- Home
- World News
- International News
- 'মাথা ভেঙে দেব', কড়া হুঁশিয়ারিতে উদযাপন চিনা কমিউনিস্ট পার্টির ১০০ বছর, দেখুন ছবিতে ছবিতে
'মাথা ভেঙে দেব', কড়া হুঁশিয়ারিতে উদযাপন চিনা কমিউনিস্ট পার্টির ১০০ বছর, দেখুন ছবিতে ছবিতে
বিদেশী শক্তি তাদের দেশে প্রভাব বিস্তার করতে আসলে, 'তাদের মাথা ভেঙে দেবে' চিন। বৃহস্পতিবার, চিনা কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ পূর্ণ হল। সেই উপলক্ষ্যে, এদিন বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিয়ানানমেন স্কয়ার থেকে ঠিক এই ভাষাতেই বাকি বিশ্বকে হুঁশিয়ারি দিলেন চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং। একইসঙ্গে প্রায় একঘন্টা দীর্ঘ ভাষণে সেনাবাহিনীকে বলিষ্ঠ করার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, তাইওয়ানকে ফের চিনের সঙ্গে যুক্ত করা, হংকং-এ সামাজিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার সঙ্গে সঙ্গে 'ভন্ড ধর্মপ্রচার' না করে দেওয়ার মতো বিষয়ের অবতারণা করলেন তিনি। যা দেখে চিন-বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কমিউনিস্ট পার্টির ১০০ বছর পূর্তি আসলে মাও জেদং-পরবর্তী চিনের সর্বশক্তিমান নেতা হিসাবে জিনপিং-কে প্রতিষ্ঠা করা উৎসব। কীভাবে পালিত হল তা, আসুন দেখে নেওয়া যাক -
| Published : Jul 01 2021, 06:16 PM IST / Updated: Jul 05 2021, 11:13 AM IST
- FB
- TW
- Linkdin
বৃহস্পতিবার সকালে কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠার শততম বার্ষিকী উদযাপনে যুদ্ধবিমানের ফ্লাই-পাস্ট, কামানের স্যালুট এবং দেশপ্রেমমূলক গান বাজতে দেখা গিয়েছে তিয়ানানমেন স্কয়ারে।
দেশের কয়েকজন বাছাই করা বিশিষ্ট মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
উপস্থিত ছিলেন তিব্বতের লামাদের প্রতিনিধিরাও।
তার বাইরেও সেখানে জড়ো হয়েছিলেন অন্তত ৭০ হাজার মানুষ। কারোর মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি।
এক পর্যায়ে সামরিক বিমানগুলি আকাশে ১০০ সংখ্যা গঠন করে।
তিয়ানানমেন স্কয়ারে মূল মঞ্চে, চিনা কম্যুনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মাও জেদং-এর একটি বিশাল প্রতিকৃতি ছিল।
শি জিনপিং এদিন জনগণের সামনে উপস্থিত হন একেবারে মাও জেদং-এর মতো একটি হালকা ধূসর রঙের স্যুট পরে।
শি বলেন, আধুনিক চিন গঠিত হয়েছে কমিউনিস্ট পার্টির হাত ধরেই, আর পার্টিই দেশের প্রবৃদ্ধির কেন্দ্রবিন্দু।
চিনা রাষ্ট্রপতি বলেন, পার্টি থেকে জনগণকে বিচ্ছিন্ন করার চক্রান্ত করা হচ্ছে। এই প্রচেষ্টা 'ব্যর্থ' হবেই।
তিনি আরও বলেন, আর কখনও কোনও বিদেশী শক্তিকে, চিনকে দমন, নিপীড়ন বা পরাধীন করতে দেওয়া হবে না। এই ধরণের কাজ করার কেউ সাহস দেখালে ১৪০ কোটি চিনা জনতার দ্বারা গঠিত ইস্পাতের প্রাচীরে তাদের মাথা ঠুকে দেওয়া হবে। তাঁর এই বক্তব্য চিনে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
গোটা অনুষ্ঠানে বুঝিয়ে দেওয়া হয়, চিনে থাকতে গেলে কমিউনিস্ট পার্টিই হল শেষ কথা, এই কথাটি মেনে নিয়েই থাকতে হবে।
এই বার্তাটি উচ্চস্বরে ও স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনুষ্ঠানের শেষে সমবেতবাবে একটি গান গাওয়া হয়। গানের কথাগুলো ছিল - 'কমিউনিস্ট পার্টি ছাড়া সেখানে থাকবে না কোনও নতুন চিন'।
হংকং-এও সিপিসি-র দফতরে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির ১০০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হয়।
এদিন মূল অনুষ্ঠান হলেও, চিনে কমিউনিস্ট পার্টির ১০০ বছর উপলক্ষ্যে উদযাপন শুরু হয়ে গিয়েছে গত
বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই।
গোটা দেশ, বিশেষ করে রাজধানী বেজিং দারুণভাবে সাজানো হয়েছে। সন্ধ্যা হলেই দেখা যাচ্ছে অপূর্ব আলোকসজ্জা।
সোমবার, বেইজিংয়ের 'বার্ডস নেস্ট' স্টেডিয়ামে মঞ্চস্থ হয় 'দ্য গ্রেট জার্নি' শিরোনামের একটি শিল্প পরিবেশনা। সেখানে পারফর্মাররা পার্টি ও দেশের ইতিহাস তুলে ধরে।
তবে তা ছিল একেবারেই পার্টি অনুমোদিত ইতিহাস। সাংস্কৃতিক বিপ্লব শুদ্ধিকরণ, ১৯৮৯-এর তিয়ানানমেন স্কোয়ারের বিক্ষোভ, হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভ-এর মতো উল্লেখযোগ্য বেশ কিছু ঘটনা, যা পার্টির পছন্দ নয়, সেইসবই বাদ দেওয়া হয়েছিল, বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি।
প্রকাশ করা হয় একটি গান, যার নামে হান্ড্রেড পার্সেন্ট। গানটি গেয়েছেন ১০০ জন চিনা র্যাপ সঙ্গীত গায়ক। এই গানের বিষয়, আধুনিক চিনের গঠনে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির অবদান এবং কৃতিত্ব।
গত এপ্রিল মাস থেকেই চিনা সিনেমা হলগুলিতে সপ্তাহে অন্তত দু'বার বাধ্যতামূলকভাবে 'রেড ফিল্ম' নামে পরিচিত পার্টির প্রচারমূলক চলচ্চিত্রগুলি প্রদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বেজিং-এর তরফে।
সেই সঙ্গে ১০০টি জায়গা নিয়ে সারা দেশ জুড়ে চালু করা হয়েছে 'রেড ট্যুরিজম'। এই সফরে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির ঐতিহ্যশালী ভবন ও এলাকাগুলি ঘুরে দেখার সুযোগ করে দিয়েছে চিনা ভ্রমণ সংস্থাগুলি। এই ভ্রমণ চিনাদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছে।