- Home
- West Bengal
- West Bengal News
- ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি ময়নাতদন্তে, চোপড়াকাণ্ডে দেহ নিয়ে বিজেপিকে মিছিলে বাধা পুলিশের
ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি ময়নাতদন্তে, চোপড়াকাণ্ডে দেহ নিয়ে বিজেপিকে মিছিলে বাধা পুলিশের
ধর্ষণ নয়! চোপড়াকাণ্ডে যাবতীয় অভিযোগে কার্যত জল ঢেকে দিল ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। মৃত কিশোরীর দেহ নিয়ে চোপড়ায় যাওয়ার চেষ্টা করলে মাঝপথেই বিজেপি প্রতিনিধিদলকে আটকে দেয় পুলিশ। ইসলামপুরে দু'পক্ষের মধ্যে তুমুল বচসা হয়। এর আগে জাতীয় সড়কে সরকারি বাস ও পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে ঘটনা গ্রেফতার করা হয় ১৬ জনকে। সোমবারও দিনভর সরগরম উত্তর দিনাজপুর।
- FB
- TW
- Linkdin
ঘটনার সূত্রপাত রবিবার ভোরে। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া থানার সোনাপুর পঞ্চায়েতের বসলামপুর গ্রামে উদ্ধার হয় এক কিশোরীর নিথর দেহ। এ বছরই মাধ্যমিক পাশ করেছিল সে। বেলা গড়াতে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শনিবার রাতেই ওই কিশোরীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এরপর আর বাড়ি ফেরেনি সে। রাতভর তাঁর উপর নারকীয় অত্যাচার চলেছে। শেষপর্যন্ত নির্যাতিতাকে খুন করে দেহ ফেলে পালিয়ে যায় অভিযুক্তেরা।
ঘটনার প্রতিবাদে ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে রীতিমতো টায়ার জ্বালিয়ে চোপড়ায় ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন কয়েকশো মানুষ। পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে।
পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধে শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভকারীদের। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি সরকারি বাস ও পুলিশের গাড়ি। বাঁশ-লাঠি-ইঁট নিয়ে পুলিশকর্মীদের আক্রমণ করেন উন্মুত্ত জনতা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশও পাল্টা কাঁদানে গ্য়াস ছোঁড়ে।
প্রকৃত ঘটনাটি কী ঘটেছিল? ধর্ষণের প্রমাণ কিন্ত মেলেনি ময়নাতদন্তে। রিপোর্ট স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, বিষক্রিয়াতেই মারা গিয়েছে ওই কিশোরী। তাঁর শরীরে আঘাতে কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
আচমকাই কেন ওই কিশোরীকে কেউ কেন বিষ খাওয়াবে? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট মানতে নারাজ পরিবারের লোকেরাও। ফের ময়নাতদন্তের দাবি তুলেছেন তাঁরা।
সোমবার মৃতার ময়নাতদন্ত হয় উত্তর দিনাজপুরেরই ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে। ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ নিয়ে মিছিল করে চোপড়া যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল বিজেপি নেতৃত্বের। ইসলামপুরে চলে এসেছিলেন দিলেন রাজ্য সহ সভাপতি রাজু বন্দোপাধ্যায় ও বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার।
হাসপাতাল থেকে দেহ নিয়ে বেরোনোর পর ইসলামপুরে বিজেপির প্রতিনিধিদলে আটকে দেয় পুলিশ। গেরুয়াশিবিরের প্রতিনিধি যখন দেহ নিয়ে চোপড়ায় যান, তাহলে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলে জানানো হয়।
রাস্তাতেই কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বিজেপি নেতাদের বচসা শুরু হয়ে যায়। যদিও শেষপর্যন্ত আর এগোতে পারেননি তাঁরা, থেকে যান ইসলামপুরে।
সোমবার সন্ধ্যায় গড়াতে জাতীয় সড়কে অশান্তির ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান নেমে পুলিশ। নেতৃত্ব ছিলেন খোদ ইসলামপুর পুলিশ জেলার সুপার শচিন মক্কর। রাতভর অভিযানে ধরা পড়েছে ১৬ জন।
ঘটনার পর পেরিয়ে দিয়েছে গোটা এক দিন। এখনও থমথমে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া। দোকানপাঠ বন্ধ, রাস্তাঘাট শুনসান। যেন অঘোষিত বনধ চলছে এলাকায়।