- Home
- World News
- International News
- Afghanistan Crisis: গৃহযুদ্ধ এড়াতে এই সেরা ৮ আফগান নেতাকে হাতে রাখতে হবে তালিবানদের
Afghanistan Crisis: গৃহযুদ্ধ এড়াতে এই সেরা ৮ আফগান নেতাকে হাতে রাখতে হবে তালিবানদের
মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর দ্রুততার সঙ্গে তালিবানরা আফগানিস্তানের দখল নিয়েছিল। কিন্তু আশরাফ ঘানি সরকারের পতনের পর ১০ দিনেরও বেশি সময় কেটে গেছে। এখনও স্বাভাবিক হয়নি আফগানিস্তানের পরিস্থিতি। রাজধানী কাবুলের পাশাপাশি গোটা দেশজুডডেই নৈরাজ্য। এই অবস্থায় দেশে স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনতে আর গৃহযুদ্ধ এড়াতে উজবেক, তাজিক আর হাজারা প্রতিনিধিদের সঙ্গে হাতমিলিয়ে চলতে হবে। আগেরবার অর্থাৎ ১৯৯০ সালে তালিবানরা যখন ক্ষমতা দখল করেছিল তখন কিন্তু তার বিপরীত স্রোতেই হেঁটেছিল তারা।
| Published : Aug 26 2021, 06:12 PM IST
- FB
- TW
- Linkdin
গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ার, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী
৭১ বছর বয়সী প্রাক্তন আফগান প্রধানমন্ত্রী। হিজব-ই-ইসলামি নামে একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান। দীর্ঘ দিন আফগান রাজনীতিতে সক্রিয়। মার্কিন-সোভিয়েক কোল্ড ওয়ারে মার্কিন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মিজাহিদিন যোদ্ধাদের একটি অংশ তার রাজনৈতিক দলের সক্রিয় কর্মী। হেকমতিয়ার গত ২৫ বছর ধরে তালিবানদের বন্ধু হিসেবে পরিচিত।
১১ সেপ্টেম্বর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার পর মার্কিন সেনারা আফগানিস্তানে এলে বিরোধিতা করেন হেকমতিয়ার। জোটের সেনাদের ওপর আত্মঘাতী হামলার সমর্থক ছিলেন তিনি। সেই সময় ওসামা বিন লাদেনের আল-কায়দার সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা ছিল। বর্তমানে তালিবানদের সঙ্গে বিশেষ যোগাযোগ রয়েছে তাঁর।
হামিদ কারজাই প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি
বর্তমান আফগানিস্তানের রাজনৈতিতে আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হামিদ কারজাই। সম্প্রতি হাক্কানি নেটওয়ার্কের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গেও আলোচনায় বসেছিলেন তিনি। তাঁরই উত্তরসুরি ছিলেন আশরাফ ঘানি। তালিবানরা কাবুল দখল করে নেওয়ার পরেই তিনি দেশ ছেড়ে চম্পট দেন।
কারজাইয়ের সঙ্গে ভারতের একটি গভীর সম্পর্ক ছিল। ভারতে পড়াশুনা করেছিলেন তিনি। ড্রোন ব্যবহার নিয়ে মার্কিন সেনাক বিধিনিধিষ মানতে রাজি ছিলেন না তিনি। ২০১৪ সাল থেকে আমেরিকার সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে তার। বর্তমানে তালিবানদের ঘনিষ্ট হিসেবেই পরিচিত ৬৩ বছরের কারজাই।
আতা মহম্মদ নূর, প্রাদেশিক নেতা
৫৭ বছরের আতা আফগান রাজনীতিতে যোদ্ধা হিসেবেই পরিচিত। সোভিয়েতের ঘোর বিরোধী ছিলেন। বর্তমানে তালিবানদের শত্রু শিবিরে রয়েছেন তিনি। একটা সময় উত্তরের বালখ প্রদেশের গর্ভনর ছিলেন। এটাই আফগানিস্তানের সমৃদ্ধশালী অঞ্চল ছিল। ২০১৮ সালে ঘানি তাঁকে সরিয়ে দেন। মাজার-ই-শরিফে তালিবানদের পা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে নূর তাঁর বন্ধু দুস্তমকে নিয়ে পালিয়ে যান।
চলতি বছরের শুরুতেই তালিবানরা শক্তিপ্রদর্শন করতে শুরু করেছিল। সেই সময়ই নূর আফগান জাতিকে জেগে ওঠার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন আফগান সেনাবাহিনীকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করার একটি চক্রান্ত হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন তিনি। একটি সূত্র বলছে বর্তমানে তিনি উডবেকিস্তানে রয়েছেন।
