আজ বিস্মৃতির আড়ালে আইপিএলের এই তারকারা - কেউ তাঁদের নামও নেয় না, দেখুন
- FB
- TW
- Linkdin
২০১৪ সালের আইপিএল-এ পার্পল ক্যাপ জিতেছিলেন ফাস্ট বোলার মোহিত শর্মা (Mohit Sharma)। আর আজ, তিনি আইপিএল-এর নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি গুজরাট টাইটানস (Gujarat Titans) দলে যোগ দিয়েছেন নেট বোলার হিসাবে! ২০১৪ সালে চেন্নাই সুপার কিংসের (Chennai Super Kings) হয়ে তিনি ১৬ ম্যাচে ১৯.৬৫ গড়ে ২৩ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হয়েছিলেন। তবে, মোহিত তারপর আর কিছু করতে পারেননি। ২০১৫ সালে হরিয়ানার (Haryana) ক্রিকেটারটি গিয়েছিলেন কিংস ইলেভেন পঞ্জাবে (Kings XI Punjab)। ২০১৯-এ সিএসকে-তে ফিরেছিলেন। তারপর থেকে আর আইপিএল খেলার সুযোগ পাননি। সব মিলিয়ে ৩৩ বছরের মোহিত শর্মার ৮৬ টি আইপিএল ম্যাচে ৯২ টি উইকেট রয়েছে।
২০০৮ সালে আইপিএলের উদ্বোধনী মরসুমে সিএসকে-এর হয়ে তাঁর পারফরম্যান্স দিয়ে সবাইকে মুগ্ধ করেছিলেন পঞ্জাবের (Punjab) পেসার মনপ্রীত গনি (Manpreet Gani)। যা, তাঁকে জাতীয় দলেও সুযোগ করে দিয়েছিল। কিন্তু, সেই সুযোগ তিনি কাজে লাগাতে পারেননি। পরের কয়েক আইপিএল মরসুমে, তিনি ডেকান চার্জার্স, কিংস ইলেভেন পঞ্জাব এবং মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে খেললেও, ২০০৮ সালে সিএসকের হয়ে তাঁর পারফরম্যান্সের আর পুনরাবৃত্তি ঘটেনি। ধীরে ধীরে তিনি ছিটকে গিয়েছেন আইপিএল বৃত্ত থেকে।
ডানহাতি হায়দ্রাবাদি ব্যাটার তিরুমালাসেট্টি সুমন'কে (Tirumalacetti Suman) একসময় বলা হত ডেকান চার্জার্সের রান মেশিন। ২০০৯ সালের আইপিএল-এ করেছিলেন ২৩৭ রান, ২০১০-এ ৩০৭ রান। পরের মরসুমে তাঁকে দলে নিয়েছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। কিন্তু,ওই মরসুম থেকেই তাঁর খেলা পড়তে শুরু করেছিল। ৭ ইনিংসে মাত্র ৬৫ রান পেয়েছিলেন। তারপর থেকে তাঁর পারফরম্যান্স গ্রাফও নেমেছে, তিনিও হারিয়ে গিয়েছেন আইপিএল, এমনকী ক্রিকেট জগৎ থেকেই।
২০০৯ আইপিএল মরসুমে, উত্তরপ্রদেশের এক ছোট্ট গ্রাম থেকে, বাঁহাতি ফাস্ট বোলার কামরান খান'কে (Kamran Khan) তুলে এনেছিল রাজস্থান রয়্যালস। কিংবদন্তি শেন ওয়ার্ন-সহ সবাইকে তাঁর গতি দিয়ে মুগ্ধ করেছিলেন কামরান। নিয়মিত ১৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা বা তার বেশি গতিতে বল করতে পারতেন তিনি। ২০১১ সালে রাইজিং পুনে সুপার জায়ান্টস দলে পাড়ি দিয়েছিলেন। কিন্তু, যে ক্রিকেটীয় প্রতিভার জন্য রাতারাতি তিনি শিরোনামে এসেছিলেন, সেই প্রতিভার প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি। ধীরে ধীরে ক্রিকেট থেকে দূরে চলে গিয়েছেন তিনি।
গোয়া থেকে আইপিএল খেলা প্রথম ক্রিকেটার ছিলেন স্বপ্নিল আসনোদকার (Swapnil Asnodkar)। প্রথম বছরের আইপিএল-এ যখন অনেকেই বুঝে পাচ্ছেন না কীভাবে ব্যাট করা উচিত, সেই সময় এই মারকুটে ওপেনার তথা উইকেট রক্ষক, রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে তা করে দেখিয়েছিলেন। ১৩৩.৪৭ স্ট্রাইক রেটে ৩১১ রান করেছিলেন। কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে তাঁর আইপিএল অভিষেক ম্যাচেই, ৩৪ বলে ৬০ রান করেছিলেন। বর্তমানে গোয়ার হয়ে রঞ্জি থেলার পাশাপাশি গোয়ার অনূর্ধ্ব-২৩ ক্রিকেটারদের কোচিং করান তিনি।
২০১১ সালে পঞ্জাব কিংস ইলেভেনের হয়ে স্বপ্নের আইপিএল অভিষেক হয়েছিল পল ভালথাট্টির (Paul Valthaty)। মুম্বই-এর এই অলরাউন্ডারকে কিংস ইলেভেন নিয়েছিল ব্যাকআপ হিসাবে। কিন্তু, চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে ওপেন করার সুযোগ পেয়েই ৬৩ বলে অপরাজিত ১২০ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েছিলেন। পরের খেলায় ৪৭ বলে ৭৫ রান এবং ২৯ রানে ৪ উইকেট, তার পরের ম্যাচে মাত্র ৩১ বলে ৪৬ রানের ইনিংস খেলেছিন। ২০১২ এবং ২০১৩ দুই মরসুমেই কিংস ইলেভেন পঞ্জাব তাঁকে ধরে রেখেছিল, কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন এবং ধীরে ধীরে আইপিএ গ্রহ থেকে হারিয়ে যান।
