর।
তারপর ক্রিজে নামেন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। অনবদ্য ব্যাটিং করেন গম্ভীর ও ধোনি জুটি। চতুর্থ উইকেটে ১০৯ রানের পার্টনারশিপ করেন তারা। দলের ২২৩ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৯৭ রানে আউট হন গোতম গম্ভীর।
অপরদিকে অর্ধশতরান করেন অধিনায়ক ধোনি। লঙ্কান বোলারেদের একের পর এক আক্রমণ করে তাদের সমস্ত প্ল্যান ভেস্তে দেন ভারত অধিনায়ক। ৯১ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি।
অপরদিকে ছোট হলেও ২১ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেন যুবরাজ সিং। গোটা সিরিজে দূরন্ত পারফরমেন্সের ২০১১ বিশ্বকাপের সেরা প্লেয়ারের শিরোপাও জেতেন যুবরাজ সিং।
খেলায় যখন ১১ বলে ৪ রান বাকি, তখনই ছয় মেরে ম্যাচ শেষ করেন ধোনি। একইসঙ্গে ১৯৮৩ সালের পর ফের একবার বিশ্ব ক্রিকেটে শেরার শিরোপা দখলে নেয় টিম ইন্ডিয়া। দলের প্লেয়ারদের পাশাপাশি উৎসবে মেতে ওঠে গোটা ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম।
ক্রিকেট জীবনের শুরু থেকে সচিন তেন্ডুলকরের স্বপ্ন ছিল বিশ্বকাপ জেতার। অবশেষে ২০১১ সালে সেই স্বপ্ন পূরণ হয় মাস্টার ব্লাস্টারের। খেলা শেষে সচিন কাধে চাপিয়ে গোটা স্টেডিয়াম ঘোরেন তার সতীর্থরা।
ভারতের বিশ্ব জয়ের সঙ্গে সঙ্গে গোটা দেশ উৎসবে মেতে ওঠে। আট থেকে আশি সকলের কছে ২০১১ সালের ২ এপ্রিল রাত ছিল স্বপ্নের রাত। নাচে- গানে , আনন্দে পুরো রাত চলে বিশ্ব জয়ের সেলিব্রেশন।
উৎসবের মাঝেই আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ভারতীয় দলের হাতে তুলে দেওয়া হয় আইসিসি ওয়ার্ল্ড কাপ ২০১১ -এর ট্রফি। সেই স্মৃতি চিরকাল অমিলন থাকবে ২০১১ -এর বিশ্বকাপ দলের সদস্য থেকে ১৩০ কোটি ভারতীয়দের স্মৃতির মণিকোঠায়।
বিশ্ব জয়ের পর দেশ জুড়ে রাতভর চলে সেলিব্রেশন। আজ ১০ বছর পরও সকাল থেকে শুভেচ্ছার জোয়ারে ভাসছেন বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্যরা। একাধিক জায়গায় চলছে সেলিব্রেশন। আরও এক বিশ্ব জয়ের অপেক্ষা করছে দেশবাসী।