হায়দরাবাদে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটানোর ছক কষছিলেন এমন দুই সন্দেহভাজন জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলঙ্গানার গোয়েন্দা বিভাগের যৌথ অভিযানে তাঁদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে।

হায়দরাবাদে জঙ্গি সন্দেহে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁরা শহরে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটানোর ছক কষছিলেন বলে জানা গিয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলঙ্গানার গোয়েন্দা বিভাগের (কাউন্টার-ইন্টেলিজেন্স সেল) যৌথ অভিযানে এই দুই অভিযুক্তকে ধরা হয়। তাঁদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় অভিযুক্তেরা তাঁদের পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত দুই ব্যক্তির নাম সিরাজ-উর-রহমান (২৯) এবং সইদ সমীর (২৮)। তাঁদের সঙ্গে সৌদি আরবের আইএস মডিউলের যোগাযোগ ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ঠিক কোথায় এবং কীভাবে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল, তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী দল।

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলঙ্গানা পুলিশের যৌথ বাহিনী প্রথমে ভিজিয়ানগরমে অভিযান চালায় এবং সেখান থেকে রহমানকে গ্রেফতার করে। পরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দ্বিতীয় অভিযুক্ত সমীরের খোঁজ পাওয়া যায়, যাকে হায়দরাবাদ শহর থেকে ধরা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে অ্যামোনিয়া, সালফার এবং অ্যালুমিনিয়ামের গুঁড়ো। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁরা স্বীকার করেছেন যে, হায়দরাবাদ শহরেই বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল তাঁদের।

এই ঘটনার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে গোটা শহরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে রাস্তাঘাটে চলাফেরার সময় অতিরিক্ত সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলা হয়, যেখানে জঙ্গিদের গুলিতে ২৬ জন প্রাণ হারান। এই ঘটনার পর উপত্যকাজুড়ে ব্যাপক চিরুনিতল্লাশি শুরু করে নিরাপত্তাবাহিনী। তবে এখনও পর্যন্ত পহেলগাঁও হামলার মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

এই ঘটনার পর ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক কূটনৈতিক ও সামরিক পদক্ষেপ নেয়। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করা হয়। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও হামলা চালায়, যার ফলে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত এবং নিয়ন্ত্রণরেখা বেশ কিছু দিন ধরে উত্তপ্ত ছিল। অবশেষে ১০ মে ভারত ও পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়।

এই পরিস্থিতির মধ্যেই হায়দরাবাদে বড়সড় বিস্ফোরণের ছক এবং জঙ্গিযোগের ঘটনা সামনে আসে, যা নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে প্রশাসনের মধ্যে।