আইপিএল-এর প্রথম তিন মরসুমে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরে ছিলেন বাংলার উইকেটরক্ষক-ব্যাটার শ্রীবৎস গোস্বামী (Shreevats Goswami)। ২০০৮ সালে, প্রথম আইপিএল-এর শুরুর বছরেই তিনি ছিলেন টুর্নামেন্টের সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়। এরপর তিনি কলকাতা নাইট রাইডার্স, রাজস্থান রয়্যালস এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলেছেন। তবে, কোনও দলেই নিয়মিত প্রথম একাদশে জায়গা করে নিতে পরেননি। এবারের নিলামে অংশ নিয়ে অবিক্রিত থেকে গিয়েছেন শ্রীবৎস।
২০০৮ সালে, কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে আইপিএল-এ অভিষেক ঘটেছিল ইকবাল আবদুল্লার (Iqbal Abdullah)। ২০১১-র আইপিএল দুর্দান্ত বোলিং পারফরম্যান্সের জোরে সকলের নজর কেড়েছিলেন মুম্বইয়ের এই বাঁহাতি স্পিনার, টুর্নামেন্টের সেরা উদীয়মান খেলোয়াড় হয়েছিলেন। পরের বছর, কেকেআর-এর হয়ে আইপিএল জয়ীও হয়েছিলেন। ২০১৪ সালে তাঁকে দলে নিয়েছিল রাজস্থান রয়্যালস। তবে, খারাপ পারফরম্যান্সের জন্য, ২০১৮ সালে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। নিলামে তাঁকে কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি বাছাই করেনি। তিনিও হারিয়ে যান আইপিএল গ্রহ থেকে। আইপিএল-এ ৪৯টি ম্যাচ খেলে ৪০ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি।
২০০৮ সালে, আইপিএল-এ দক্ষিণ আফ্রিকার পিচ থেকে সিএসকের হয়ে দারুণ স্পিন আদায় করে নিয়েছিলেন শাদাব জাকাতি (Shadab Jakati)। ২০০৯ সালে টুর্নামেন্টের মাঝামাঝি পর্যায়ে দলের উত্থানের পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। পরপর দুই ম্যাচে ৪টি করে উইকেট নিয়েছিলেন। ২০১০ মরসুমে ১৩ উইকেট নিয়ে সিএসকে-র প্রথমবার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হওয়াতে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন। ২০১৪ সালে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর তাঁকে কিনেছিল, তবে সেখানে বিশেষ খেলার সুযোগ পাননি। ২০১৭ সালে তাঁকে শেষবার আইপিএল-এ দেখা গিয়েছিল, গুজরাট লায়ন্সের হয়ে খেলতে। তারপর থেকে তাঁকে কেউ কেনেনি। ২০১৯ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। এখন তিনি লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগের একটি দলের ক্রিকেট অপারেশন্স ডিরেক্টর পদে আছেন।
২০১২ সালের আইপিএল ফাইনালে চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে ৪৮ বলে ৮৯ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেছিলেন হরিয়ানার উইকেটরক্ষক ব্যাটার মনবিন্দর সিং বিসলা (Manvinder Bisla)। চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল কেকেআর। ২০১১ সালে নাইট শিবিরে যুক্ত হয়েছিলেন তিনি। পরের পছর, ব্র্যাড হ্যাডিন না থাকায় প্রথম ৫ ম্যাচে উইকেটরক্ষক হিসাবে সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। জ্যাক ক্যালিসের সঙ্গে দুর্দান্ত ওপেনিং জুটি গড়ে উঠেছিল তাঁর। ওই বছর তিনি ৭ ম্যাচে ২১৩ রান করেছিলেন। স্টাম্পের পিছনে নিয়েছিলেন ৬টি ক্যাচ, করেছিলেন ২টি স্টাম্প। তবে, শুরুর সেই ফর্ম ধরে রাখতে পারেননি। ২০১৫ সালে তাঁকে কিনেছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। সেখানে বিশেষ খেলার সুযোগ পাননি। ধীরে ধীরে মুছে গিয়েছেন আইপিএল থেকে।