- Home
- Entertainment
- Bengali Cinema
- 'ভারতের মাইকেল জ্যাকসন' কীভাবে পেলেন এই নাম, জানুন প্রভুদেবার জীবনের গোপন কাহিনি
'ভারতের মাইকেল জ্যাকসন' কীভাবে পেলেন এই নাম, জানুন প্রভুদেবার জীবনের গোপন কাহিনি
- FB
- TW
- Linkdin
নৃত্যুশিল্পী হিসাবে প্রভুদেবাকে গোটা ভারতবর্ষ চিনলেও জীবনে কার থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে প্রভুদেবার এই নাচের দুনিয়ায় প্রবেশ এ কথা প্রায় অনেকেরই অজানা। প্রভুদেবার বাবা মুগুর সুন্দর ও আদতে ছিলেন দক্ষিণী সিনেমার এক জনপ্রিয় কোরিওগ্রাফার। মূলত তাঁর থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে নাচের জগতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন প্রভুদেবা।
কেরিয়ারের শুরুতে ১৯৮৬ সালে তামিল ছবি মৌনা রাগামে "পানিভিঝুম ইরাভু" গানে বাঁশি বাদক হিসাবে একটি দৃশ্যে দেখা যায়। এরপর ১৯৮৮ সালের ওপর একটি তামিল ছবি অগ্নি নাটচাথিরামের একটি গানে ব্যাকগ্রাউন্ড ড্যান্সার হিসাবে দেখা মেলে তাঁর। অর্থাৎ বাবা কোরিওগ্রাফার হলেও নিজের কেরিয়ারের স্ট্রাগল নিজেই করেছিলেন প্রভুদেবা।
কোরিওগ্রাফার হিসাবে প্রভুদেবা প্রথম আত্মপ্রকাশ করেন বিখ্যাত ১৯৮৯ সালে দক্ষিণী অভিনেতা কমল হাসানের ছবি ভেত্রি ভিঝাতে। এরপর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয় নি তাঁকে। ক্রমশ নিজের নৃত্যশৈলীর ডানাটিকে বিস্তার করেছেন প্রভুদেবা। ৩৬ বছরে প্রায় ১০০টির বেশি সিনেমায় কাজ করেছেন প্রভুদেবা।
নাচের দুনিয়াতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেও শুধু সেখানেই থেমে থাকেন নি প্রভুদেবা। ১৯৯৪ সালে পরিচালক পাভিতরনের ছবি ইন্দুতে প্রধান ভূমিকায় দেখা যায় প্রভুদেবাকে। তবে অভিনেতা প্রভুদেবা চূড়ান্তভাবে সফলতা পায় ১৯৯৪ সালেই মুক্তিপ্রাপ্ত ওপর আর একটি ছবি কাধলান থেকে। এই ছবির দুটি 'মুক্কালা মুকাবেলা' এবং 'উর্বশী উর্বশী' প্রভুদেবার কোরিওগ্রাফি এবং এ আর রহমনের মিউজিক মন ছুঁয়েছিল গোটা দেশের।
এরপর থেকে একজন সফল অভিনেতা হিসাবে একাধিক ছবিতে অভিনেতা হিসাবে দেখা গিয়েছে প্রভুদেবাকে। তবে ২০০০ সালের শুরুর দিক থেকে বেশ কিছু ছোটো বাজেটের কমেডি ছবিতে কাজ করতে শুরু করেন। এরপর তামিলের পাশাপাশি অন্যান্য ইন্ড্রাস্ট্রিতে অভিনয় করার সিদ্ধান্ত নেন প্রভুদেবা। অবশেষে ২০০২ সালে বলিউডে প্রবেশ, অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে অগ্নি বর্ষা ছবিতে দেখা যায় তাঁকে।
বলিউডে শুধু অভিনয় একাধিক হিন্দি ছবিতে কোরিওগ্রাফার হিসাবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছেছেন প্রভুদেবা। সলমন খান থেকে অক্ষয় কুমার, শাহিদ কাপুর, অজয় দেবগন একাধিক বলিউডের অভিনেতার সঙ্গে কাজ করেছেন প্রভুদেবা।
একটি সাক্ষাৎকারে প্রভুদেবা জানিয়েছিলেন '১৯৯৯ সালে মাইকেল জ্যাকসন যখন মুম্বই এসেছিলেন প্রভুদেবাকে তখন মেক তাঁর সম্মানে যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল সেখানে আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছিল। সেখানে অর্গানাইসারদের তরফে আমাকে ওঁনার হোটেল রুমে ডেকে পাঠানো হয়। এরপর ওঁনার নিরাপত্তারক্ষীরা ওঁনাকে আমার আমায় বিষয় জানালে উনি আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন যেটা আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত ছিল। প্রথম জীবনের আদর্শের মুখোমুখি হওয়াটা চিরকাল আমার জীবনের অবিস্মরণীয় একটি মুহূর্ত।'
শৈশবে বাবার থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নাচের জগতে প্রবেশ করলে ও প্রভুদেবার জীবনের আদর্শ ছিলেন মাইকেল জ্যাকসন এবং এ কথা একটি সাক্ষাৎকারে এসে নিজে স্বীকার ও করেছেন তিনি। মাইকেল জ্যাকসনের নাচের ধরণকে অনুকরণ করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছেন প্রভুদেবা। দ্রুত নিজেকে ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্রেক ডান্সারে পরিণত করতে সক্ষম ও হন প্রভুদেবা। এরপর থেকেই তাঁকে 'ভারতের মাইকেল জ্যাকসন' রূপে অভিহিত কৰা হয়।
প্রভুদেবাকে যেমন ভারতের ভারতের মাইকেল জ্যাকসন বলা হয়, তেমনই হৃত্বিক রোশন হলেন বলিউডের গ্রিক গড। বর্তমান প্রজন্মে বলিউডের অন্যতম সেরা একজন নৃত্যশিল্পী তিনি। ২০০৪ সালে 'লক্ষ' ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেন প্রভুদেবা ও হৃত্বিক রোশন। এই ছবিতে কাজের জন্য সেরা কোরিওগ্রাফার হিসাবে ফিল্ম পুরস্কার ও পেয়েছিলেন প্রভুদেবা।
নাচের দুনিয়ায় বলিউডের অন্যতম সেরা সংযোজন বলা হয় রেমো ডি'সুজা এবং প্রভুদেবার জুড়িকে। ২০১৩ সালে এবিসিডি ছবিতে একসঙ্গে ত্রয়ী হন ভারতের তিনজন খ্যাতনামা কোরিওগ্রাফার রেমো ডি'সুজা, গণেশ আচারিয়া এবং প্রভুদেবা। এরপর এবিসিডি ২ এবং স্ট্রিট ডান্সার ছবিতে ও একসঙ্গে কাজ করেছেন রেমো ডি'সুজা এবং প্রভুদেবা।