- Home
- World News
- International News
- পুতিনকে বলেছিলেন সাইকোপ্যাথ, এক বছর পর রুশ মডেলের দেহ মিলল স্যুটকেসে
পুতিনকে বলেছিলেন সাইকোপ্যাথ, এক বছর পর রুশ মডেলের দেহ মিলল স্যুটকেসে
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে (Vladimir Putin) তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় 'সাইকোপ্যাথ' (Psychopath) বা বিকৃতমনস্ক বলেছিলেন। প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছিলেন, পুতিন যদি বা রাশিয়ার (Russia) জন্য ভাল কিছু করতে চান, তিনি কি সত্যিই কিছু করতে পারবেন, তাঁর ক্ষমতায় কুলাবে? সেটা ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস। আর তার পরপরই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন ২৩ বছর বয়সী রুশ মডেল গ্রেটা ভেডলার (Gretta Vedler)। এক বছর পর তাঁর মৃতদেহ পাওয়া গেল একটি স্যুটকেসে ঠাসা অবস্থায়। তাহলে কি সত্যিই তাঁর বিরোধিতা করার জন্য, তাঁকে সরিয়ে দিয়েছিলেন পুতিন?
- FB
- TW
- Linkdin
সোশ্যাল মিডিয়ায় গ্রেটা ভেডলার লিখেছিলেন, শৈশবে নাকি পুতিনকে অনেক লাঞ্ছনা-অপমান সহ্য করতে হয়েছিল। তবে সেইসময়, তাঁর দুর্বল শারীরিক গঠনের কারণে, তিনি সেইসবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারেননি। তাই, আইন স্কুল ছেড়ে যে তিনি কেজিবিতে যোগ দিয়েছিলেন, তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই।
তিনি আরও লেখেন, এই ধরনের মানুষরা শৈশব থেকেই ভীতু প্রকৃতির হয় এবং কোলাহল, অন্ধকার, অপরিচিত লোকদের ভয় পায়। তাই তাদের চরিত্রের প্রথম থেকেই সতর্কতা, সংযম এবং যোগাযোগের অভাবের মতো বৈশিষ্ট্য তৈরি হয়। পুতিনের ক্ষেত্রেও স্পষ্ট সাইকোপ্যাথি বা সোশিওপ্যাথির লক্ষন দেখা যায় বলে মন্তব্য করেছিলেন গ্রেটা।
তিনি আরও বলেছিলেন, সাইকোপ্যাথদের জন্য জীবনে ক্রমাগত পূর্ণতা এবং তীক্ষ্ণতা অনুভব করা গুরুত্বপূর্ণ। তাই তারা ঝুঁকি নিতে, কঠিন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে, কঠিন কার্যকলাপ এবং - একটি তীব্র গতিশীল জীবন পছন্দ করে। গ্রেটা ভেডলার এরপরই বলেছিলেন, হয়তো পুতিন সত্যিই রাশিয়ার অখণ্ডতা বাড়াতে চান এবং আন্তরিকভাবে রুশদের জন্য মঙ্গল কামনা করেন। কিন্তু, 'তাঁর পক্ষে কি সত্যিই কিছু করা সম্ভব? আমি মনে করি আপনারা নিজেরাই এই প্রশ্নের উত্তর জানেন।'
পুতিন বিরোধী এই সব কথা সোশ্যাল মিডিয়ার বলার পরপরই তিনি নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। তাই সকলেই ধরে নিয়েছিলেন, এর পিছনে রুশ প্রেসিডেন্টের হাত রয়েছে। তবে, তদন্তে জানা গিয়েছে, ভেডলারের প্রাক্তন প্রেমিক ২৩ বছরের দিমিত্রি কোরোভিনই ওই রুশ মডেলকে হত্যা করেছে। অপরাধ স্বীকারও করেছে সে।
জানা গিয়েছে, রুশ শাসন নিয়ে দ্বন্দ্ব নয়, বরং অর্থ নিয়ে ঝগরার জেরেই একটি হোটেলের ঘরে ভেডলারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিল দিমিত্রি। তারপর, সেই ঘরেই মৃতদেহটি লুকিয়ে রেখেছিল। এরপর, সুযোগ বুঝে, দেহটি একটি স্যুটকেসে পুরে, গাড়ির ডিকিতে নিয়েছিল। ৩০০ মাইল গাড়ি চালিয়ে গিয়ে লিপেটস্ক অঞ্চলে দেহটি ফেলে দিয়েছিল। সেখান থেকেই দেহটি পাওয়া গিয়েছে।
তদন্তের সময় দিমিত্রি কোরোভিন আরও জানিয়েছে, সে দীর্ঘদিন পর্যন্ত কাউকে জানতে দিতে চায়নি যে গ্রেটা ভেডলার বেঁচে নেই। এর জন্য সে ওই রুশ মডেলের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে নিয়মিত পোস্ট করত। তবে, ইউক্রেনের খারকিভের শহরে গ্রেটার একজন ব্লগার বন্ধুর সন্দেহ হয়েছিল। তিনিই এরপর, মস্কোয় তাঁর আরেক বন্ধুকে নিখোঁজ ব্যক্তির মামলা দায়ের করতে বলেছিলেন। তারপর শুরু হয়েছিল তদন্ত, যা থেকে দিমিত্রির অসুস্থ পরিকল্পনা সামনে আসে।
রাশিয়ার তদন্ত কমিটি এই মামলার একটি ভিডিও-ও প্রকাশ করেছে। সেই ভিডিওতে কোরোভিন স্বীকার করেছে এবং অভিনয় করেও দেখিয়েছে, কীভাবে সে ভেডলারকে হত্যা করেছিল। তাই, পুতিন সম্পর্কে গ্রেটার নির্মম বিশ্লেষণই তাঁর হত্যার কারণ নয়। তবে, পুতিনের বিরোধিতা করলে কী ঘটতে পারে, এই ঘটনা তার গা ছমছমে সতর্কীকরণ বলা যেতে পারে।