- Home
- Lifestyle
- Lifestyle Tips
- 'হে নূতন, দেখা দিক আর-বার', কবির সম্পর্কে অজানা কিছু বিষয়, বাঙালি হয়ে যা না জানলেই নয়
'হে নূতন, দেখা দিক আর-বার', কবির সম্পর্কে অজানা কিছু বিষয়, বাঙালি হয়ে যা না জানলেই নয়
জীবনের প্রথম দশ বছরে পিতার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাননি রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা আরম্ভ হয় দাদা হেমেন্দ্রনাথের হাতে। ১৮৭৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পিতাঁর সঙ্গে কয়েক মাসের জন্য কলকাতাঁর বাইরে যাওয়ার সুযোগ হয় রবীন্দ্রনাথের। সেই প্রথম কলকাতার বাইরে শান্তিনিকেতন দর্শণ রবি ঠাকুরের।
- FB
- TW
- Linkdin
মাত্র আট বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ কাব্যরচনা শুরু করেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের ধরাবাঁধা শিক্ষাব্যবস্থা তাঁকে আকৃষ্ট করে রাখতে পারেনি কোনওদিন। সাধারণ স্কুল, বেঙ্গল অ্যাকাদেমি, ওরিয়েন্টাল সেমিনারি ও শেষে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে কিছুকাল পড়াশোনার পর তিনি অবশেষে বিদ্যালয়ে যেতেই অস্বীকার করেন তিনি।
তবে একমাত্র স্কুলে যাওয়া ছাড়া অন্য সময় বাড়ির বাইরে বের হওয়া নিষিদ্ধ ছিল। ফলত বাইরের জগৎ ও প্রকৃতির সান্নিধ্য পাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকতেন তিনি। জীবনের প্রথম দশ বছরে পিতার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাননি রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা আরম্ভ হয় দাদা হেমেন্দ্রনাথের হাতে। ১৮৭৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পিতাঁর সঙ্গে কয়েক মাসের জন্য কলকাতাঁর বাইরে যাওয়ার সুযোগ হয় রবীন্দ্রনাথের। সেই প্রথম কলকাতার বাইরে শান্তিনিকেতন দর্শণ রবি ঠাকুরের।
জোড়াসাঁকোর ৬ নং দ্বারকানাথ ঠাকুর লেনের পারিবারিক বাসভবনে ২৫ বৈশাখ জন্মগ্রহণ করেন বিশ্ব কবি। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন তাঁর পিতা-মাতার চোদ্দো সন্তানের মধ্যে কণিষ্ঠতম সন্তান। ছেলেবেলায় সাহিত্য পত্রিকা, সঙ্গীত ও নাট্যানুষ্ঠানের পারিবারিক পরিবেশেই বড় হয়ে ওঠা।
যদিও রবীন্দ্রনাথ ইংরেজদের কঠোর নিয়মানুবর্তিতা বা পারিবারিক রক্ষণশীল ধর্মমত কোনওটিকেই নিজের জীবন বা সৃষ্টিকর্মের মধ্যে গ্রহণ করতে ইচ্ছুক হননি। বরং বেছে নিয়েছিলেন এই দুই জগতের কিছু শ্রেষ্ঠ অভিজ্ঞতাকেই।
১৮৭৮ সালের অক্টোবর মাসের প্রথম দিকে ব্যারিস্টার হওয়ার উদ্দেশ্যে রবীন্দ্রনাথ পাড়ি দেন ইংল্যান্ডে। এই বিলেতবাসের সময় ইংরেজি সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা পেয়েছিলেন তিনি, যা পরবর্তীকালে তাঁর সাহিত্য, সঙ্গীত ও নাটকে গভীর প্রভাব বিস্তাঁর করে।
১৮৯০ সালে রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহে পারিবারিক জমিদারির তত্ত্বাবধান শুরু করেন। বর্তমানে এই অঞ্চলটি বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার অন্তর্গত। এই সময়ে রবীন্দ্রনাথ রচনা করেন বহু গ্রন্থ এবং বাংলা সাহিত্যে প্রবর্তন করেন এক নতুন ধারার ছোটোগল্প।
১৮৯১ সাল থেকে ১৯০১ সালের মধ্যে তিনি ঊনষাটটি ছোটোগল্প লিখেছিলেন। এই সব গল্পের উপাদান তিনি সংগ্রহ করেছিলেন সাধারণ বাঙালির জীবনের নানা শ্লেষাত্মক উপাদান ও আবেগ থেকে। সোনার তরী (১৮৯৪), চিত্রা (১৮৯৬) ও কথা ও কাহিনী কাব্যগ্রন্থগুলি এই সময়েরই রচনা।
১৮৮৩ সালে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে তাঁর বিবাহ হয়। ১৮৯০ সাল থেকে রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গের শিলাইদহের জমিদারি এস্টেটে বসবাস শুরু করেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯০২ সালে তাঁর পত্নীবিয়োগ হয়।
১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য তিনি শ্রীনিকেতন নামে সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ জীবনে তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং সমগ্র বিশ্বে বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন। ১৯৪১ সালে দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার পৈত্রিক বাসভবনেই তাঁর মৃত্যু হয়।