- Home
- India News
- অক্সফোর্ড নিয়ে আশঙ্কার মাঝেই আশার আলো কোভ্যাক্সিনে, প্রাণীদের শরীরে দারুণ কাজ করছে 'মেড ইন ইন্ডিয়া' ভ্যাকসিন
অক্সফোর্ড নিয়ে আশঙ্কার মাঝেই আশার আলো কোভ্যাক্সিনে, প্রাণীদের শরীরে দারুণ কাজ করছে 'মেড ইন ইন্ডিয়া' ভ্যাকসিন
- FB
- TW
- Linkdin
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাব্য করোনাভাইরাস টিকা নিয়ে ভারতীয়রা আশায় বুক বেঁধেছিলেন। বিশেষত টিকা উৎপাদনের সঙ্গে সেরাম ইনস্টিটিউট যুক্ত থাকায় অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন নিয়ে প্রত্যাশা আরও বেড়েছিল।
কিন্তু এক স্বেচ্ছাসেবক অসুস্থ হয়ে পড়ার পর সেই অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল স্থগিত রাখা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে দোলাচল তৈরি হয়েছে এই ভ্যাকসিনকে ঘিরে।
তবে অক্সফোর্ডের টিকা ট্রায়াল স্থগিত থাকলেও ভারতের নিজস্ব দুটি ‘ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট’-এর ট্রায়াল জোরকদমে চলছে।ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল কাউন্সিলের (আইসিএমআর) সঙ্গে যৌথভাবে 'কোভ্যাক্সিন' তৈরি করেছে ভারত বায়োটেক। ইতিমধ্যে এটির দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালও শুরু হয়েছে।
অক্সফোর্ডের টিকা নিয়ে উদ্বেগের মাঝেই ভাল খবর দিল ভারত বায়োটেক। মানুষের শরীরে করোনার টিকা কোভ্যাক্সিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পাশাপাশি প্রাণীদের শরীরেও টিকার সেফটি ট্রায়াল করছিল ভারত বায়োটেক। সেই ট্রায়ালের রিপোর্ট বেশ ইতিবাচক বলেই জানিয়েছে সংস্থাটি।
ট্যুইট করে ভারত বায়োটেকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোভ্যাক্সিন টিকা প্রাণীদের শরীরেও প্রয়োগ করা হয়েছিল। দেখা গেছে, এই টিকার প্রভাব প্রাণীদের শরীরেও বেশ ইতিবাচক। অ্যান্টিবডি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। টিকার ‘অ্যানিমাল ট্রায়াল’-এর সাফল্য এর সুরক্ষা ও কার্যকারীতায় নতুন মাত্রা আনবে।
আমেরিকার মোডার্না বায়োটেকও তাদের এমআরএনএ টিকা প্রাণীদের শরীরে ইনজেক্ট করেছিল। তবে সেই ট্রায়ালে খুব বেশি সাফল্য মেলেনি। ভারত বায়োটেক তাদের BBV152 ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট তথা কোভ্যাক্সিন টিকার ইঞ্জেকশন দেয় রেসাস প্রজাতির বাঁদরদের।
ভাইরোলজিস্টরা জানিয়েছেন, ২০টি বাঁদরকে চারটি দলে ভাগ করে টিকার ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। একটি দলকে প্ল্যাসেবো সাপোর্টে রাখা হয়, অন্য তিনটি দলকে তিনটি ভিন্ন ডোজে ০ থেকে ১৪ দিনের ব্যবধানে টিকা দেওয়া হয়। টিকার ডোজ দেওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যে ইমিউনোগ্লোবিউলিন অ্যান্ডিবডি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায় বাঁদরদের শরীরে।
ট্রায়ালের রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাঁদরদের শরীরে ভাইরাল স্ট্রেন ঢুকিয়ে সংক্রামিত করে টিকার প্রয়োগের ফলাফল লক্ষ্য করা হয়। টিকার ডোজ দেওয়ার পরে নির্দিষ্ট দিনের ব্যবধানে তাদের নাক, মুখ, গলা ও লিভার থেকে নেওয়া নমুনা পরীক্ষা করে ভাইরাল স্ট্রেনের কোনও চিহ্ন মেলেনি। কাজেই টিকা শরীরে ঢুকে ভাইরাস প্রতিরোধী সুরক্ষা বলয় তৈরি করেছে।
আরও একটা ইতিবাচক দিক হল ভ্যাকসিনের ডোজে কোনওরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি বাঁদরদের শরীরে। শ্বাসযন্ত্রের কোনও রোগ বা নিউমোনিয়া ধরা পড়েনি কারও মধ্যেই। এটি ট্রায়ালের সবচেয়ে ভাল দিক বলেই জানিয়েছে ভারত বায়োটেক।
আইসিএমআর ও পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি (এনআইভি) থেকে সার্স-কভ-২ ভাইরাল স্ট্রেন নিয়ে ল্যাবোরেটরিতে তার স্ক্রিনিং করে ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট BBV152 বানিয়েছে ভারত বায়োটেক। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, করোনার ভাইরাল স্ট্রেন নিষ্ক্রিয় করে ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট ডিজাইন করা হয়েছে।
গত বুধবার থেকে থেকে রোহতকের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউটে (পিজিআই) কোভ্যাস্কিনেপ দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হয়েছে মানব শরীরে। ১২ থেকে ৬৫ বছর বয়সীদের মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল হচ্ছে।
দেশের ১২টি হাসপাতালে কোভ্যাক্সিনের কন্ট্রোলড ট্রায়াল চলছে। এই হাসপাতালগুলির মধ্যে রয়েছে, দিল্লির এইমস, পাটনার এইমস, বিশাখাপত্তনমের কিং জর্জ হাসপাতাল, রোহতকের পিজিআইএমএস, কর্নাটকের জীবন রেখা হাসপাতাল, নাগপুরের গিল্লুরকর মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল, গোরক্ষপুরের রানা হাসপাতাল, চেন্নাইয়ের এসআরএম, হায়দরাবাদের নিজাম ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স, ভুবণেশ্বরের কলিঙ্গ হাসপাতাল, কানপুরের প্রখর ও গোয়ার একটি হাসপাতাল।
ভারতের বাজারে কোন ভ্যাকসিনটি সবার আগে আসবে তা নিয়ে জোর জল্পনা সর্বত্র। আগে সিরাম ইন্সটিটিউট জানিয়েছিল সব ঠিক থাকলে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন আসবে নভেম্বরে। কিন্তু হঠাৎ অক্সফোর্রে ভ্যাকসিনেয়র ট্রায়াল বন্ধ হওয়ায় তা এখন বিশ বাও জলে। ফলে বর্তমানে লড়াইয়ে রয়েছে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন এবং জাইডাস ক্যাডিলার জাইকভ ডি।