১৩০০ বছরের পুরনো মার্তন্ড মন্দির - মনে করালো কাশ্মীর ফাইলস, জেনে নিন এর ইতিহাস
- FB
- TW
- Linkdin
সূর্য মন্দিরের কথা বললে, প্রথমেই সকলের মনে আসবে কোনারকের সূর্য মন্দিরের (Sun Temple in Konark) কথা। তবে, একসময় আমাদের দেশে তার থেকেও বিখ্য়াত ছিল, জম্মু ও কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) অনন্তনাগে অবস্থিত মার্তন্ড মন্দির (Martand Sun Temple at Anantnag )। অনেকে বলেন, প্রায় ১৩০০ বছরের পুরনো এই মন্দিরটিই ভারতের প্রাচীনতম সূর্য মন্দির (Oldest Sun Temple in India)।
কারকোট রাজবংশের (Karkot Dynasty) তৃতীয় রাজা ললিতাদিত্য মুক্তপীড় (Lalitaditya Muktapeed) এই মন্দিরের নির্মাণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন সূর্যদেবতার উপাসক। সূর্যের উপাসনার জন্যই এই মন্দির নির্মাণ করা হয়েছিল।
সূর্য দেবতার আরেক নাম মার্তন্ড্য। তার থেকেই এই মন্দির মার্তন্ড মন্দির নামে পরিচিত। কাশ্মীরের বিখ্যাত কবি কলহন রচিত 'রাজতরঙ্গিনী' (Rajatarangini by Kalhan) গ্রন্থেও এই মন্দিরের উল্লেখ পাওয়া যায়।
কথিত আছে, পনোরোশো শতাব্দীতে কাশ্মীরের মুসলিম শাসক (Muslim ruler of Kashmir) সিকন্দর শাহ মিরি (Sikander Shah Miri) এই মন্দিরটি ভেঙে ফেলার জন্য অসংখ্য চেষ্টা করেছিলেন। জানা যায়, খুব সহজে মন্দিরটি ধ্বংস করতে পারেননি মিরি। বছরের পর বছর ধরে ইসলামি শাসকদের ধারাবাহিক হামলায় মন্দিরটি একেবারে জরাজীর্ণ অবস্থায় পৌঁছায়।
তবে তারপরও, মন্দিরের মূল গর্ভগৃহটি অক্ষত থেকে গিয়েছে। এখনও অনন্তনাগে, ওই এলাকার হিন্দু ঐতিহ্য ও ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে মাত্যন্ড্য মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ। শোনা যায়, ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের (Archaeological Survey of India) পক্ষ থেকে মন্দিরটি পুনরুদ্ধারের অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে, এখনও পর্যন্ত কিছু করা যায়নি।
এই মন্দির নির্মাণে বর্গাকার চুনাপাথর ব্যবহার করা হয়েছিল। অনন্তনাগের মার্তন্ড্য সূর্য মন্দির'কে কাশ্মীরি হিন্দু স্থাপত্যশৈলীর (Kashmiri Hindu Architecture) একটি চমৎকার নিদর্শন বলে মনে করা হয়। ধ্বংস হওয়া মন্দিরের দেওয়ালে এখনও খোদাই করা অবস্থায় দেখা যায় ভগবান বিষ্ণু, নদীর দেবী গঙ্গা ও যমুনা এবং স্বয়ং সূর্যদেবকে।
এই মন্দিরটির অন্যতম বিশেষত্ব হল এর অবস্থান। মার্তন্ড্য মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল একটি মালভূমির চূড়ায়। বলা হয়, একসময় মন্দির চত্ত্বর থেকে পুরো কাশ্মীর উপত্যকা পরিষ্কার দেখা যেত।
প্রত্নতাত্ত্বিকরা বলেন, এক সময় এই মন্দির প্রাঙ্গনে ৮৪ টি স্তম্ভ ছিল। আর মন্দিরের মূল প্ল্যাটফর্মটি ছিল ২২০ ফুট লম্বা এবং ১৪২ ফুট চওড়া। কথিত আছে, সেই সময় দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এই মন্দির দর্শনের জন্য আসতেন।