সংক্ষিপ্ত

কৃষক আন্দোলনস্থলে গণধর্ষিতা বাঙালি শিল্পী

কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু তাঁর

৬ জনের নামে এফআইআর দায়ের

কৃষক নেতাদের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে

হরিয়ানার তিকরি সীমান্তে গণধর্ষিতা হয়েছিলেন এক ২৫ বছর বয়সী বাঙালি সমাজকর্মী। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রবিবার রাতে ছয়জনের নামে এফআইআর দায়ের করল হরিয়ানা পুলিশ। এফআইআর-এ এই অনিল মালিক, অনুপ সিং, অঙ্কুশ সাঙ্গোয়ান,  জগদীশ ব্রার এবং আরও দুই মহিলার নাম রয়েছে। এরা প্রত্যেকেই 'কিসান সোশ্যাল আর্মি' নামে একটি সংগঠনের সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, অপহরণ-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির বেশ কয়েকটি  ধারায় মামলা করা হয়েছে।

জানা গিয়েছে, আন্দোলনরত কৃষকদের একটি প্রতিনিধি দল ১ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের হুগলিতে একটি জনসভা করেছিল। সেই প্রতিনিধি দলের সঙ্গেই এসেছিল অভিযুক্তরা। সেখানেই, ধর্ষিতা মেয়েটির সঙ্গে তাদের আলাপ হয়েছিল। তিনি একজন শিল্পী তথা ডিজাইনার হিসাবে কাজ করতেন। অভিযুক্তদের সঙ্গে আলাপের পরই তিনি ঠিক করেছিলেন, দিল্লিতে গিয়ে কৃষকদের প্রতিবাদে সামিল হবেন। বাবা-মা'কে রাজি করিয়ে ১১ এপ্রিল ট্রেনে করে তিনি অভিযুক্তদের সঙ্গে পঞ্জাবের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন।

এফআইআর-এর বয়ান অনুযায়ী, যাওয়ার পথেই অভিযুক্ত অনিল মালিক নির্যাতিতার উপর চড়াও হয়েছিল। কিন্তু, মেয়েটি তাকে বাধা দেয়, চলে যেতে বলেন। ১২ এপ্রিল দিল্লি সীমান্তে বিক্ষোভস্থলে পৌঁছায় তারা। নির্যাতিতা একা থাকায়, অভিযুক্তদের সঙ্গেই তাঁকে একই তাঁবুতে থাকতে হয়েছিল। এরপরই তিনি তাঁর বাবাকে ফোন করে জানিয়েছিলেন, অভিযুক্তরা তাঁর সঙ্গে অশালীন আচরণ করছে, তাঁকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করছে।

আরও পড়ন - জলে গুলে খেলেই সংক্রমণ-মুক্ত - করোনা-যুদ্ধের অস্ত্র দিল DRDO, অনুমোদন DGCI-এর

আরও পড়ুন - 'দলের ক্ষতি করেননি' - তৃণমূলে টিকেই গেলেন দিব্যেন্দু অধিকারী, বহিষ্কৃত প্রাক্তন বিধায়ক

আরও পড়ুন - দিল্লি-গুজরাতে আতঙ্ক, করোনার সঙ্গে বাড়ছে আরও এক ভয়ঙ্কর সংক্রমণ - ব্ল্যাক ফাঙ্গাল ইনফেকশন

এরপরই নির্যাতিতার পরিবার বিষয়টি কৃষক আন্দোলনের নেতাদের নজরে এনেছিলেন। নির্যাতিতার বক্তব্যটি ভিডিও রেকর্ডও করা হয়েছিল। নেতারা তাঁকে অন্য তাঁবুতে স্থানান্তরিত করেন। এরপরই অসুস্থ হয়য়ে পড়েছিলেন ওই শিল্পী মেয়েটি। ২১ এপ্রিল তাঁর জ্বরে এসেছিল, তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফল ইতিবাচক আসে। এরপরই তাঁর বাবা দিল্লি গিয়েছিলেন। হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মেয়েটি তাঁর বাবাকে জানান, অভিযুক্তরা প্রথমে ট্রেন এবং তারপর তাঁবুতে তাঁর উপর যৌন নির্যাতন করেছে। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি করেছিলেন তিনি। তবে বারবার বলেছিলেন, এতে যেন কৃষক আন্দোলনের কোনও ক্ষতি না হয়। ৩০ এপ্রিল দিল্লির বেসরকারি হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়।

"

তবে, ১২ এপ্রিলের পরই নির্যাতিতা তিকরি সীমান্তে কৃষক নেতাদের কছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। ভিডিওতে তাঁর বয়ান রেকর্ড করেও দিয়েছিলেন। যার পরেই তাঁকে অন্য তাঁবুতে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সবটা জানার পরও কৃষক নেতারা তেন আগেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানালেন না, সেই প্রশ্ন উঠছে।

YouTube video player