- Home
- West Bengal
- Kolkata
- ফাঁসির আগে হেসে ফেলেন ১৮-র সেই প্রাণবন্ত তরুণ, মৃত্যু দিবসে ক্ষুদিরামকে স্মরণ রাজ্যপালের
ফাঁসির আগে হেসে ফেলেন ১৮-র সেই প্রাণবন্ত তরুণ, মৃত্যু দিবসে ক্ষুদিরামকে স্মরণ রাজ্যপালের
ক্ষুদিরাম বসুর প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধা জানিয়ে টুইট করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। উল্লেখ্য, ১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট, ক্ষুদিরাম বসুকে ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার। যখন তিনি সদ্য ১৮ বছর ৮ মাসে পা দিয়েছেন। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাঁর হাতে ছিল গীতা। মৃত্যুকেও ছাপিয়ে গিয়ে তিনি আমাদের আজীবনকালের জন্য রেখে গিয়েছেন অনুপ্রেরণা এবং ভালোবাসা। একুশের অগাস্টে পা দিয়ে তাই আজও ততটাই জীবন্ত সেই দিনটা, চলুন ফিরে দেখা যাক।
- FB
- TW
- Linkdin
১৮৮৯ সালের ৩ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির মেদিনীপুর জেলার মোহবনী গ্রামে জন্মেছিলেন ক্ষুদিরাম বসু। জন্মের পরই ছেলে মারা যাবে এই অন্ধবিশ্বাসে তাঁর মা তিন মুঠো খুদের বিনিময়ে তাঁকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন মাসির কাছে। তখন থেকেই তাঁর নাম হয় ক্ষুদিরাম।
১৯০৮ সালের ১১ অগাস্ট জেলের ভিতরে তৈরি হয়েছিল ১৫ ফুট উঁচু এক ফাঁসির মঞ্চ। দুই দিকে ছিল দুই কাঠের খুঁটি। তার উপর ছিল মোটা লোহার রড ছিল আর তারই মাঝখানে মোটা দড়িতে ক্ষুদিরাম বসুকে ফাঁসি দিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার।
১৯০৮ সালের ১১ অগাস্ট ক্ষুদিরামকে ফাঁসির মঞ্চে এগিয়ে নিয়ে এসেছিলেন ব্রিটিশ সরকারের চার পুলিশ। ফাঁসির আগে ঘড়ির দিকে তাঁকিয়ে তখন প্রশাসনিক হেড। হাতে রুমাল। আর এমনই এক গুরুগম্ভীর পরিস্থিতিতে চির বিদায়ের আগে উপস্থিত আইনজীবীদের দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলেছিলেন ক্ষুদিরাম বসু।
এহেন পরিস্থিতিতে পড়ে অবাক হয়েছিলেন বিচারক কর্নডফ। 'ফাঁসিতে যে মরতে হবে, সেটা বুঝতে পারছো কি', তরুণ ক্ষুদিরামকে প্রশ্ন করতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি।
গলায় ফাঁসির দড়ি পরানো মাত্র জল্লাদকে শহীদ শুদিরাম প্রশ্ন করেছিলেন 'ফাঁসির দড়িতে মোম দেওয়া হয় কেন?' এটাই ছিল বীর শহিদের জীবনের শেষ কথা। বিস্ময়ে মুখ বন্ধ হয়ে এসেছিল জল্লাদেরও।
তখন উত্তাল সারা বাংলা। রাতে বাতি নিভে যেত হিংসার আলোয়। আর তখন একাকী অন্য আঙ্গিকে ক্ষুদিরাম। ব্রিটিশ রাজকে সরিয়ে স্বাধীন ভারতবর্ষকে দেখার তীব্র ইচ্ছা নিয়ে এভাবেই সবাইকে অবাক করেছিল মেদিনীপুরের সেই সদ্য আঠারোয় পা দেওয়া যুবক। আদালতে রায় ঘোষণার পর জীবনের শেষ কয়েকটা দিন অন্যভাবে কাটিয়েছিলেন তিনি।
ক্ষুদিরাম বসু জেলে বসে মাৎসিনি, গ্যারিবল্ডি ও রবীন্দ্রনাথের লেখা পড়তে চেয়েছিলেন। জ্ঞান যে চেতনাকে আরও উন্নত করে তুলবে, এ অনুপ্রেরণা তার প্রতি মুহূর্ত জানলেই বেশ টের পাওয়া যায়।
১০ আগস্ট আইনজীবী সতীশ চন্দ্র চক্রবর্তীকে ক্ষুদিরাম বলেছিলেন, রাজপুত নারীরা যেমন নির্ভয়ে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে জওহরব্রত পালন করত, আমিও তেমন নির্ভয়ে দেশের জন্য প্রাণ দেব। আমি ফাঁসির আগে চতুর্ভুজার প্রসাদ খেয়ে বধ্যভূমিতে যেতে চাই।
ক্ষুদিরাম বসুর প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধা জানিয়ে টুইট করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। টুইটে তিনি বলেছে, ' ১৮ বছর ৮ মাস বয়েসের ক্ষুদিরামকে ১৯০৮ সালের ১১ অগাস্ট ফাঁসি দিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার। তখন তরুণ ক্ষুদিরামের হাতে ছিল গীতা।'
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় আরও বলেছেন,' ক্ষুদিরামের সেই আত্মদান গোটা দেশকে তীব্রভাবে উজ্জীবিত করেছিল। এত বছর পরেও ক্ষুদিরামের জীবন যেকোনও পরিস্থিতিতে স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ে আমাদের উদ্বুদ্ধ করে।'