- Home
- World News
- International News
- 'ট্রাম্প হারলে আমেরিকা দেখবে আরও একটা ৯/১১', মার্কিনি ভোট যুদ্ধে ঝড় তুললেন লাদেনের ভাইঝি
'ট্রাম্প হারলে আমেরিকা দেখবে আরও একটা ৯/১১', মার্কিনি ভোট যুদ্ধে ঝড় তুললেন লাদেনের ভাইঝি
আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য ভোট চাইলেন মার্কিন বাহিনীর হাতে নিহত কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আল কায়দার প্রাক্তন প্রধান ওসামা বিন লাদেনের ভাইঝি নুর বিন লাদিন। নুর জানালেন, জানালেন, আগামী নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প হারলে ফের ৯/১১-র ধাঁচে হামলা হতে পারে আমেরিকায়।
- FB
- TW
- Linkdin
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আতঙ্কে কেঁপে উঠেছিল বিশ্বের সবথেকে উন্নত দেশ আমেরিকা। সেই আতঙ্কের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা বিশ্বে। মার্কিন দম্ভ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন জঙ্গি গোষ্ঠী আল-কায়দার প্রধান ওসামা বিন লাদেন। মার্কিন বিমান হাইজ্যাক করে সেই বিমান দিয়ে হামলা চালানো হয় আমেরিকার সবথেকে উঁচু দুই ইমারত ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে।
৯/১১ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ও পেন্টাগনে হামলার পিছনে মূল পরিকল্পকারী ছিল লাদেন। সেই আতঙ্কের দিনটা আজও ভোলেনি আমেরিকা। সেদিন একের পর হামলায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল আমেরিকার গর্বের বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র। একেবারে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছিল জঙ্গি ওসামা বিন লাদেন ও তার দল। পরে অবশ্য লাদেনকে গুলি করে মারে যৌথ বাহিনী। কিন্তু ওসামা এখনও আমেরিকায় এক ত্রাসের নাম।
আর সেই রকমই হামলা ফের হতে পারে বলেই দাবি ওসামা বিন লাদেনের ভাইঝি নুর বিন লাদিনের। জানালেন, আগামী নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প হারলে ফের ৯/১১-র ধাঁচে হামলা হতে পারে আমেরিকায়।
সংবাদমাধ্যমে এই প্রথম কোনও সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। সেখানে দাবি করেছেন, একমাত্র ট্রাম্পই পারেন ৯/১১-র মতো কোনও হামলা ঠেকাতে। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বিডেন এই ধরনের হামলা ঠেকানোর পক্ষে উপযুক্ত নন।
৩৩ বছরের নুর নিজের কাকার পরিচয় দিতে চান না বলে পদবি লাদেন থেকে বদলে লাদিন করেছেন। নুর জানিয়েছেন, আমেরিকায় বারাক ওবামা থাকার সময় যা হয়েছিল, জো বিডেন প্রেসিডেন্ট হলে ঠিক তাই হবে।
তাঁর দাবি, “বারাক ওবামার সময় আমেরিকায় জঙ্গিদের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। একই ঘটনা ঘটবে যদি জো বিডেন ক্ষমতায় আসেন। একমাত্র ডোনাল্ড ট্রাম্পই এই জঙ্গি কার্যকলাপ থামাতে পারেন।”
ট্রাম্পের এই সমর্থন করার কারণও জানিয়েছেন নুর। তাঁর মতে ট্রাম্পের প্রশাসনে আমেরিকার নাগরিকরা অনেক বেশি সুরক্ষিত রয়েছেন। তিনি বলেন, “তিন বছর বয়স থেকে মায়ের সঙ্গে আমি আমেরিকায় আসতাম। এখন তো আমি এখানেই থাকি। তাই এতদিন ধরে আমেরিকার প্রশাসনকে দেখে আমি বুঝতে পেরেছি, ট্রাম্প একমাত্র দেখাতে পেরেছেন কী ভাবে দেশের নাগরিকদের সুরক্ষিত রাখতে হয়। বিদেশি শক্তির হাত থেকে আমেরিকা ও আমাদের একমাত্র রক্ষা করতে পারেন ট্রাম্প। কারণ, কোনও শত্রু মাথা তোলার আগেই তিনি তার শিকড় কেটে দেন। জঙ্গিদের ক্ষেত্রেও তাই হয়।”
তাঁর হুঁশিয়ারি, “মৌলবাদী ইসলাম আমাদের সমাজে অনুপ্রবেশ করেছে। এটি দুঃখজনক যে, আমেরিকার বামপন্থীরাও এই মতবাদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছে।” সুইজারল্যান্ডে বসবাস করলেও ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ের কথা জানানোর পর থেকেই ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়ে আসছেন ৩৩ বছরের নুর বিন লাদিন।
নুরের মা সুইস লেখক কারমেন ডুফুর, বাবা ওসামার সৎ ভাই ইয়েসলাম বিন লাদেন। ১৯৮৮ সালে নুরের মা-বাবার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। ৯/১১ হামলার পর ২০০৪ সালে লাদেন পরিবার নিয়ে বই লিখে ব্যাপক খ্যাতি পান নুরের মা কারমেন। যদিও কুখ্যাত কাকার থেকে দূরত্ব রাখতে পদবির বানান অন্য রকম লেখেন নুর। তাঁর কটাক্ষ, “ওবামা-বিডেনের জমানায় ইসলামিক স্টেট ছড়িয়ে পড়েছিল। তার পর ইউরোপে প্রভাব বিস্তার করে তারা। কিন্তু ট্রাম্প দেখিয়েছেন তিনি আমেরিকাকে, আমাদের রক্ষা করতে সক্ষম। পুরো পশ্চিমী সভ্যতা রক্ষার জন্যও আবার ট্রাম্পকে নির্বাচিত করা উচিত। তিন বছর বয়স থেকে বছরে অনেকবার আমেরিকা গিয়েছি।” আমেরিকার বাইরে বাস করলেও নিজেকে তিনি মার্কিন বলেই মনে করেন, জানান নুর।
নুরের কথায়, “আমি অনেক দিন ধরে দূর থেকে ট্রাম্পকে দেখছি। এই মানুষটাকে আমি খুব সম্মান করি। ওঁর ফের জেতা উচিত। কারণ ট্রাম্পের জেতা শুধুমাত্র আমেরিকার ভবিষ্যৎ নয়, গোটা পশ্চিমী সভ্যতার ভবিষ্যতের জন্য জরুরি।”
তিনি নিজেও একাধিকবার আমেরিকা গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন নুর। তাঁর বক্তব্য, যেদিন থেকে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদের জন্য মনোনয়ন জমা করেছেন, সেদিন থেকে তিনি তাঁর সমর্থক।
আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার জোর কদমে চলছে। তবে লড়াইটা এবার সহজ নয় ট্রাম্পের। এমনিতেই করোনা সংক্রমণ রুখতে ব্যর্থতা ও আমেরিকার অর্থনৈতিক অবস্থার জন্য দেশের মানুষ তাঁর উপর ক্ষুব্ধ, তার মধ্যে প্রতিপক্ষ হিসেবে রয়েছে জো বিডেনের মতো জনপ্রিয় ব্যক্তি। কিন্তু প্রচারে কিছু কমতি রাখছেন না ট্রাম্প। প্রবাসী ভারতীয়দের সমর্থন পেতে মোদীর প্রশংসায় মেতেছেন ট্রাম্প। তার মধ্যেই এবার ওসামা বিন লাদেনের ভাইঝির সমর্থন পেলেন তিনি।