সংক্ষিপ্ত

পাঁচটি রাজ্যের নির্বাচনী ফলাফল ব্যাপকভাবে এই সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেছে যে, আসন্ন ২০২৪ সালের সংসদীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে, বিজেপি একটি শক্তিশালী অবস্থান বজায় রেখেছে, প্রাথমিকভাবে প্রধানমন্ত্রী মোদীর জনপ্রিয়তা এর মূল কারণ।

২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে ৫ রাজ্যের সেমিফাইনালে বেশ ভালো ফল করেছে বিজেপি। এই জয়ের ওপর ভিত্তি করেই বিজেপি ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে জেতার আশায় বুক বাঁধছে। ভারতীয় জনতা পার্টির হাতিয়ার দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা, শক্তিশালী দলীয় পরিকাঠামো ও উন্নতধরণের বিপণন কৌশল। সাউথ এশিয়া প্রোগ্রামের ডিরেক্টর মিলান বৈষ্ণবের পর্যবেক্ষণ বিজেপির বিরোধীরা এখন ছন্নছাড়া। সেই সুবিধাই নিচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন লোকসভা নির্বাচনে জেতার জন্য ৫টি ফ্যাক্টর বিজেপির হয়ে কাজ করতে চলেছে।

তাঁর মতে, পাঁচটি রাজ্যের নির্বাচনী ফলাফল ব্যাপকভাবে এই সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেছে যে, আসন্ন ২০২৪ সালের সংসদীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে, বিজেপি একটি শক্তিশালী অবস্থান বজায় রেখেছে, প্রাথমিকভাবে প্রধানমন্ত্রী মোদীর জনপ্রিয়তা এর মূল কারণ।

গ্লোবাল লিডার অ্যাপ্রুভাল ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম মর্নিং কনসাল্ট অনুসারে, নভেম্বরের শেষের দিকে সমীক্ষা করা ভারতীয়দের মধ্যে ৭৮ শতাংশ মোদীর কাজের পারফরম্যান্সকে অনুমোদন করেছে। তাঁর নেট অ্যাপ্রুভাল রেটিং +৬০। এই উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয়তা ২০১৯ সালের অগাস্ট থেকে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।

রাজ্য ও জাতীয় নির্বাচন

মিলান জানাচ্ছেন যে সাম্প্রতিক রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে দুর্দান্ত ফল বিজেপির। এই নির্বাচনগুলিকে লোকসভা ভোটের সেমিফাইনাল হিসেবেই দেখা হচ্ছে। যদিও ইতিহাস বলছে রাজ্য এবং জাতীয় নির্বাচনের মধ্যে একটি সম্পর্ক ছিল, কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এই সমীকরণ কাজ করছে না। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৮ সালের ছত্তিশগড় বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের জয় পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনে সাফল্য আনেনি। তবে নরেন্দ্র মোদীর একটানা জনপ্রিয়তা ধরে রাখার ট্রেন্ড বলছে ২০২৪ সালে শক্ত জমি পাবে বিজেপি।

বিরোধীদের মধ্যে একতার অভাব

মিলানের মতে, বিরোধী সমন্বয়ের চ্যালেঞ্জটি ব্যর্থ। বিরোধীদের ফাটল থেকে বিজেপি ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে বিরোধীদের ভাঙন থেকে লাভ পেয়েছিল বিজেপি। বিজেপির মোকাবিলায় দুই ডজনেরও বেশি বিরোধী দল ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স (INDIA) গঠন করেছে। যদিও জোটের লক্ষ্য বিজেপির বিরুদ্ধে একত্রিত হওয়া, চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে একটি সাধারণ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা। কিন্তু তা সত্ত্বেও মোদীর মত একজন জনপ্রিয় নেতার উপস্থিতির অভাব ও আসন ভাগাভাগি চুক্তিতে মতানৈক্য বিজেপির রাস্তা সহজ করছে।

ওবিসি আনুগত্য

অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর (ওবিসি) আনুগত্যের জন্য লড়াই আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ওবিসি ভোটারদের আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে বিজেপির সাফল্য চোখধাঁধানো।

জনকল্যাণের প্রতিযোগিতা

বিশেষজ্ঞদের মতে বর্তমানে দলগুলি জনহিতকর কাজের এক প্রতিযোগিতায় নেমেছে। মিলান বলছেন এটিই চতুর্থ কারণ হিসাবে উঠে আসছে। অন্যদিকে বিজেপির "নতুন কল্যাণবাদ" উদ্যোগ ভোটের আচরণকে প্রভাবিত করে।

পাবলিক ইস্যু হিসাবে বৈদেশিক নীতি

মিলানের মতে, চূড়ান্ত ফ্যাক্টর হল পাবলিক ইস্যু হিসাবে বিদেশনীতির উদীয়মান ভূমিকা। বিশেষত ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলা এবং পাকিস্তানে পরবর্তী বিমান হামলার মতো ঘটনাগুলি যেভাবে বিজেপি তুলে ধরেছে, তা হাতিয়ার করেছে, জনসাধারণের মনে তা গণইস্যুতে পরিণত হয়েছে। এরই সঙ্গে এমন একটি ধারণা তৈরি হয়েছে যে মোদী ভারতের বৈশ্বিক মর্যাদা বাড়িয়েছেন, এবং জি-২০ প্রেসিডেন্সির মতো বিশ্বমঞ্চে ভারত মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে।

আরও খবরের জন্য এশিয়ানেট নিউজ বাংলা হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে চোখ রাখুন, এখানে ক্লিক করুন।