- Home
- India News
- চিন-পাকিস্তানকে শিক্ষা দিতে অক্টোবরেই সেনার হাতে অত্যাধুনিক একে-২০৩ রাইফেল, মিনিটে ছুটবে ৬০০ গুলি
চিন-পাকিস্তানকে শিক্ষা দিতে অক্টোবরেই সেনার হাতে অত্যাধুনিক একে-২০৩ রাইফেল, মিনিটে ছুটবে ৬০০ গুলি
দীর্ঘদিন ধরে দর কষাকষির জেরে আটকে থাকার পর অবশেষে দিনের আলো দেখতে চলেছে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত হওয়া কালাশনিকভ-চুক্তি। সব ঠিকঠাক চললে আগামী অক্টোবর মাস থেকেই সেনার হাতে অত্যাধুনিক "একে-২০৩" অ্যাসল্ট রাইফেল চলে আসতে পারে।
- FB
- TW
- Linkdin
ভারতীয় সেনাবাহিনীর অস্ত্র ভাণ্ডার বাড়াতে রাশিয়ার সঙ্গে ঐতিহাসিক চুক্তি করতে চলেছে ভারত। ৬ লাখ উন্নত মানের একে-২০৩ রাইফেল তৈরির চুক্তি হতে চলেছে দু’দেশের মধ্যে। প্রথমে ২০ হাজার রাইফেল কেনা হবে রাশিয়া থেকে। তারপর মেক ইন ইন্ডিয়া প্রজেক্টের আওতায় দু’দেশ যৌথভাবে তৈরি করবে এই রাইফেল, এমনটাই জানা গিয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী অক্টোবরে ভারত-রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যোগ দিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভারতে আসার কথা। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও পুতিন দুজনে মিলে ভারতের জন্য নির্মিত প্রথম একে-২০৩ রাইফেলের উদ্বোধন করতে পারেন। তার আগে সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ রুশ সফরে যাচ্ছেন। সেখানে কয়েকটি সুক্ষ্ম বিষয়বস্তুকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হবে।
দীর্ঘদিন ধরেই ভারতীয় সেনায়, বিশেষ করে ইনফ্যান্ট্রিতে ভাল গুণমানের রাইফেলের আকাল রয়েছে। সেনার তরফে কেন্দ্রের কাছে দীর্ঘদিন ধরে রাইফেল কেনার বিষয়ে দাবি পেশ করা হয়েছে। একাধিক রিপোর্টের মাধ্যমে বলা হয়েছে, অবিলম্বে ফৌজের জন্য অত্যাধুনিক অস্ত্র তুলে দেওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতীয় সেনা দীর্ঘদিন ধরে চাইছে, দেশে তৈরি ইনস্যাস রাইফেলকে সরিয়ে এমন অত্যাধুনিক রাইফেল কিনতে যা আগামী বেশ কয়েক বছর ভারতীয় বাহিনীর প্রধান অস্ত্র হবে একইসঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণ খরচও কম হবে।
সূত্রের খবর, এই বছরের শেষেই একে-২০৩ রাইফেলের উৎপাদন শুরু হবে। এই রাইফেল বিদেশে রফতানি করারও সুযোগ থাকবে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রথমে রাশিয়া থেকে ২০ হাজার একে-২০৩ রাইফেল কেনা হবে। প্রতিটি রাইফেলের দাম ৮০ হাজার টাকা। আগামী দিনে এই রাইফেলই ভারতীয় সেনাবাহিনীর জওয়ানদের হাতে দেখা যাবে।
জানা গিয়েছে, বাকি রাইফেলগুলি ভারতে উৎপাদন করাব হবে। ইন্দো-রাশিয়া রাইফেলস প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি কোম্পানির আওতায় হবে এই উৎপাদন। এই কোম্পানিটি ভারতের ইন্ডিয়ান অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড এবং রাশিয়ার কালাশনিকভ কনসার্ন ও রসোবরোনেক্সপোর্ট কোম্পানি মিলে তৈরি হয়েছে। ইন্ডিয়ান অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের ৫০.৫ শতাংশ, কালাশনিকভ কনসার্নের ৪২ শতাংশ ও রসোবরোনেক্সপোর্টের ৭.৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এভাবে ভারতে তৈরি করলে তার খরচ আমদানির থেকে কম হবে বলেই জানা গিয়েছে।
২০১৮ সালে এই চুক্তির কথা প্রথম জানানো হয়। কিন্তু দু’দেশের কোম্পানিদের মধ্যে দাম নিয়ে বহুদিন ধরে কথাবার্তা চলতে থাকায় তা বাস্তবায়নে কিছুটা দেরি হল। এই সমস্যা যাতে বেশিদিন না চলে তার জন্য একটি কমিটিও তৈরি করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সেই কমিটিই চুক্তি নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা চালায়।
এই একে-২০৩ রাইফেল কালাশনিকভেরই তৈরি আরও অত্যাধুনিক অস্ত্র। একে সিরিজের মধ্যে বর্তমানে সবথেকে শক্তিশালী এই রাইফেল।
কে-৪৭ এর মতোই এই রাইফেলের চেম্বারেও ৭.৬২ x ৩৯ মিলিমিটার অ্যামুনেশন ফায়ার করার ক্ষমতা রয়েছে।
কালাশনিকভের নিজস্ব ওয়েবসাইট অনুযায়ী, প্রতি মিনিটে ওই রাইফেল থেকে ৬০০ রাউন্ড গুলি চালানো সম্ভব। ৭.৬২ বোরের ৩০ রাউন্ড গুলির ম্যাগাজিন। গুলি ছাড়া ওই রাইফেলের ওজন ৪ কিলোগ্রাম ১০০ গ্রাম। দৈর্ঘ ৯০০ মিলিমিটার।
কালাশনিকভের ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়েছে, এই রাইফেলের বাট অন্যান্য আধুনিক রাইফেলের মতই ভাঁজ করে বা লম্বা দু’ভাবেই ব্যাবহার করা যায়। যুক্ত করা হয়েছে ‘এরগোনোমিক’ পিস্তল ট্রিগার, যার ফলে ব্যবহারকারীর স্বাচ্ছন্দ্য আরও বাড়বে। সেই সঙ্গে ব্যবহারকারীর উপরের এবং নীচের হাতের গার্ড বা রক্ষাকারী অংশের সঙ্গে ‘পিকাটিনি’ রেল সংযুক্ত করার সুযোগ। সোজা ভাষায় এই রাইফেলের সঙ্গে দু’টি স্ট্যান্ড যুক্ত করা যায়, যাতে টেলিস্কোপ থেকে শুরু করে অন্য সাহায্যকারী যন্ত্র ওই রাইফেলের সঙ্গে যুক্ত করা যায়।
এদিকে একে-২০৩ রাইফেলের পাশাপাশি ভারতীয় সেনা আমেরিকা থেকে এসআইজি ৭১৬ রাইফেলও আনছে। ইতিমধ্যেই ৭২ হাজার রাইফেল আমদানি হয়ে গিয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে আরও ৭২ হাজার রাইফেলের বরাত দিয়েছে সেনা। তারমধ্যেই এবার একে-২০৩ রাইফেলের উৎপাদন শুরু হচ্ছে। ফলে সেনার অস্ত্র ভাণ্ডার আরও অনেক শক্তিশালী হবে বলেই মনে হচ্ছে।