রোজ তো জমিয়ে খান, কিন্তু এই খাবারগুলো যে আদৌ বাঙালি নয়, জানতেন কি
- FB
- TW
- Linkdin
সারা পৃথিবীর লোক রকমারি খাবারের স্বাদ চাখতে উপস্থিত হন বাংলায়। চেটেপুটে খেয়ে তৃপ্তি নিয়ে তাঁরা ফিরে যান। এমনই জাদু বাঙালি খাবারের। মিষ্টি থেকে নোনতা, ঝাল থেকে টক-সবরকম খাবার নিয়ে স্বাদকোরক মাতাতে পারে বাঙালি।
কিন্তু জানেন কী, এমন কিছু খাবার আছে, বাঙালি খাবারের সঙ্গে মিশে গিয়ে আদ্যোপান্ত বাঙালি হয়ে গিয়েছে। মানে এই খাবারগুলো জন্মসূত্রে মোটেও বাঙালি নয়। অথচ প্রায় প্রতিদিন সেগুলি চেটেপুটে সাবড়ে ফেলেন সবাই।
বাঙালিরা সেসব খাবার গর্ব করলেও জিভে জল আনা অনেক পদই এসেছে বাইরে থেকে। এখানে তেমনই কয়েকটি খাবারের তালিকা করলাম আমরা। তালিকা পড়ে অবাক হবেনই হবেন।
সুক্তো : ‘চৈতন্যচরিতামৃতে’ সুকুতা, শুকুতা বা সুক্তা বলতে একধরণের শুকনো পাতাকে বলা হয়েছে। এটি ছিল আম-নাশক। সম্ভবত এটি ছিল শুকনো তেতো পাটপাতা। কেরালাবাসীর হাত ধরে সুক্তো ছড়িয়ে পরে ভারতে। কিন্তু প্রাচীন কালে পর্তুগীজদের একচেটিয়া খাবার ছিল সুক্তো।
জিলিপি :এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া যাবে না যে জিলাপি খেতে ভালবাসে না। জিলিপি মূলত পশ্চিম এশিয়ার খাবার। মধ্যযুগে ফার্সিভাষী তুর্কিরা ভারত আক্রমণ করে। তাদের হাত ধরেই এই দেশে জিলিপির আগমন। আরবি শব্দ জুলেবিয়ার এবং পার্সি শব্দ জুলবিয়া থেকে জিলিপি শব্দটির উৎপত্তি।
চা : চা-এর উৎপত্তি সুদূর চিনে। উইকিপিডিয়া জানাচ্ছে, চা চাষে চীনের একচেটিয়া আধিপত্যে ভাগ বসাতেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি স্থানীয়ভাবে ভারতে চা চাষ শুরু করে। ১৬০০ শতাব্দীতে ফুজিয়ান থেকে চা নিয়ে বিদেশে পাড়ি দেন ডাচ ব্যবসায়ীরা। সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে চা।
সিঙাড়া : দশম শতাব্দীতে মধ্যপ্রাচ্যে প্রথম সিঙাড়ার উদ্ভব। ওরা বলে ‘সাম্বোসা’। ত্রয়োদশ এবং চতুর্দশ শতাব্দীতে মধ্য এশিয়ার ব্যবসায়ীদের হাত ধরে ভারত এবং উপমহাদেশের অন্যান্য দেশে সিঙাড়ার প্রবেশ। ফার্সি শব্দ ‘সংবোসাগ’ থেকেই এই সিঙ্গারার শব্দের উৎপত্তি।
গুলাবজামুন : মনে করা হয় শাহজাহানের ব্যক্তিগত রাঁধুনি দুর্ঘটনাবশত গুলাবজামুন তৈরি করে ফেলে। তবে ইতিহাস বলছে মধ্য এশিয়ার তুর্কিদের খাবার প্যানকেকের বিবর্তিত রূপ গুলাবজামুন। তুর্কিদের হাঁড়িতেই তাই গুলাবজামুন তৈরি।
বিরিয়ানি : দক্ষিণ এশিয়ার মুসলিমদের খাবার বিরিয়ানি। কিন্তু উইকিপিডিয়া জানাচ্ছে, এর সঠিক উৎপত্তি অনিশ্চিত। ভারতীয় রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী ক্রিস ধিলনের বিশ্বাস, বিরিয়ানি আসলে পারসি পদ এবং মুঘলদের হাত ধরে তার ভারতে প্রবেশ।