রোজকার পরিচিত জনপ্রিয় এই খাবারগুলি কিন্তু ভারতীয় নয়, জানেন কি
খাবার নিয়ে বাঙালির কোনও কথা হবে না। কারণ বাঙালির মতো ভোজনরসিক আর কেউ নয়। দেশ থেকে বিদেশ সব ধরনের খাবার শুধু খেতেই নয়। রান্নাও করতে পারেন বহু বাঙালি। আর ভারতীয় রান্নার খ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই একটা না একটা ভারতীয় রেস্তরাঁ ঠিক পাওয়া যাবে। ভারতীয় খাবারের স্বাদ, গন্ধ, মশলা এসবের সঙ্গে অন্য কোনও মহাদেশের তুলনা চলে না। তা সে যে রান্নাই হোক না কেন। সব রান্নাই একেবারে সেরা হয়ে ওঠে। কোনও তুলনাই চলে না। বাটার চিকেন, পালক পনির, সবজির তরকারি, মাংসের শিঙাড়া, ভিন্ডালু এই খাবারগুলি বিদেশেও খুব জনপ্রিয়। অবশ্য এই খাবারগুলি ভারতীয় হিসেবে গোটা বিশ্বে পরিচিত হলেও এগুলি আদতে ভারতীয় খাবার নয়। শুনে নিশ্চয়ই অবাক লাগছে, তাহলে আসল বিষয়টি জেনে নিন।
| Published : Mar 20 2022, 09:18 PM IST
- FB
- TW
- Linkdin
এমন অনেক খাবার রয়েছে যার গন্ধ (Food Smell) পেলেই জিভ দিয়ে জল পড়তে শুরু করে। সকালের ব্রেকফাস্ট (Breakfast) থেকে শুরু করে ডিনার সব ক্ষেত্রেই এই পদগুলি অত্যন্ত জনপ্রিয়। তবে অনেকেই জানেন না এই সব খাবার একেবারেই ভারতীয় নয় (Indian Dish)। আসলে এগুলি ভারতে সহজলভ্য বলে ভারতীয়রা সেগুলিকে নিজের বলে আপন করে নিয়েছে।
এই সব খাবারগুলির রন্ধন প্রণালী, উপকরণের দিক থেকে বিচার করেই কিন্তু খাবারগুলিকে খাঁটি ভারতীয় বলা যায় না। কারণ বেশিরভাগ খাবারগুলিই অন্য কোথাও উদ্ভূত, পরবর্তীতে তা রূপান্তরিত হয়ে ভারতের তকমা গায়ে লাগিয়ে নিয়েছে। আর এই ধরনের খাবারের তালিকা দেখতে আপনিও হয়তো অবাক হয়ে যাবেন। কারণ এই ধরনের খাবার যা হয়তো এতদিন রেস্তরাঁয় ভারতীয় খাবারের তালিকায় দেখেছেন, এখন তা জানতে পারছেন আদতে বিদেশি।
ভারতের খুবই জনপ্রিয় এই পদ। বাঙালির মধ্যে খুব বেশি জনপ্রিয় না হলেও অবাঙালিরা এই পদ খুব খায়। মূলত উত্তর ভারতে সর্বাধিক জনপ্রিয় হল এই খাবার। তবে বাঙালি অবশ্য রাজমা (Rajma) রুটি দিয়ে খেতেই বেশি পছন্দ করে। আর রাজমাতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। এই ডাল শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী। প্রোটিনের পাশাপাশি এই ডালের মধ্যে থাকে খনিজ, ভিটামিনও। তবে এই ডাল ভারতে সর্বাধিক ব্যবহার হলেও তার উৎপত্তিস্থল কিন্তু পশ্চিমের দেশে। সে দেশে ব্রেকফাস্টে খুবই জনপ্রিয় ছিল এই ডাল। এখনও ইংলিশ ব্রেকফাস্টে দেওয়া হয় এই রাজমা ডাল সিদ্ধ। সেখানে অবশ্য এটি কিডনি বিনস নামে পরিচিত।
