গ্রামের ওপর দিয়ে যাবে রেলপথ উচ্ছেদ হবে বহু মানুষ মণিপুরের গ্রামে তাই আর উচ্ছ্বাস নেই সেখানে এখন শুধু ভিটে  হারানোর আশঙ্কা

কলাগাছের বাগান আর নেই ধানের ক্ষেতও আর নেই পশ্চিম মণিপুরের মারাংজিংয়ের বাসিন্দারা এখন উন্নয়নের মূল্য় চোকাচ্ছেন এইভাবেই। সেখানে এখন রেলের এক প্রকল্পকে ঘিরে স্থানীয়দের মনে যা তৈরি হয়েছে, তা উচ্ছ্বাস নয় বরং ভয় আর আশঙ্কা

গত বছরের সেপ্টেম্বরের এক দুপুরে প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারাএলাকায় একদশক ধরে যে রেলপথ তৈরির তার বিরুদ্ধেই ছিল বাসিন্দাদের প্রতিবাদ ২০১৭ সাল থেকেই স্থানীয়রা বলে আসছেন, রেলের লাইন তৈরির জন্য় তাঁদের যে জমিজমা গিয়েছে, তার জন্য় যে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে, তা কখনই যুক্তিযুক্ত নয়উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের এই প্রকল্পের জন্য় এলাকার মানুষদের জমিজমা গিয়েছে, তাঁদের ভিটেমাটি ছেড়ে উঠে যেতে হয়েছে অথচ এতকিছুর বিনিময়ে তাঁরা যে ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন রেলের তরফে, তা নেহাতই কম২০১৮ সালে স্থানীয়রা তেমলঙের ডেপুটি ডিস্ট্রিক্ট কমিশনারের কুশপুতুল পুড়িয়েছেনআর্মস্ট্রং পামে নামে ওই আধিকারিকের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অভিযোগ ছিল, ক্ষতিপূরণের অর্থ তিনি গ্রামের এমন দুই বাসিন্দার হাতে তুলেদিয়েছিলেন, যাঁরা কমিউনিটি ল্য়ান্ড বা জনগোষ্ঠীর জমিকে ব্য়ক্তিগত জমি বলে দাবি করেছিলেন

এই পামে ২০১২ সালে ১০০ কিলোমিটার বিস্তৃত একটি রাস্তা তৈরির জন্য় ফেসবুকে ৪০ লাখ টাকা তুলেছিলেন সেক্ষেত্রেও অভিযোগ উঠেছিল, মারাংজিন, কামবিরন, নোনি ও খুমজির মতো বহু গ্রামের বাসিন্দাদের জমি গিয়েছিল কিন্তু তাঁরা কেউ উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পাননি চাষের জমি নির্বিচারে ধ্বংস করা হয়েছিল ওই ১০০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির জন্য়ফলে স্থানীয়দের অনেকেই তাঁদের জীবিকা হারিয়েছিলেন

এদিকে, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের এই নতুন প্রকল্পের জন্য়ও চাষের জমি হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে স্থানীয়দেরএক্ষেত্রেও তাঁরা উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন বা বলে অভিযোগ অন্য়দিকে পরিবেশকর্মীরা অভিযোগ করছেন, পরিবেশ আইন মানা হচ্ছে নাএই রেল প্রকল্পের জন্য় তৈরি হবে ৪৬ টা সুড়ঙ্গ, ২২টা ছোট সেতু, ১২৯টি বড় সেতু প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে, ৮৪ কিলোমিটার রেললাইন তৈরি হবেক্রমশ তা বেড়ে চলবে কিন্তু এত বড় প্রকল্পে স্থানীয়দের কোনও উচ্ছ্বাস নেইবরং ভিটেমাটি থেকে উৎখাত হওয়ার ভয়