সংক্ষিপ্ত

  • সরকারি প্রকল্পে ফের ধরা পড়ল জলজ্যান্ত দুর্নীতি
  • ১৩ মাসে ৮ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক বৃদ্ধা
  • প্রতিবার সন্তান জন্মের পর তাঁর অ্যাকাউন্টে জমা পড়ত ১৪০০ টাকা
  • জানা যাচ্ছে সরকারি টাকা তছরুপের জন্য আধিকারিকরা ফন্দি এঁটেছিলেন

গত জুনমাসে উত্তরপ্রদেশের একটি ঘটনা সবাইকে চমকে দিয়েছিল। একসঙ্গে ২৫টি স্কুলে শিক্ষকতা করার অভিযোগ উঠেছিল এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। ২৫ টি  স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি করে মাসে ১ কোটি টাকা বেতন পেতেন উত্তরপ্রদেশের ওই শিক্ষিকা। জালিয়াতির মামলায় কস্তুরবা গান্ধী বালিকা বিদ্যালয়ের পূর্ণ সময়ের শিক্ষিকা অনামিকা শুক্লাকে পরে গ্রেফতার করে  উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। এবারের বিহারের সরকারি রেকর্ডে উঠে এল আরও এক অদ্ভূত ঘটনা। সেখানে গত ১৩ মাসে ৮টি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক মহিলা। 

সম্প্রতি বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার শারমিন আক্তার নামে এক মহিলা পাঁচ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। তাও একসঙ্গে। তিনটি ছেলে ও দুটি মেয়ে। কিন্তু তিনজন সন্তানকে বাঁচানো যায়নি। সেখানকার লাকসাম জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, শারমিন অস্ত্রোপচার ছাড়াই পাঁচ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। কিন্তু তিন সন্তানের ওজন এতটাই কম ছিল যে তাদের বাঁচানো যায়নি।  মানুষের পেট থেকে একসঙ্গে পাঁচ সন্তানের জন্ম বিরলতম ঘটনা। তবে এই দুনিয়ায় এমন অনেক কিছুই অবিশ্বাস্য ঘটে। শারমিনের ঘটনা অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি ছিল। কিন্তু বিহারের সরকারি নথিতে উল্লেখ রয়েছে এক মহিলার আট সন্তানের জন্ম দেওয়ার কথা। যার  বয়স আবার ৬৫ বছর। অবিশ্বাস্য মনে হলেও কিন্তু সরকারি হিসাবে তাই বলছে।

আরও পড়ুন: সংক্রমণ ফ্রি করোনার আঁতুড় ঘর, মাস্ক ছাড়াই এবার বাইরে বেরনোর অনুমতি পেল বেজিংবাসী

সরকারি হিসাব বলছে, বিহারের ওই ৬৫ বছর মহিলা ১৩ মাসের ব্যবধানে আটটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এমন ঘটনা শুনে চিকিৎসক থেকে শুরু করে বিজ্ঞানী, সকলেই আঁতকে উঠছেন। তবে এই অসম্ভব ঘটনাটিকে সম্ভব বলে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন সরকারি আধিকারিকরা। জানা যাচ্ছে ন্যাশনাল রুরাল হেলথ মিশন বা রাষ্ট্রীয় গ্রাম স্বাস্থ্য যোজনার বরাদ্দ টাকা তছরুপের জন্য ছক কষেছিলেন আধিকারিকরা। 

সরকারি নথিতে রয়েছে মুজফ্‌ফরপুরের মুশারি ব্লকের  বাসিন্দা  ৬৫ বছরের বৃদ্ধা শান্তি দেবী ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের আগস্টের মধ্যে  আটটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। শান্তি দেবীর অ্যাকাউন্টে আটবার ১৪০০ টাকা করে জমা পড়েছে। আর পরদিনই সেই টাকা কেউ বা কারা তুলে নিয়েছে। শান্তি দেবী এই দুর্নীতির বিন্দুমাত্র জানতে পারেননি। ওই মহিলা একটি সন্তানেরও জন্ম দেননি। মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের জমানায়  সরকারি প্রকল্পে এই দুর্নীতি ঘিরেই এখন সরগরম বিহারের রাজনীতি। সামনেই বিহারের বিধানসভা নির্বাচন। সেখানে সরকারি ক্ষেত্রে দুর্নীতির বিষয়টিকে তুলে ধরতে এই ঘটনাকে ব্যবহার করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। 

আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন এলেই প্রথমে ৫০ লক্ষ ডোজ কিনবে কেন্দ্র, রোডম্যাপ প্রস্তুত করে ফেলল মোদী সরকার

গোটা বিষয়টি সামনে আসার পরেই বিহারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মঙ্গল পান্ডে ইতিমধ্যে এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। চার সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। দোষীদের রেয়াত করা হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছে বিহার সরকার।