- Home
- West Bengal
- West Bengal News
- প্রথম দফার নির্বাচনে নিয়ন্ত্রক আদিবাসীরাই, পরিবর্তনশীল জঙ্গলমহলে এবার হাওয়া কোন দিকে
প্রথম দফার নির্বাচনে নিয়ন্ত্রক আদিবাসীরাই, পরিবর্তনশীল জঙ্গলমহলে এবার হাওয়া কোন দিকে
- FB
- TW
- Linkdin
বাংলার জনসংখ্যার মোট ৫.৫ শতাংশ আদিবাসী বা তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ। আর তাদের অধিকাংশেরই বসবাস পশ্চিমবঙ্গের দুটি এলাকায় - উত্তরের চা বাগান এলাকায় আর জঙ্গলমহলে। ২৭ মার্চ যে ৫ রাজ্যে নির্বাচন, তারমধ্যে, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়খণ্ড - এই চারটি ঝাড়খণ্ড সীমান্তবর্তী জেলা মিলিয়ে অবস্থিত জঙ্গলমহল।
কেন জঙ্গলমহল? এই এলাকার ভূপ্রকৃতির মধ্যে বনাঞ্চল এবং পার্বত্য অঞ্চলই বেশি। সেইসঙ্গে এই এলাকায় রয়েছে জনজাতি সম্প্রদায়ের আধিপত্য। সাঁওতাল, ওরাওঁ, শবর, খেরিয়া, লোধা, মুন্ডা, ভূমিজ, মহালি, ভোড়া ইত্যাদি উপজাতি মিলিয়ে রাজ্যের জনজাতি সম্প্রদায়ের ৭০ শতাংশের বাস এই এলাকায়।
শনিবার যে ৩০টি আসনের ভোটগ্রহণ হচ্ছে তার মধ্যে ২৩টিই জঙ্গলমহলের আসন। আর এরমধ্যে ১৫ টি আসনে ফলাফলকে সরাসরি প্রভাবিত করে আদিবাসীদের ভোট। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী এই সবকটি আসনেই এগিয়ে ছিল বিজেপি।
জনজাতির অধিকার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত থাকার উত্তরাধিকার ছিল বামেদের। আর তাই কোনও উন্নয়ন না হলেও ১৯৭৭ সাল থেকে দীর্ঘকাল ধরে এই অঞ্চল ছিল বামেদের শক্ত ঘাঁটি। সেইসঙ্গে মাওবাদী তৎপরতাও ছিল।
বাম শানের শেষ দিকে সেই তৎপরতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় পুলিশি অত্যাচারও বেড়েছিল। বামেদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন আদিবাসীরা।
২০০৮-০৯ সালে লালগড় আন্দোলনের সময় তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। আর তাই ২০১১ সাল থেকে জঙ্গলমহল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে বিপুলভাবে ভোট দিয়েছে। ২০১৬ সালেও তৃণমূল ৩০ আসনের মধ্যে ২৭টিতে জিতেছিল, কংগ্রেস জিতেছিল দুটিতে এবং আরএসপি একটিতে। বিজেপি সেইসময় অনেক পিছনে থেকে এই সমস্ত আসনে তৃতীয় হয়েছিল। ২০১৯ সালে নাটকীয় পরিবর্তন। বিজেপি এই অঞ্চলের ছয়টি লোকসভা আসনের মধ্যে পাঁচটিতেই জয়ী হয়।
তৃণমূলের ১০ বছরের শাসনেও জঙ্গলমহলের মানোন্নয়ন হয়নি। দারিদ্র্য, কর্মসংস্থানের অভাব, খাদ্য সুরক্ষার অভাব, দুর্নীতির মতো সমস্যাগুলো থেকেই গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় এই অঞ্চলে রাস্তাঘাট, শিক্ষার উন্নতি করার চেষ্টা করলেও তাঁর দলের বিধায়ক এবং স্থানীয় নেতাদের দুর্নীতির ফলে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
এই অঞ্চলে সেই মাওবাদীদের দাপটের সময় থেকেই সক্রিয় ছিল বনভাসী কল্যাণ আশ্রমের মতো আরএসএস-এর বিভিন্ন শাখা সংগঠন। প্রথমে তারা প্রাথমিক স্কুল, হরিসভার মতো সংগঠন খুলে জনজাতি সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রবেশ করেছিল। তারপর ধীরে ধীরে প্রভাব বাড়িয়ে গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন যেসব অঞ্চলে পৌঁছতে পারেনি, সেইসব অঞ্চলেও পৌঁছে গিয়েছে আরএসএস। আর ভোটযন্ত্রে এখন তারই ফসল তুলছে গেরুয়া শিবির।