- Home
- World News
- International News
- বিশ্ব দমনে চিনের নোংরা খেলা 'পণবন্দী কূটনীতি', পর্দা ফাঁস করলেন জাস্টিন ট্রুডো, দেখুন
বিশ্ব দমনে চিনের নোংরা খেলা 'পণবন্দী কূটনীতি', পর্দা ফাঁস করলেন জাস্টিন ট্রুডো, দেখুন
- FB
- TW
- Linkdin
তলানিতে চিন-কানাডা সম্পর্ক
আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন করে বেজিং সম্প্রতি তা য আবার কোনও কওনও তেন প্রকারে তিক্ত পুনরুদ্ধার কানাডা এবং চীন মধ্যে চলমান দ্বিধাহীন সম্পর্ককে আরও নীচে নামিয়ে দিয়েছে। চীনের সাথে সম্পর্ক সীমাবদ্ধ করে কানাডা হংকংয়ের সাথে প্রত্যর্পণ চুক্তি স্থগিত করেছে। কানাডার সিদ্ধান্তটি হংকং-এর উপর নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন চাপিয়েছে। যার একমাত্র লক্ষ্য হল হংকং-এর স্বাধীনতার দাবিকে হত্য়া করা। গত শুক্রবার এর বিরোধিতা করে কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছেন কানাডার প্রদানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। যার জেরে একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে চিন-কানাডা সম্পর্ক।
ট্রুডোর পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ চিন
চিনের জারি করা নয়া আইনের প্রেক্ষিতে কানাডা হংকং-এ 'অবিলম্বে সংবেদনশীল সামরিক জিনিস রফতানির অনুমতি সাময়িকভাবে প্রত্যাহার'-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেইসঙ্গে বলা হয়েছে, হংকংয়ে কানাডা থেকে যে সমস্ত সংবেদনশীল পণ্য রফতানি করা হবে, তা সবই হবে চিনের মূল ভূখণ্ডে ব্যবহারের জন্য। কানাডার বিদেশমন্ত্রী ওইদিনই চিনের নতুন আইনটিকে হংকং-এর স্বাধীনতার জন্য 'একটি উল্লেখযোগ্য পশ্চাৎগামী পদক্ষেপ' বলে সমালোচনা করেছেন। এই সমালোচনা নিয়ে কানাডা-র উপর ক্ষুব্ধ চিন। হংকংয়ের কর্মকর্তারা এই বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
চিন-কানাডা দ্বন্দ্বের সূচনা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে ২০১৫ সালে বৃহত্তম চিনা প্রযুক্তি সংস্থা হুয়ায়েই-এর প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা মেং ওয়াংঝাও-কে গ্রেফতার করেছিল কানাডা সরকার। এই থেকেই কানাডা ও চিনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির শুরু হয়। আর সেই সঙ্গে শুরু হয় বেজিং-এর পণবন্দি কুটনীতির খেলা।
কী এই পণবন্দি কুটনীতি?
মেং-কে আটক করার পরই গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে চিন কানাডার নাগরিক তথা প্রাক্তন কূটনীতিক মাইকেল কোভরি এবং কানাডিয়ান ব্যবসায়ী মাইকেল স্প্যাভার-কে গ্রেফতার করেছিল। বিনা বিচারে তাদের ১৮ মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্দি করে রাখা হয়েছে। দেওয়া হয়নি কনস্যুলার অ্যাক্সেসের অনুমতিও। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে শীর্ষস্থানীয় হুয়ায়েই কর্তাকে গ্রেফতারির প্রতিশোধেই ওই দুই কানাডিয়ান নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হলেও বেজিং তা মানেনি। তবে পরে অবশ্য ওই দুই কানাডিয়ান নাগরিকের মুক্তির বদলে তারা মেং-এর মুক্তি দাবি করে। অর্থাৎ নাগরিকদের বন্দির মাধ্যমে কূটনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করার চেষ্টা করেছিল। এটাই হল পণবন্দি কূটনীতি।
দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ট্রুডো
চিনের এই নোংরা কুটনৈতিক চালের অবশ্য হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য দেশে তাঁর উপর প্রবল চাপ ছিল। কিন্তু, বেজিং-এর সামনে মাথা নোয়াননি তিনি। তিনি সাাফ জানান, চিন সরকারের এই দাবি যদি মেনে নেওয়া হয় তাহলে কোনও কানাডিয়ানই নিরাপদ থাকবেন না। যখন তখন যেখানে সেখানে বেজিং কানাডিয়ানদের বন্দি করে সরকারের উপর চাপ দিয়ে কূটনৈতিক সুবিধা আদায় করতে থাকবে। যে কোনও স্বাধীন দেশের পক্ষেই সেটা অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ধরা পড়ে গেল চিনের গেমপ্ল্যান
হুয়ায়েই-এর উচ্চপদস্থ কর্তা হিসেবে মেং, চিনের কাছে অবশ্যই একজন অত্যন্ত দুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তবে মেং-এর মুক্তির জন্য পণবন্দি কুটনীতি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা, বলে মনে করছেন না আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঢরা। তাঁদের মতে এটা বেজিং-এর বিস্তৃত আন্তর্জাতিক উদ্দেশ্যাবলির একটা অংশমাত্র। ট্রুডো সরকার সাফ জানিয়েছে মেং-কে মুক্তি দিয়ে নিজেদের নাগরিকদের মুক্ত করা হলে কানাডিয়ানদের নিরাপত্তা আরও কমবে শুদু নয়, কানাডিয়ান ব্যবসায়গুলিতেও চিনা খবরদারি বাড়বে, কানাডার সার্বিক স্বাধীনতাতেই হস্তক্ষেপ করা শুরু করবে শি জিনপিং প্রশাসন। আর শুধু কানাডা নয়, অন্যান্য অনেক দেশই চিনের এই নক্কারজনক কৌশলের ভুক্তভোগী হবে।