সংক্ষিপ্ত
সমুদ্রের দিক থেকে আসা জঙ্গি হামলার মোকাবিলা করার জন্য জরুরি কয়েকটি পদক্ষেপের কথা জানালেন প্রাক্তন ভাইস অ্যাডমিরাল আরপি সুথান। মুম্বই হামলার ১৪ বছর পরেও যেগুলির দিকে নজর দেওয়া হয়নি।
দেখতে দেখতে ১৪ বছর পার হয়ে গেল ২৬/১১ মুম্বই হামলার। 'পিছনে ফিরে তাকালে মতে মনে আমরা সেই পরিস্থিতি আরও ভালোভাবে পরিচালনা করতে পারতাম।' প্রাক্তন ভাইস অ্যাডমিরাল আরপি সুথান মুম্বই হামলা ও হামলার মোকাবিলার পদ্ধতি নিয়ে নিজের মতামত বিনিময় করেছেন এশিয়ানেট নিউজের সঙ্গে। তিনি বলেছেন,'এটা সত্য যে, আমাদের নজরদারী ও নিরাপত্তার ত্রুটি ছিল।' তিনি আরও বলেন, গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি ও সমস্ত বাহিনীর মধ্যের সমন্বয়ের অভাব সেইসময় রীতিমত প্রকট হয়েছিল। 'একটি সুপরিকল্পিত সন্ত্রাসবাদী হামলা প্রতি আমাদের প্রতিক্রিয়ার এই সমস্ত ত্রুটিগুলি অবিলম্বে সংশোধন করা দরকার। কিন্তু এখনও ১৪ বছর পরে অনেক কিছু করা হচ্ছে যা দ্রুত সংশোধন করার জরুরি। ১৪ বছর ধরে অনেক কিছু করা হয়েছে এবং এগুলিকে পর্যায়ক্রমমে পরীক্ষা করা ও সুক্ষ্ম বিচার করার জরুরি।'
বিভিন্ন কৌশলের মধ্যে যে যুগুলি স্থাপন করা দরকার তারমধ্যে অন্যতম হল সমুদ্র প্রতিটি মাছ ধরার নৌকার ওপর নজরদারী চালান। যা এখনও রীতিমত কঠিন। আর সেক্ষেত্রে মৎসজীবীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। তিনি বলেন সেক্ষেত্রে মৎসজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ আরও বাড়ান জরুরি।
২৬/১১ হামলা এই সত্যকে প্রতিষ্ঠা করেছিল যে সবাই দেশের রক্ষক। যে কোনও সময় যে কোনও জায়গায় এধরনের হামলা হতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রতিটি বিষয় নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এই ধরনের ক্ষেত্রে প্রতিটি তথ্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংতরাং মৎসজীবীরা যদি তাদের একটি নৌকা নিখোঁজ দেখে তাহলে তারা অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানায়।- এই বিষয়টি নিয়েও তাদের অবগত করার জরুরি।
উপকূলীয় এলাকায় যে কোনও সন্দেহজনক কার্যকলাপ হলেই তার রিপোর্ট করা প্রয়োজন। সমস্ত তথ্য সমুদ্র-ভিত্তিক অনুপ্রেবেশ প্রতিরোধ আর রক্ষা করা জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি এটাই সত্য যে গোয়েন্দা রিপোর্ট যতটা সম্ভব কার্যকরী হওয়া উচিৎ। তবে ২০০৮ সালে গোয়েন্দা রিপোর্ট তেমনভাবে উপলব্ধ ছিল না। তখন তথ্য আদান-প্রদানের প্রক্রিয়া অনেকটা শ্লথ ছিল এবং এজেন্সিগুলির মধ্যে এমন সমন্বয়ও ছিল না।
এই ধরনের জরুরি পরিস্থির জন্য অবিলম্বে কাজ করার জন্য একটি কুইক রেসপন্স টিম তৈরি করা জরুরি। নৌবাহিনী বা এনএসজি , কমান্ডো বাহিনী বা অন্যান্য বাহিনী মোতায়েন করার জন্য মোকাবিলা করা কিছুটা হলেও সময় সাপেক্ষ- যা সন্ত্রাসবাদীদের প্রতিহত করতে অনেকটা সময় নিয়ে নেয়। আর সেই কারণে কুইক রেসপন্স টিম প্রাথমিকভাবে জঙ্গিদের মোকাবিলায় অনেক বেশি কার্যকরী। সেইকারণে কিছু পুলিশ কর্মী ও স্থানীয় দলকে জঙ্গি মোকাবিলার জন্য প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেওয়া জরুরি।
প্রাক্তন সেনা আধিকারিকের কথায় সীমান্তের ওপার থেকে যারা অনুপ্রবেশ করছে এবং সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সবথেকে বেশি চ্যালেঞ্জিং হুমকি তৈরি করেছে তাদের প্রতি আমাদের আরও সাহসীভাবে প্রতিক্রিয়া জানান উচিৎ।
নিরাপত্তা বাহিনী ও নাগরিুক সমাজ ও সম্প্রদায়ের মধ্যে সমস্ত সংস্থার মধ্যে আরও ভাল সমন্বয় প্রয়োজন। প্রতিটি সূক্ষ্ম জিনিসের দিকে নজর দেওয়া জরুরি। কার্যকর ও কার্যকরী বুদ্ধিমত্তা, সঠিক ও সনাক্তকরণযোগ্য নজরদারী ও সমন্বিত ও সময়পযোগী নিরপেক্ষ পদক্ষেপের মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যতে সমুদ্র থেকে যো কোনও ধরনের সন্ত্রাসবাদী হুমকির মোকাবিলা করতে পারব।
লেখক আরপি সুথান ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রাক্তন উপ-প্রধান ছিলেন।