বারুদের গন্ধ, সন্ত্রাসের আবহ থেকে বিশ্ব ক্রিকেটের তারকা, জানুন রাশিদ খানের কাহিনি
মঙ্গলবার আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ এই মরসুমের প্রথম জয় পেয়েছে। দিল্লি ক্যাপিটালসকে ১৫ রানে হারিয়েছে ডেভিড ওয়ার্নারের দল। দলের জয়ে বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন আফগান স্পিনার রশিদ খান। ম্যান অব দ্য ম্য়াচও নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। শুধু আফগানিস্তানের হয়ে ক্রিকেট খেলেই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে টি২০ ক্রিকেট লিগ খেলে বিশ্ব জোড়া খ্যাতি অর্জন করেছেন রশিদ খান। কিন্তু তার এই সাফল্য়ের পথটা এতটা সোজাও ছিল না। চলুন জানা যাক রশিদ খানের কাহিনি।
- FB
- TW
- Linkdin
মঙ্গলবার দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে রশিদ খান। ৪ ওভার বল করে মাত্র ১৪ রান দিয়ে তিনটি প্রধান উইকেট নিয়েছেন তিনি। ম্যাচের সেরাও নির্বাচিত হয়েছেন রশিদ খান।
শুধু আইপিএল নয়। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ খেলেন রাশিদ খান। সব জায়গাতেই তার ভেলকির জাদুতে নাকানি-চোবানি খেয়েছে বিশ্বের তাবড় তাবড় বোলররা। বর্তমানে বিশ্ব টি২০ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা বোলারের নাম রশিদ খান।
কিন্তু রাশিদ কানের বিশ্বখ্যাত হওয়ার পথটা ততটা সোজা ছিল না। কারণ রাশিদ খানের যে দেশে জন্ম যেখানে মানুষ সবসময় সন্ত্রাস কবলতি। বাচ্চাদের হাতে খেলনার বদলে অস্ত্র ধরিয়ে দেওয়া হয়।
আফগানিস্তানের নিঙ্গারহর প্রদেশের জন্ম গ্রহণ করেছিলেন রাশিদ খান। কিন্তু সেই সময় ওই এলাকা অশান্ত ছিল। ফলে বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়ে পাকিস্তানে থাকতে হয়েছিল রাশিদ খানকে।
ফলে ছোট বেলার অনেকটা সময় পাকিস্তানেই কেটেছি রাশিদ খানের। পরে যখন তার জন্মস্থানের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, তারপর দেশে ফিরে গিয়েছিলেন রাশিদ খানের পরিবার।
এটা জানলেও অবাক হবেন রাশিদ খান ক্রিকেট প্রথমে কোনও প্রফেশনাল কোচিং সেন্টারে শেখেননি। তার দাদা ও বন্ধুদের কাছেই ক্রিকেট শিখেছিলেন বর্তমানে বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম তারকা।
প্রথম জীবনে ব্যাটসম্য়ান হতে চেয়েছিলেন আফগান তারকা। কিন্তু তার দাদা তাকে বল করতে বলেন। রাস্তায় টেনিস বলে ক্রিকেট খেলেই তার ক্রিকেট কেরিয়ার শরু হয়েছিল।
এমনকী জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার আগে পর্যন্ত রাশিদ খান কোনও বড় জায়ায় ক্রিকেট খেলেননি। যা শিখেছিলেন নিজে ও দাদার কাছ থেকে।
এক সাক্ষাৎকারে রাশিদ খান জানিয়েছিলেন তার মা চাইত তিনি যেন ডাক্তার হন। কারণ তাদের পরিবারে কোনও ডাক্তার ছিল না। কিন্তু রাশিদ খানের ক্রিকেট ও স্পোকিং ইংলিশের প্রতি খুব শখ ছিল। ক্লাস টেনে পড়ার সময় সে ইংলিশ কোচিং নেওয়া শুরু করেন। কিছুদিন পর থেকেই অন্যদের কোচিং দেওয়া শুরু করেন রাশিদ খান। যদিও ক্রিকেটে আসার পর তা ছেড়ে দেন।
রাশিদ খান দেশের জার্সি গায়ে ৪টি টেস্টে ২৩টি উইকেট, ৭১ টি একদিনের ম্য়াচে ১৩৩টি উইকেট, ৪৮টি টি২০ ম্য়াচে ৮৯ টি উইকেট নিয়েছেন। জাতীয় দলের অধিনায়কও হয়েছেন তিনি।
আইপিএলেও রাশিদ খানের রেকর্ড উল্লেখযোগ্য। এখনও পর্যন্ত ৪৯টি ম্যাচে ৫৯টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার দিল্লির বিরুদ্ধে ১৪ রান ৩ উইকেটই তার আইপিএলে এখনও পর্যন্ত সেরা পারফরমেন্স।