- Home
- World News
- International News
- ৬৯ জনের মৃত্যু, গায়ে রাখা যাচ্ছে না জামা - রেকর্ড ভাঙা গরম পড়ল কানাডায়, দেখুন ছবিতে ছবিতে
৬৯ জনের মৃত্যু, গায়ে রাখা যাচ্ছে না জামা - রেকর্ড ভাঙা গরম পড়ল কানাডায়, দেখুন ছবিতে ছবিতে
- FB
- TW
- Linkdin
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অরেগন থেকে কানাডার আর্টিক অঞ্চল জুড়ে এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে দেখা দিয়েছে এই তাপপ্রবাহ। মঙ্গলবার কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের লিটন-এ তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৪৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১২১ ডিগ্রি ফারেনহাইট-এ। বিকাল ৪.২০ মিনিটে নাগাদ লিটন জলবায়ু কেন্দ্রে এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
কানাডায় এর আগে কোনওদিন পারদ এই মাত্রায় পৌঁছায়নি। তাপমাত্রা এই রেকর্ডভাঙা জায়গায় পৌঁছতেই মঙ্গলবার একদিনেই ভ্যানকুভার-এ অন্ততপক্ষে ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তবে শুধু এদিনই নয়, গত তিনদিন ধরেই তাপপ্রবাহের ফলে ওই অঞ্চলের তাপমাত্রা ক্রমেই বাড়ছিল। ঘত শুক্রবার থেকে এখনও পর্যন্ত যার বলি হয়েছেন অন্তত ১৩৪ জন ব্যক্তি।
রয়্যাল কানাডিয়ান ঘোরসওয়ার পুলিশ বা আরসিএমপি (RCMP) জানিয়েছে বেশিরভাগ মৃত্যুর খবরই এসেছে ভ্যানকুভার-এর শহরতলী বার্নাবী ও সারে এলাকা থেকে। বেশিরভাগই হয় বয়স্ক অথবা কোনও স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছিলেন।
কানাডার পরিবেশবিদরা জানিয়েছেন, এই আচমকা তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এত পরিমাণ মৃত্যুর কারণ হল, এখানকার মানুষ, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলি এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি - অধিকাংশই এই চরম উষ্ণ আবহাওয়া মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত নয়। একটি উচ্চ-চাপের কারণে এই অঞ্চলে উষ্ণ বায়ু আটকা পড়েই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
তাপপ্রবাহের জেরে ভ্যাঙ্কুবার অঞ্চলে স্কুলগুলি, এমনকী কোভিড-১৯ টিকাকেন্দ্রগুলিও বন্ধ রাখতে হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে রাস্তার ধারে ধারে অস্থায়ী জলের ফোয়ারা, জলপান করার কেন্দ্র, জরুরি শীতলকরণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে এবং কর্মীরা পথচারীদের মধ্যে জলের বোতল এবং টুপি বিতরণ করছেন।
উত্তর মেরুর কাছাকাছি অঞ্চলের দেশ এখানকার অনেক বাড়িতেই ফ্যান বা এসি নেই। বৈদ্যুতিন সামগ্রির দোকানগুলিতে যা মাল ছিল, তাও হুড়মুড়িয়ে শেষ। গরমে অনভ্যস্ত কানাডাবাসী তাই আর গায়ে জামা রাখতে পারছে না।
দিনের বেলা কাটাচ্ছে সমুদ্র সৈকতে। রাত্রিবেলায় ঘুমোতে যাচ্ছে, গাড়িতে এসি চালিয়ে বা ভূগর্ভস্থ গ্যারেজে।
'এনভায়ার্নমেন্ট' কানাডা অবশ্য জানিয়েছে মঙ্গবারের রেকর্ড ভাঙা গরমেই কানাডাবাসীর দুর্ভোগ শেষ হচ্ছে না। ব্রিটিশ কলম্বিয়া, আলবার্তো, সাসকাচোয়ান, ম্যানিটোবা, ইউকন এবং উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলগুলির জন্য তারা সতর্কবার্তা জারি করে জানিয়েছে, এই তাপপ্রবাহ আরও দীর্ঘায়িত এবং বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। অন্তত এই সপ্তাহ ধরে তো চলবেই।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অরেগন-ক্যালিফোর্নিয়া এলাকাতেও বইছে দাবদাহ। অরেগনের ইউজিনে, মার্কিন অলিম্পিক ট্র্যাক এবং ফিল্ড দলের চূড়ান্ত পরীক্ষার বাধ্য হয়ে দিনের বদলে সন্ধ্যায় করা হচ্ছে। প্রচণ্ড উত্তাপ, তীব্র খরার সঙ্গে সঙ্গে গত সপ্তাহান্ত থেকেই এই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি দাবানলও দেখা গিয়েছে।
মার্কিন জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা কেন্দ্রও কানাডার মতো একইরকম সতর্কবার্তা জারি করেছে। ওই এলাকার বাসিন্দাদের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ভবনে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। এই সময় বাড়ির বাইরে কোনও কাজ না করার এবং প্রচুর পরিমাণে জল পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পরিবারের সদস্য এবং পাড়া প্রতিবেশীদেরও খোঁজ খবর রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই গত কয়েক বছরে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ঘন ঘন সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভাঙতে দেখা যাচ্ছে। ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল দশকটিই ছিল বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণতম জশক। এরমধ্যে গত পাঁচ বছরেই সর্বকালের পাঁচটি উষ্ণতম বছর দেখা দিয়েছে।