চটজলদি ঝড়িয়ে ফেলুন বাড়তি মেদ, ওজন কমাতে মেনে চলুন লিকুইড ডায়েট
বাড়তি ওজন কমিয়ে সুন্দরী হয়ে উঠতে চলে কঠিন পরিশ্রম। শুধু এক্সারসাইজ নয়। এর সঙ্গে আছে ডায়েটিং। কেউ সারাদিন অর্ধেক খেয়ে থাকেন। তো কেউ থাকেন লিকুইডের ওপর। আজকাল লিকুইড ডায়েটের চল বেড়েছে। এই ডায়েট করতে চাইলে সারাদিন আপনাকে ফলের রস খেয়ে কাটাতে হবে। কিংবা খেতে হবে দুধ। শুধু তরল পদার্থের ওপর কাটাতে হবে দিন। এমন কঠিন ডায়েটে মজেছেন আজ অনেকে। এমন ডায়েট করার আগে একবার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে নিন। কারণ, টানা কদিন ধরে শুধু লিকুইড খেয়ে থাকা তেমন সহজ কথা নয়। অনেকেই এতে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। সে কারণে ডাক্তারি পরামর্শ নিয়ে এই ডায়েট করলে একদিকে যেমন ওজন কমবে তেমনই বজায় থাকবে শারীরিক সুস্থতা।
| Published : Apr 24 2022, 08:59 AM IST
- FB
- TW
- Linkdin
মূলত সবজির রস, ফলের রস খেয়ে থাকতে হয় এই লিকুইড ডায়েট করতে গেলে। যে সব খাবারে ক্যালরির পরিমাণ কম থাকে, সেই সব খাবার দিয়ে তৈরি সুপও খেতে পারেন। তবে, চটজলদি ওজন কমাতে চাইলে শুধু লিকুইড খাবারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। তাই অধিকাংশই এই ডায়েটে ফলের রস খেয়ে থাকেন।
ব্রেকফাস্ট বা লাঞ্চে লিকুইড খাবার খেলেও উপকার পেতে পারেন। বাকি সময় লো ক্যালোরি যুক্ত খাবার খেলেন। তবে, এটা পুরোটাই নির্ভর করছে আপনার শরীরের ওপর। যাদের শরীরের মেদের পরিমাণ বেশি তারা বেশিটাই খান লিকুইড খাবার। আর যারা শুধুমাত্র শেপে আসার জন্য ডায়েট করতে চাইছেন, তারা লিকুইড খাবারের সঙ্গে লো ক্যালরি যুক্ত খাবারও খেতে পারেন।
লিকুইড ডায়েটে যে সকল খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়, তাতে ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম থাকে। আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনের গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই ডায়েটে দিনে ৫০০ ক্যালোরির বেশি খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এত কম ক্যালোরি খাওয়ার জন্য ঝটপট ওজন কমতে থাকে।
এই সময় জুস, স্মুদি খাওয়া হয়। মূলত ফল ও সবজি দিয়ে এগুলো তৈরি হয়। এতে মিনারেল, ভিটামিন, ডায়েটারি ফাইবার থাকে। থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। যা শরীরের সকল ঘাটতি পূরণ করে। এতে থাকা ফাইবার পরিপাকতন্ত্রকে পরিষ্কার করে। যারা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনালের সমস্যায় ভুগছেন, তারা সুস্থ থাকেন।
এই ধরনের খাবারে থাকে একাধিক পুষ্টিগুণ। তরল খাবার হলেও, পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ এমন খাবার। ফলে শারীরিক সকল ঘাটতি পূরণ হয়। সঙ্গে স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার খেতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সঙ্গে বৃদ্ধি পায় মেটাবলিজম। এতে সহজে ওজন কমে। তাই যারা লিকুইড ডায়েট করবেন বলে স্থির করেছেন, তারা অবশ্যই স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ খাবার বেছে নিন।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, লিকুইড ডায়েট করলে পরিপাকতন্ত্র সুস্থ থাকে। এই ধরনের খাবারে ফাইবার থাকে। এই সকল খাবার সহজে হজম করা সম্ভব। সে কারণে যারা হজম ও পেটের সমস্যায় ভোগেন তারা এই লিকুইড ডায়েট করতে পারেন। এই ডায়েট করলে পরিপাকতন্ত্র সুস্থ থাকে।
এখন প্রশ্ন হল সত্যিই কি এই ডায়েটে ওজন কমে? আসলে লিকুইড ডায়েট আমাদের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সঙ্গে এই ডায়েটে খুব কম পরিমাণ ক্যালোরি খাওয়া হয়। সে কারণে সহজে নতুন করে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বাড়ে। বাড়ে মেটাবলিজম। যে কারণে ওজন কমার সম্ভাবনা রয়েছে বিস্তর।
তবে এই ডায়েট করার আগে বিস্তারিত জেনে নেবেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে ডিটক্স ওয়াটার খান। তারপর ব্রেকফাস্টে খেতে পারেন দুধ ও ২টো আমন্ড কিংবা ফলের রস। এবার দুপুরে খান স্যুপ। বিকেলে ডাবের জল কিংবা ফলের রস। রাতে আবার এক বাটি স্যুপ। মূলত এই ধরনের খাবারই রাখা হয় লিকুইড ডায়েটে।
এর খেতে খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে জল। দিনে অন্তত ৪ লিটার জল খান। এই গরমে এমনিতেই শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দেয়। ঘামের দ্বারা জল বেরিয়ে যাওয়ায় অনেকেই ডিহাইড্রেশনের সমস্যায় ভোগেন। তার ওপর এমন ডায়েট করলে পর্যাপ্ত জল খাওয়া মাস্ট। আর বারে বারে জল খেলে সহজে খিদেও পাবে না। তাই মেনে চলুন এই টোটকা।
সঙ্গে এক্সারসাইজ করুন। ওজন কমাতে চাইলে ডায়েটিং-এর সঙ্গে এক্সারসাইজও করতে হবে। তা না হলে ওজন কমা কঠিন। তবে, তাড়াহুড়ো করবেন না। ধীরে ধীরে এক্সারসাইজের সময় বৃদ্ধি করুন। তা না হলে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। ওজন কমাতে চাইলে সবার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। তবেই ওজন কমার সঙ্গে শারীরিক সুস্থতা বজায় থাকবে।