মহম্মদ খালিল, হাজারা নেতা
তালিবানরা মূলত পাস্তুন সম্প্রদায়ের। হাজারাদের সঙ্গে তাদের বিরোধ দীর্ঘদিনের। সেখানে ৭১ বছরের করিম থখিলিল একজন হাজারা নেতা। তালিবান বিরোধী হলেও তালিবানদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করেছিলেন। ১৫ অগাস্ট কাবুলের পতনের পর তিনি পাকিস্তানে আশ্রয় নেন। সেখান থেকেই ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, তিনি আশা করেন তালিবান শীর্ষ নেতৃত্ব রাজনৈতিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবে। আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ এখন তালিবানদের হাতে।
আমরুল্লাহ সালেহ, প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি
নিজেকে প্রাক্তন বলতে রাজি নন ৪৮ বছরের সালেহ। দাবি করেছিলেন ঘানির অবর্তমানে তিনি দেশের রাষ্ট্রপতি। একটা সময় গোয়েন্দা প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। তালিবানদের সঙ্গে পাকযোগের কথা তিনিই প্রকাশ্যে এনেছেন। ঘানি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। তালিবানদের টার্গেটও ছিলেন তিনি। একটি সূত্র বলছে তাজিক নেতা আহমদ মাসুদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন তিনিয পঞ্জশিরে আফগানিস্তান ন্যাশানাল ফ্রন্টের সাফল্যের পিছনে তাঁর হাত রয়েছে। প্রথম থেকেই পঞ্জশিরে তালিবান বিরোধকে সমর্থন করেছেন তিনি।
আহমেদ মাসুদ, বিদ্রোহী নেতা
বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে তালিবানদের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন নিহত তাজিক নেতা মুজাহিদিন কমান্ডার আহমেদ শাহ মাসুদের পুত্র আহমেদ মাসুদ। পঞ্জশির তালিবাম বিরোধী যুদ্ধে তিনি নেতা। ৩৭ বছরের মাসুদ বিদেশ থেকে কতটা সাহায্য পান তার ওপরেই নির্ভর করছে তাঁর সাফল্য। তবে পঞ্জশির এবারও তালিবানদের কাছে অপ্রতিরদ্ধ তা আবারও প্রমাণ করেছেন মাসুদ। পঞ্জশিরে শান্তিচুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে তালিবানরা।
আব্দুল রশিদ দস্তুম, প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি
৬৭ বছরের দস্তুম আফগান রাজনীতিতে যুদ্ধবাজ হিসেবেই পরিচিত। তালিবান বিরোধী উজবেক নেতা। যাঁকে উত্তর জোটের সঙ্গে দীর্ঘদিন সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে দেখা গেছে। দুস্তম ঘানি সরকারের সমর্থক ছিলেন। ২০১৩ থেকে প্রায় ৬ বছর রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে গণহত্যা, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিকে ধর্ষণের আদেশ দেওয়ার মত ভয়ঙ্কর অভিযোগ উঠলেও তিনি তা মানতে রাজি নন। অনেকেই বলেন বিচার এড়াতে স্বাস্থ্যের কারণ দেখিয়ে দীর্ঘদিন তুরস্কে ছিলেন তিনি।
তালিবানরা যখন ক্ষমতা দখল করছিল সেই সময় তিনি দেশে ফিরে আসেন। কিন্তু এখন তাঁর ঠিকানা অজানা। অনেকেই মনে করেছিল মাজার-ই-শরিফ শহরটি তিনি তালিবানদের হাত থেকে রক্ষা করবেন। তালিবান বিরোধী হলেও এই এলাকা মোটেও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি।
আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ, সিইও
চিকিৎসক থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা ৬০ বছরের আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ আফগান রাজনীতিতে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। একটা সময় উত্তর জোটের নেতা আহমেদ শার মাসুদের উপদেষ্টা ছিলেন। রাশিয়ার আর তালিবানদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ যুদ্ধের কৃতিত্ব রয়েছে মাসুদের পরিবারের। তাজিক জাতির প্রতিনিধি, আমেরিকার সঙ্গে তালিবানদের শান্তি আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।