এই খাবারও ভারতে খুবই প্রচলিত। সাধারণত এটি গোয়ানিজ খাবার হিসেবে পরিচিত। তবে এই খাবারের উৎপত্তিস্থল কিন্তু পোর্তুগিজ। আমেরিকায় ভিন্ডালু (Vindaloo) পরিবেশন করা হয় আলু দিয়ে। সেই থেকে আমাদের দেশেও তা আলু সহকারে পরিবেশন করা হয়। এভাবেই ভারতীয়রা এই খাবারকে আপন করে নিয়েছেন।
নাম শুনলেই জিভে জল চলে আসে। ভারতীয়রা এই খাবার খুবই পছন্দ করেন। অনেকে বাড়িতেও এই রান্না করে থাকেন। আবার রেস্তরাঁয় গিয়েও অনেকেই এই খাবার খান। তবে ভারতের পাশাপাশি বিদেশেও এই পদ সমান জনপ্রিয়। প্রথম টিক্কা মশালা বানানো হয়েছিল গ্লাসগোতে। সেখান থেকেই কিন্তু তা ছড়িয়ে পড়ে ভারতে। এরপর ভারতীয়রা সেই পদকে নিজেদের মতো করে বানিয়ে আপন করে নিয়েছে। আর রেস্তরাঁতেও তা ইন্ডিয়ান ডিশে জায়গা করে নিয়েছে।
এটি যেমন সব জায়গাতেই পাওয়া যায়। বিকেলের স্ন্যাকস হিসেবে এই খাবারের জুরি মেলা ভার। তবে এই খাবারের জন্ম মধ্যপ্রাচ্যে। আর সেখান থেকেই আমাদের দেশে আলু, মটরশুঁটি, বাদাম, ফুলকপির পুরভরা শিঙাড়ার প্রচলন হয়েছে। তবে এখন বিদেশেও কিন্তু এই মাংসের শিঙাড়ার বেশ নামডাক রয়েছে।
ফিশ-কারি, এগ-কারি, চিকেন-কারি নাম শুনলেই জিভে জল আসে। চোখের সামনে ভেসে ওঠে পদগুলি। আর তার সঙ্গে ভাত বা রুটি সবই খাওয়া যায়। এই পদ আমাদের দেশে বেশ জনপ্রিয়। অবশ্য কারির উৎপত্তিস্থলও আমাদের দেশ নয়। বিভিন্ন দেশেই রয়েছে কারির প্রচলন। কিন্তু ভারতীয় মশলার গুণে তার স্বাদ বেড়েছে অনেকটাই। আর সেই কারণে ভারতীয়রাও তা আপন করে নিয়েছে।
শীতকালের অতি জনপ্রিয় একটি খাবার। আসলে শীতকালে পালং শাক সবথেকে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। সেই কারণে এই পদ মূলত তখনই বেশি রান্না করা হয়। অবশ্য রেস্তরাঁয় এই পদ সারাবছরই পাওয়া যায়। তবে জানেন কি, ক্রিম দেওয়া এই পনিরের জন্মস্থান কিন্তু আমেরিকা। পরবর্তীতে সেখান থেকেই তা জনপ্রিয়তা পায় ভারতের সর্বত্র। এমনকী বিদেশেও। আর এখন পনির প্রতি ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছে।
আসলে রোজকার চেনা খাবারগুলি যখন অচেনা হয়ে যায় তখন কেমন একটা লাগে। ঠিক একইভাবে এই পদগুলি বহু বাঙালিরই মন জুড়ে রয়েছে। আর সেখানে যদি জানা যায় সেগুলির উৎপত্তিস্থল ভারত নয়, তাহলে একটু হলেও অবাক হতেই হয়। সে যাই হোক না কেন খাবারের জন্ম কোথায় তা নিয়ে বেশি চিন্তা ভাবনা না করে সেগুলি খেয়ে নেওয়াই ভালো!