সংক্ষিপ্ত
- পরিযায়ীদের উপর অমানবিক আচরণের অভিযোগ
- মৃতদেহের সঙ্গে একই ট্রাকে ফেরান হচ্ছে আহতদের
- উত্তরপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে উঠছে অভিযোগের আঙুল
- সোমবারও যোগী রাজ্যে জোড়া দুর্ঘটনার শিকার পরিযায়ীর দল
লকডাউনের মধ্যে প্রতিদিনই দেশের নানা প্রান্ত থেকে উত্তরপ্রদেশে ফিরছেন পরিযায়ী শ্রমিকদের দল। আর এই বিপুল সংখ্যাক পরিযায়ীদিরে নিয়ে ক্রমেই চিন্তা বাড়ছে যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসনের। কয়েকদিন আগে বরেলির এক সীমান্ত চেকপয়েন্টে পরিযায়ী শ্রমকিদের উপর দীবাণুনাশক স্প্রে করার ঘটনায় মহাবিতর্ত তৈরি হয়েছিল। সেই সময় কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা সহ বিরোধীরা যোগী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। এবারও অমানবিকতার অভিযোগ উঠল উত্তরপ্রদেশ সরকারে বিরুদ্ধে। গত শনিবার উত্তরপ্রদেশের অওরিয়ায় প্রাণ যায় ২৬ জন পরিযায়ী শ্রমিকদের। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন পুরুলিয়ার ৬ শ্রমিকও। অভিযোগ, রবিবার রাতে পুরুলিয়া ও ঝাড়খণ্ডের শ্রমিকদের দেহ পাঠানোর জন্য ৩টি ট্রাকের ব্যবস্থা করা হয়, আর সেই মৃতদেহের সঙ্গে আহতদেরও ওই ট্রাকে তুলে দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে উত্তরপ্রদেশ সরকারের সমালোচনা করে ট্যুইট করেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন।
এদিকে সোমবারও যোগী রাজ্যে ফের দুর্ঘটনায় পড়েন পরিযায়ী শ্রমিকরা। গোরখপুর ও হামিরপুরে জোড়া দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন মোট ২৩ জন পরিযায়ী শ্রমিক। গোরখপুরে হিমাচল প্রদেশ থেকে বিহার যাওয়ার পথে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাসে ধাক্কা মারে একটি ট্রাক। ঘটনায় ১১ জন আহত হন। ওই বাসে ২৫ জন যাত্রী ছিলেন। অন্যদিকে হামিরপুরে কুশাম্বি থেকে নয়ডা যাওয়ার পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাস। আহত হন ১২ জন।
একসঙ্গে করোনা আক্রান্ত ৬ কর্মী, গ্রেটার নয়ডায় কারখানা খুলেও বন্ধ করতে হল 'ওপো'-কে
কোথা থেকে কীভাবে ছড়ালো করোনা, চিনের উপর চাপ বাড়িয়ে ৬১টি দেশের সঙ্গে এবার তদন্ত চাইল ভারতও
গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের শিকার ৫ হাজারের বেশি, দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ৯৬ হাজারের গণ্ডি
এদিকে বাড়ি ফিরতে প্রতিদিনই উত্তরপ্রদেশ সীমানায় বাড়ছে মানুষের ভিড়। উত্তরপ্রদেশের পরিযায়ীদের বাড়ি ফেরাতে বাসের ব্যবস্থা করেছে হরিয়ানা সরকার। সেই বাস যমুনানগর পর্যন্ত শ্রমিকদের পৌঁছে দেয়। সেখান থেকে বাড়ি ফিরতে সাহারানপুর হাইওয়েতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন পরিযায়ীদের দল। সরকারি সূত্রে দাবি করা হয়েছে হরিয়ানা থেকে এখনও পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশ সীমানায় পাঠান হয়েছে ৭৫,৬০০ পরিযায়ী শ্রমিককে। ইতিমধ্যে যমুনানগর থেকে হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিককে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে তাঁদের গ্রামে পাঠান হয়েছে।
এদিকে যোগী সরকারের চাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্যে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে একটা বিপুল অংশের করোনার লক্ষণ দেখা দেওয়া। এখনও পর্যন্ত ৪১৪ জন পরিযায়ী শ্রমিকের শরীরের করোনার লক্ষণ দেখা গিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানান হয়েছে। এই অবস্থায় প্রতিটি পরিযায়ীর করোনা পরীক্ষা হবে বলেই দাবি করেছে উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্য দফতর।
উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্য সচিব অমিত মোহন জানিয়েছেন, ভিন রাজ্য থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রথমে থার্মাল স্ক্রিনিং হচ্ছে, এরপরে হচ্ছে পুল টেস্ট। পুল টেস্টে করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসলে দলে সকলেরই কোভিড ১৯ পরীক্ষা করা হচ্ছে।
এদিকে গত রবিবার উত্তরপ্রদেশে করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছেন ২০৬ জন। ফলে রাজ্যটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪,৪৬৪। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১১২ জনের।